মিস ইউনিভার্সের মুকুট মাথায় উঠবে একদিন, এমন স্বপ্ন হয়তো দেখে থাকেন বেশিরভাগ তরুণীই। কিন্তু সেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মুখেও যে এমন বিপাকে পড়তে পারেন তিনি, তা নিশ্চয়ই ভাবেননি এই পাক তরুণী। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক সে কথা।
কোনও একটি দেশ কিংবা বিশ্বের নয়, একেবারে ব্রহ্মাণ্ডসুন্দরী বলে কথা! গোটা পৃথিবী জুড়ে যত সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা চলে, তার চূড়ান্ত অধ্যায়। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার স্বপ্ন কে না দেখেন! বিশেষ করে মডেল কিংবা অভিনেত্রীরা তো স্বপ্ন দেখবেনই যে কোনও না কোনও দিন মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার র্যাম্পে হাঁটবেন তাঁরা। সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপটা পেরিয়েও গিয়েছিলেন এই পাক মডেল। কিন্তু কখনও কখনও স্বপ্নপূরণে যে আনন্দ নয়, বরং সংকট লুকিয়ে থাকে, সে কথা হয়তো আগে জানতেন না তিনি। কিন্তু তিনি মিস ইউনিভার্স পাকিস্তানের খেতাব জিততেই গোটা দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই মডেল তো বটেই, গোটা প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সে দেশের নেতা আর ধর্মগুরুরা। সব মিলিয়ে, জেতার পরেও বড় বিপাকে পড়েছেন ওই মডেল।
আরও শুনুন: হিজাব পরা ছবিতেই যৌনতার ইশারা, বাড়ছিল অনুগামী, হঠাৎ বড় বিপত্তিতে মডেল
জানা গিয়েছে, বছর ২৪ বয়সের ওই মডেলের নাম এরিকা রবিন। মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার মূল পর্যায়ের আগে যে প্রাথমিক বাছাই পর্ব চলে, সেখানেই পাকিস্তানের তরফে নাম দিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তান থেকে সুন্দরী বেছে নেওয়ার এই প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছিল মালদিভসে। সেখানেই সব প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে সেরার শিরোপা জিতে নেন এই তরুণী। কিন্তু সে খবর সামনে আসতেই বিপত্তি। এই তরুণী কেন সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, তা নিয়েই চটে লাল রক্ষণশীল পাক সমাজ। এহেন প্রতিযোগিতা পাকিস্তানের মেয়েদের অপমান করেছে, তাদের ব্যবহার করেছে বলেও মত জনতার একাংশের। ওই তরুণীকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেও মানতে নারাজ তাঁরা। শুধু তাই নয়, এই প্রতিযোগিতাকে লজ্জাজনক বলে তোপ দেগে তার আয়োজকদের খুঁজতে শুরু করেছে পাক প্রশাসন। পাকিস্তানের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই দেশের গোয়েন্দাবিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও শুনুন: ধর্মের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছিল শাড়ি, সেই পাকিস্তানেই লাল শাড়ি পরে নিকায় বসে প্রশংসা কুড়োলেন কনে
এই পরিস্থিতিতে এরিকা মিস ইউনিভার্সের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়ার জন্য এল সালভাদোরে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে এই সুযোগকে দেশের পক্ষে সম্মানের বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে, এই প্রথমবার এই প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের কোনও নারী স্থান পেয়েছেন। একে নিজের উপরে বড় দায়িত্ব বলেই মনে করছেন এরিকা। দেশের সম্মান তিনি কোনোভাবেই নষ্ট করবেন না, এ বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এরিকা রবিন। বরং বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানের ইতিবাচক দিকগুলিকেই তিনি বেশি করে তুলে ধরতে চান বলে জানিয়েছেন ওই তরুণী।