বিয়ের আসরেই নববধূর সঙ্গে জোর করে যৌনতায় লিপ্ত হওয়া। এহেন দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন অনেকেই। এমন হিংস্র যৌনতা ও ভরপুর হিংসার পরেও কীভাবে ছাড়পত্র পেল ‘অ্যানিম্যাল’? সম্প্রতি সে প্রশ্ন আরও উসকে উঠল সেন্সর বোর্ডের কর্তার চাকরি খোয়ানোয়। অ্যানিম্যাল-কে ছাড়পত্র দিয়েই কি পদ হারালেন তিনি?
অ্যানিম্যাল ছবিকে ছাড়পত্র দেওয়ার দরুনই কি চাকরি নিয়ে টানাটানি? সম্প্রতি সেন্সর বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন তথা সিবিএফসি-র সিইও রবীন্দ্র ভাকেরকে নিয়ে এমনই প্রশ্ন উঠছে সিনেমহলে। আসলে সদ্যই ভাকেরকে পদ থেকে সরিয়ে সে জায়গায় আনা হয়েছে স্মিতা ভাটস শর্মাকে। আর সেই আবহেই জল্পনা ঘুরছে, অ্যানিম্যাল ছবি মুক্তির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভাকেরের পদচ্যুতি। যে ছবি এত খোলাখুলি ভাবে পৌরুষের পক্ষে সওয়াল করে, যেখানে নারীবিদ্বেষ স্পষ্টভাবে দেখানো হয় এবং তার পালটা যুক্তি থাকে না, তেমন একটি ছবিকে শংসাপত্র দেওয়ার পিছনে অন্য কোনও সমীকরণ রয়েছে কি? এমনই ইঙ্গিত ছুড়ে দিয়েছেন কেউ কেউ।
আরও শুনুন: হোক না বৈবাহিক ধর্ষণ, অভিনয়ে আপত্তি কীসের! সমালোচনা উড়িয়ে সাফাই ববির
সত্যি বলতে, ছবি মুক্তির আগেই ঝলক দেখে আঁচ পাওয়া গিয়েছিল, ‘অ্যানিম্যাল’-এ রক্তারক্তির অভাব নেই। আর ছবি মুক্তির পর দেখা যায়, তখনও চিন্তার বাইরে ছিল অনেক কিছুই। যদিও ছবিটিকে ‘অ্যাডাল্ট’ সার্টিফিকেট দেওয়ার পাশাপাশি রণবীর-রশ্মিকার ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কাঁচি চালিয়েছিল সেন্সর বোর্ড, তারপরেও যৌনতা থেকে হিংসা, সবকিছুই ভরপুর দেখা গিয়েছে এ ছবিতে। আলফা মেল-এর হুংকারে নারীবিদ্বেষের দিকটিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বারবার। কথা হল, সমাজে যেমন এ সবকিছুই আছে, তেমনই ছবিতেও তা থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেই থাকাকে কোথাও গিয়ে মান্যতা দিয়ে ফেলা হচ্ছে কি না, প্রশ্ন সেখানেই। আর সেই প্রশ্নেই অ্যানিম্যাল ছবি নিয়ে তরজা চলছেই। তবে তাতেও প্রভাব পড়েনি ছবির বাণিজ্যিক সাফল্যে। বৈবাহিক ধর্ষণের দৃশ্য বা হিংস্রতার দৃশ্যে অভিনয় করতে সমস্যা হয়নি, এ কথা জানিয়ে কার্যত ছবির সপক্ষে সওয়াল করেছেন কলাকুশলীরাও। কিন্তু এই দৃশ্যগুলি সেন্সর বোর্ডের বিধিকে অনেকাংশেই অমান্য করছে বলে জানাচ্ছেন বোর্ডের কোনও কোনও আধিকারিক। সেখানে কেন ওই দৃশ্যগুলির কোথাও সেভাবে কাঁচি চালানোর নির্দেশ দেয়নি সেন্সর বোর্ড, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে এই ইস্যুতে যেভাবে বিতর্কের ঝড় উঠেছে, তার দরুনই সমস্ত ব্যাপারটিকে আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বোর্ডের কর্তার পদ হারানোয় আরও উসকে উঠল সেই জল্পনা।