বিয়ের পর কেটেছে মাত্র কয়েক বছর। এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে নতুন সমস্যা। তেমনভাবে শারীরিক উত্তেজনা আর আসে না। যৌন সম্পর্কেও লিপ্ত হতেই ইচ্ছা করে না। তেমন কোনও অসুবিধা না হওয়ায়, একেই স্বাভাবিক ভেবে নিয়েছেন। কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাসের জেরে হতে পারে মারাত্মক বিপদ। দীর্ঘদিন যৌনতায় লিপ্ত না হলে ঠিক কী ক্ষতি হতে পারে? আসুন শুনে নিই।
যৌনতায় আর তেমন আগ্রহ নেই। কাজ শেষে বাড়ি ফিরেই ক্লান্তি। শারীরিক সম্পর্ক দূরে থাক, সঙ্গীকে কাছে টেনে আদর করতেও তখন ইচ্ছা হয় না। উলটোদিকের মানুষটার কাছেও এটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। বয়সের নির্দিষ্ট গণ্ডি পেরোলে এমনটা হতেই পারে। কিন্তু কাজের চাপে কিংবা অন্য কোনও কারণে, এই স্বাভাবিক যৌনসম্পর্কে ছেদ পড়া একেবারেই ঠিক নয়। বরং এর থেকেই হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।
আরও শুনুন: তৃপ্তির আগেই শেষ যৌনতা! সময় বাড়াতে কার্যকর হতে পারে হস্তমৈথুন
শরীর আর মন, যৌনজীবনের প্রভাব দুই ক্ষেত্রেই সমান। একথা বিশেষজ্ঞদের মুখে হামেশাই শোনা যায়। তাই যৌনজীবনে কোনও সমস্যা হলে, তা যেমন শরীরে প্রভাব ফেলে, তেমনই সমস্যা তৈরি হয় মনেও। আমাদের দেশে অধিকাংশ দম্পতিই নানা যৌন সমস্যায় ভোগেন। যার অন্যতম কারণ যৌনতা বিষয়ে অযথা ছুঁতমার্গ। সমস্যা হলেও তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেও পছন্দ করেন না অনেকেই। যার ফল হয় মারাত্মক। একসময় কিছু এইডস, সিফিলিসের মতো যৌনরোগ প্রায় মহামারির আকার নিয়েছিল স্রেফ সচেতনতার অভাবে। যদিও সরকারি প্রচার বা বিভিন্ন কারণে সেসব অনেকটাই মিটেছে। তবু অন্দরমহলের খুঁটিনাটি নিয়ে এখনও সমস্যা পুরোপুরো মেটেনি। যার অন্যতম দীর্ঘদিন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হওয়া। বর্তমানে এই অবস্থা দেশের অধিকাংশ দম্পতির কাছেই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কারণটা অবশ্যই সময়ের অভাব। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করেন। সারাদিন হাজারও কাজের চাপে দম ফেলার সময় পান না। তাই রাত্রে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম নিতেই হয়। এইসময় কারওরই তেমনভাবে যৌনতায় লিপ্ত হতে ইচ্ছা করে না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এর থেকেই হতে পারে নানা সমস্যা।
আরও শুনুন: বিছানায় নয়, যৌনতা হোক অন্য কোথাও… যৌনজীবনে ৩৩ শতাংশ বেশি সুখী এই যুগলরাই
প্রথমেই বলতে হয় ঘুমের কথা। যে ঘুমের জন্য যৌনতায় না করেন অনেকে, দীর্ঘদিন যৌনতা না হলে সেই ঘুমের সমস্যাই দেখা দেবে প্রথমে। ক্লান্তি থাকলেও চোখে ঘুম আসবে না। শুরু হবে অস্বস্তি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সমস্যা নিয়ে হামেশাই কিছু মাঝবয়সী পুরুষ বা মহিলা হাজির হন। দেখা যায়, তাঁদের বেশিরভাগেরই যৌনজীবনে ছেদ পড়েছে দীর্ঘদিন। সমস্যা মেটাতে তড়িঘড়ি যৌনতায় মাততে চাইলে হতে পারে আরও বড় বিপদ। দীর্ঘদিনের অনভ্যাসের জেরে কিছুতেই আগের মতো উদ্দাম যৌনতা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে হতাশা কাজ করার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই কাজ করুন। আবার এমনটাও অনেকে বলেন, যৌন-জীবন সচল থাকলে ঋতুকালীন অবস্থায় মহিলাদের পেটে ব্যাথা কিছুটা কমে। অনেক দিন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হওয়ার ফলে সেই ব্যথা আবার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। একইভাবে নিয়মিত যৌনসঙ্গমের জেরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। বহুদিন তা বন্ধ থাকলে এর উল্টো প্রভাব পড়ে শরীরের। ফলে চট করে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এছাড়া, ‘ইমিউনোগ্লোবিউলিন এ’-র মাত্রাও বাড়ে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেই। দীর্ঘদিন সঙ্গম না হলে তা কমে যায়। ফলে শরীরে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দেয়। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজকার ব্যস্ততার প্রভাব স্বাভাবিক যৌনতার উপর যেন না পড়ে, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত যে কোনও দম্পতির। প্রয়োজনে চিকিৎসক বা মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে এই সমস্যা মারাত্মক আকার নেওয়ার আগেই সঠিক চিকিৎসা একান্ত প্রয়োজন।