ডিসেম্বরের শেষ। সঙ্গে পুরনো বছররেও। এই চলে যাওয়ায় মন খারাপ নেই। কেক কাটা আছে। ঘর সাজানো, উপহার পাঠানো আরও অনেক কিছুই আছে। আর আছে ক্রিসমাস ট্রি। যা ছাড়া ডিসেম্বর উদযাপন ভাবাই যায় না! কিন্তু জানেন কি, ক্রিসমাস ট্রি বাড়িতে রাখলে বাস্তু দোষও কাটে। কীভাবে? আসুন শুনে নিই।
বড়দিন আকারে কতটা বড় সেই নিয়ে তর্ক চলতেই পারে। কিন্তু বড়দিনে উদযাপন মোটেও ছোট হয় না। নির্দিষ্ট দেশ বা জাতির মধ্যে নয়, ক্রিসমাস বা বড়দিনের আনন্দে মেতে ওঠে গোটা বিশ্ব। আর সেই আনন্দ জানান দেয় বাড়িতে সাজানো ক্রিসমাস ট্রি।
আরও শুনুন: বড়দিনেই কি জন্ম হয়েছিল যিশু খ্রিস্টের? রয়েছে অন্য মতও
আজকে যে বড়দিনের উৎসবে শামিল হতে পার্ক স্ট্রিট আর বো ব্যারাকে ভিড় জমাই আমরা, প্রথমদিকে খাস বিলেতেও সে উৎসবের এত রমরমা ছিল না মোটেই। তখনও জিশুর জন্মদিনটি নিতান্ত ধর্মীয় উৎসবের মতো করেই পালন করা হত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, নাগরিক জীবনের বাড়বাড়ন্তের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেই উৎসবই এক পারিবারিক এবং সামাজিক উৎসবের চেহারা নিল। একে একে এল সান্টাক্লজ, রঙ্গিন উপহার, ক্রিসমাস বেল আর ক্রিসমাস ট্রি। শোনা যায়, এই গাছের সঙ্গে প্রভু জিশুর জন্মের যোগ রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এই গাছ আসলে দেবতাদের আশীর্বাদ। জিশুর জন্মের পর যা মর্তে পাঠানো হয়েছিল। মূলত পাইন, ফার গোত্রের গাছই ক্রিসমাস ট্রি হিসেবে সাজানো হয়। সারা বছর রাস্তার ধারে কিংবা কারও বাড়িতে সাধারণ গাছের মতোই পড়ে থাকলেও বড়দিন এলেই রঙ্গিন হয়ে ওঠে ওইসব গাছ। আলো, ঘণ্টা, তারা, কাগজের ফুল কী থাকে না সাজানোর তালিকায়। এমনকি চকোলেট কিংবা গিফটের বাক্সও ঝোলানো থাকে বড় বড় গাছের ডালে। সব জায়গায় আসল ক্রিসমাস ট্রি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বছরের এই সময়টায় নকল ক্রিসমাস ট্রি-তে বাজার ভরে যায়। ছোট বড় হরেক মাপের গাছ। তাই ঘরে এনে সাজিয়ে রাখেন অনেকে। বিলেতে তো বটেই, আমাদের দেশেও বড়দিনের সময় ক্রিসমাস চোখে পড়ে ভালোমতোই। বিশেষ করে শপিং মল, বা রেস্তোরাঁয় সুন্দর ভাবে সাজানো থাকে বড় বড় ক্রিসমাস ট্রি। তবে স্রেফ সাজানো নয়। এই গাছ বাড়িতে রাখলে কেটে যায় বাস্তুদোষও। হোক না নকল, সমস্যা নেই কিছুতেই। শুধু মাথায় রাখতে হবে কয়েকটা নিয়ম।
আরও শুনুন: ‘হ্যাপি’ নয়, বড়দিনের শুভেচ্ছায় কেন বলা হয় ‘মেরি ক্রিসমাস’?
বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে ক্রিসমাস ট্রি ঈশ্বরের আশীর্বাদ ধন্য হওয়ায় এ জিনিস বাড়িতে রাখা অত্যন্ত শুভ। আর্থিক সমস্যা কেটে যাওয়া থেকে আরম্ভ করে বাড়ির যাবতীয় নেগেটিভ এনার্জি কাটিয়ে দিতে পারে এই ক্রিসমাস ট্রি-ই। বাস্তুমতে এই গাছ বাড়ির উত্তর পূর্ব দিকে রাখা উচিত। অন্যথায় উত্তর বা পূর্ব দুদিকেই রাখা যেতে পারে। তবে বারবার জায়গা বদল করবেন না। আসল গাছে হলে তো কথাই নেই, নকল গাছ হলেও তা অবশ্যই কোনও জায়গায় পুঁতে রাখুন। এতেই সংসারে আর্থিক স্থিরতা আসবে বলে দাবি করেন বাস্তুবিদরা। এছাড়া ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর নেপথ্যে একাধিক বাস্তু সম্মত কারণ খুঁজে পান বিশেষজ্ঞরা। মনে করা হয়, এই গাছ কয়েন ঝুলিয়ে রাখলে দেনা শোধ হয়। আবার ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর সময় ঘণ্টা ব্যবহার করলে তা সুখবর বয়ে আনে। একইভাবে রঙ্গিন তারা কিংবা কাগজের ফুল দিয়ে ওই গাছ সাজালেও বাড়ির সদস্যদের মানসিক অবসাদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। অনেকে ক্রিসমাস ট্রি-তে ফিল ঝুলিয়ে রাখেন, এও ভালোবাসার প্রতীক এমনটাই মনে করেন বাস্তুবিদরা। সব মিলিয়ে বড়দিন উদযাপনের অন্যতম অঙ্গ এই ক্রিসমাস স্রেফ সাজানোর বস্তু নয় সে কথা বলাই বাহুল্য। বাইরের দেশে বাস্তু সেই অর্থে না মানা হলেও, ক্রিসমাস ট্রি-কে শুভ হিসেবেই মানা হয়। তাই বড়দিনের মতো পবিত্র উৎসব পালনে ক্রিসমাস ট্রি অবশ্যই সাজানো হয় বিশ্বের নানা প্রান্তে।