বিপর্যস্ত নিজের দেশ। বহুদূরে ভারতে বসেও তাই আতঙ্কে কাঁপছেন ইজরায়েলের মানুষেরা। ইজরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষের আবহে কী বক্তব্য তাঁদের? শুনে নেওয়া যাক।
আচমকাই নতুন করে যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে উঠেছে বিশ্বরাজনীতিতে। ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের মধ্যেকার দীর্ঘ দ্বৈরথ এবার সরাসরি নেমে এসেছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ময়দানে। ইজরায়েলের উপর হামাসের আকস্মিক রকেট হামলা, জবাবে ইজরায়েলের পালটা আক্রমণ, সব মিলিয়ে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠে গিয়েছে সে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে। জানা গিয়েছে, যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, অন্ধকারে ডুবেছে গাজা, নেই জল বা ইন্টারনেট পরিষেবাও। হামাস হামলার পর আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। আর এই গোটা পরিস্থিতির আঁচ এসে লাগছে বহুদূরে ভারতেও। এ দেশেও ইজরায়েলের যে মানুষেরা বসবাস করেন, নিজেদের দেশ এবং সেখানে থাকা আত্মীয়স্বজনদের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন তাঁরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সেই মানুষেরা আদৌ নিরাপদে থাকতে পারবেন কি না, সেই চিন্তাতেই কাঁটা ভারতে থাকা ইজরায়েলের নাগরিকেরা।
আরও শুনুন: ইজরায়েল যুদ্ধের আগুনে ভারতের বাজারেও লাগবে ছ্যাঁকা, আশঙ্কা দেশবাসীর
আসলে কোনও কারণে হয়তো দেশে থাকা হয় না অনেকেরই। কিন্তু মনের মধ্যে দেশ তো থেকেই যায়। আর সেই পিছুটানেই এখন প্রবাসী ইজরায়েলিদের মন উচাটন। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ কিছুদিন ধরে ভারতেই বাস করছেন। কেউ কেউ আবার পর্যটক হিসেবে ঘুরতেই এসেছিলেন এ দেশে, এখন ঘরে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন তাঁরাও। হিমাচলপ্রদেশের কুলুর বাসিন্দা কেনেরিয়াত যেমন বলছেন, হামাস হামলার পরেই তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ইজরায়েলের সেনাবাহিনীতে কাজ করা ভাই জানিয়েছেন, হামাসের হামলায় তাঁদের এক আত্মীয়ার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, একইসঙ্গে মারাত্মক জখম হয়ে হাসপাতালে ভরতি তাঁদের এক ভাই। এই পরিস্থিতিতে ভারতকেই অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে কেনেরিয়াতের। আবার কুলু বেড়াতে আসা শিরা কিংবা পুষ্করে আসা আমাত তড়িঘড়ি দেশে ফিরতে চান, যাতে প্রয়োজনে যুদ্ধের ময়দানে গিয়েই দেশের কাজ করতে পারেন। এমনিতেই হামাসের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, এমনকি শিশুহত্যার মতো অভিযোগও তুলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামাসের বিরুদ্ধে সেই একই সুরে ঘৃণা উগরে দিচ্ছেন ভারতে থাকা ইজরায়েলিরাও।
আরও শুনুন: ‘কাশ্মীরের হিন্দুদের ক’টাকা দিলেন?’ বিবেক অগ্নিহোত্রীকে প্রশ্ন আশা পারেখের
আসলে যুদ্ধ তো কেবল রণক্ষেত্রেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে না। যুদ্ধের সঙ্গে ওতপ্রোত হয়ে জড়িয়ে যায় মানুষ, তার জীবন আর সম্পর্কও। সে মানুষ যুদ্ধের পক্ষে থাক বা না থাক, যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিক কিংবা নাই নিক, তার চলতি জীবনটাকে এক নিমেষে এলোমেলো করে দিতে পারে যুদ্ধ। আর এই পরিস্থিতিতে নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সে কথাই বুঝতে পারছেন ইজরায়েলের মানুষেরা।