ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় এগিয়ে দিলেও, এবার স্বার্থপর তকমা পেতে হল বিরাট কোহলিকে। তবে নিজের দেশ থেকে নয়, আক্রমণ ধেয়ে এল ক্রিকেটের মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সেই পাকিস্তান থেকেই। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে স্বার্থপর বলে রীতিমতো তুলোধোনা করলেন প্রাক্তন পাক অধিনায়ক। কিন্তু কেন বললেন এমনটা? শুনে নেওয়া যাক।
কেবল রাজনীতিতেই নয়, ক্রিকেটের ময়দানেও দুই দেশের সম্পর্ক যাকে বলে আদায় কাঁচকলায়। ভারত পাকিস্তানের ম্যাচ মানেই সমর্থকদের বাড়তি অ্যাড্রিনালিন রাশ। যা অনেকসময়ই গড়িয়ে যায় অন্য পক্ষের প্রতি কটূক্তিতে বা বিদ্রুপে। শুধু সমর্থকরাই নন, বাদ যান না খোদ খেলোয়াড়েরাও। এবার যেমন আক্রমণের মুখে পড়তে হল স্বয়ং কোহলিকে। তবে কোনও সমর্থকের আক্রমণ নয়, বিরাটকে রীতিমতো একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন পাক অধিনায়ক মহম্মদ হাফিজ। চলতি বিশ্বকাপের একের পর এক ম্যাচে যখন ঝোড়ো ব্যাটিং-এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখছেন বিরাট, সেই সময়েই তাঁকে ‘স্বার্থপর’ বলে কটাক্ষ করে বসলেন পাক ক্রিকেটার।
আরও শুনুন: জন্মদিনের সেঞ্চুরি ঘটনা মাত্র! আসলে প্রতিটি সেঞ্চুরিই বিরাটের জন্মদিন
ইডেনে প্রোটিয়া বোলারদের দুরমুশ করে জীবনের ৪৯তম সেঞ্চুরিটি হাসিল করে ফেলেছেন বিরাট। তারপরেও অপরাজিতই ছিলেন তিনি। এদিকে বিপুল রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে জিতে গিয়েছে ভারত। আট ম্যাচের আটটিতেই জিতে টেবিল শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছেন বিরাটরা। কিন্তু এই ম্যাচের পরই কোহলিকে ‘স্বার্থপর’ বলে কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন পাক অধিনায়ক। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ এমন অভিযোগ কেন? তার যুক্তিও নিজেই দিয়েছেন হাফিজ। তাঁর কথায়, আসলে দলের জয়ের থেকেও নিজের রেকর্ডকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিরাট। তাও একবার নয়, চলতি বিশ্বকাপেই তিন-তিনবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন হাফিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল টিম ইন্ডিয়াই। সুতরাং প্রোটিয়াদের সামনে যথাসম্ভব বেশি রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য ছিল। সেখানে ৪৯তম ওভারে নিজের শতরান পূর্ণ করতে বিরাট সিঙ্গল নিতে ছুটলেন কেন, এখানেই আপত্তি হাফিজের। তিনি আরও বলেন, একই ম্যাচে রোহিত শর্মা যেভাবে নিজের ইনিংস ছেড়ে দিয়েছেন দলের কথা ভেবে, বিরাটের তা দেখেই শেখা উচিত। স্বার্থপরের মতো ক্রিকেট খেললে রোহিতও অনায়াসে সেঞ্চুরি করতে পারতেন বলেই মত হাফিজের।
আরও শুনুন: ভিড়ের মাঝেও ‘বিরাট’ একা, লড়াইয়ের সঙ্গে ভালোবাসার মন্ত্রও শেখান কিং কোহলি
সত্যি বলতে, অনেক ক্রিকেট সমালোচকেরই অভিযোগ, অনেক ভারতীয় খেলোয়াড়রাই রেকর্ডবুককে বাড়াবাড়ি গুরুত্ব দেন। আর রান তাড়া করার ক্ষেত্রে বিরাট সেখানে অনেককেই টেক্কা দিতে পারেন। তাই গোটা ম্যাচ টিমগেম খেলার কথা মাথায় রাখলেও, রেকর্ডের খিদে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচের শেষে এসেও বিরাটের সিঙ্গল না নিয়ে স্ট্রাইকিং এন্ডে থেকে যাওয়াকে তাঁরা ভালো চোখে দেখেননি। আবার অনেকেই পালটা বলেছিলেন, দলের জয় যখন নিশ্চিত, সেই সময়েই তো ব্যক্তিগত রেকর্ডের জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন বিরাট। সেখানে অন্যায় কোথায়! এমনকি হাফিজ যে অভিযোগ তুলেছেন, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে তাঁর নিজের দেশেই। প্রাক্তন পাক পেসার ওয়াহাব রিয়াজ এককথায় নাকচ করে দিয়েছেন হাফিজের বক্তব্য। তবে চলতি বিশ্বকাপেই ভারতের কাছে হারের পরেও যে ভারতকে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করছেন কোনও কোনও পাক খেলোয়াড়, তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়তে ছাড়ছেন না ভারতের সমর্থকরাও।