মনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। সেই খুশিতে মন্দিরের প্রণামী বাক্সে দান করেছেন ভক্ত। তবে এক-দু টাকা নয়, তিনি দান করেছেন ১০০ কোটি টাকার চেক। যা দেখার পর রীতিমতো অবাক হন মন্দির কর্তৃপক্ষের সকলেই। তড়িঘড়ি টাকা তুলতে ব্যাঙ্কে ছোটেন তাঁরা। কিন্তু সেখান থেকে কার্যত খালি হাতেই ফিরতে হয় তাঁদের। কেন জানেন? আসুন শুনে নিই।
মন্দিরে মোটা টাকা অনুদান দিয়েছেন ভক্ত। এতে আর অবাক হওয়ার কী আছে! অনেকেই এমনটা করে থাকেন। তবে বেশি টাকার অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে দেওয়ার সময় তা সরাসরি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতেই তুলে দেন অনেকে। কিন্তু এই ব্যক্তি তেমনটা করেননি। বরং ১০০ কোটি টাকার চেক মন্দিরের প্রণামী বাক্সেই ফেলে দেন তিনি।
আরও শুনুন: নোট বাতিলের জের! ২০০০ টাকার নোটে ৮ লক্ষ টাকা জমা পড়ল মন্দিরের প্রণামী বাক্সে
ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের শ্রী বরাহ লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী মন্দিরের। এমনিতেই প্রতিদিন এখানে ভক্তের ঢল নামে। তাই প্রণামী বাক্সও ভরে ওঠে দ্রুততার সঙ্গে। কিছুদিন ছাড়াই মন্দিরের পুরোহিত এবং কর্মীরা মিলে সেই কাজ করেন। এদিনও তেমনভাবেই প্রণামী বাক্সের ডালা খুলে বসেছিলেন সকলে। উপর থেকে দেখে কিছুই বুঝতে পারেননি ভিতরে এমন কিছু থাকতে পারে। ১০০, ৫০০ টাকার নোট আর গুচ্ছের খুচরো পয়সায় ভরে ছিল বাক্সটি। ধীরে ধীরে তা খালি করে নির্দিষ্ট ব্যাগে ভরতে শুরু করেন তাঁরা। তখনই পুরোহিতের নজরে আসে একটি চেক। নকল নয়, একেবারে আসল একটা চেক। যেখানে নির্দিষ্ট জায়গায় অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের সই রয়েছে। লেখা রয়েছে টাকার অঙ্ক। স্রেফ কোনও তারিখ দেওয়া নেই। আসলে সেটাই নিয়ম। কারণ কবে চেক জমা করা হবে তা আগে থেকে জানা সম্ভব নয়। তাই তারিখ ছাড়াই ওই চেক জমা করা হয়েছিল। প্রণামী বাক্সে সাধারণত কেউ চেক ফেলেন না। তাই সকলেই একটু অবাক হয়েছিলেন এই চেকটি দেখে। কিন্তু সেখানে উপস্থিত সবাই তার থেকেও বেশি অবাক হন, চেকের মধ্যে থাকা টাকার অঙ্ক দেখে। একেবারে ১০০ কোটি। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ঠিক এই পরিমাণ টাকার কথাই লেখা ছিল ওই চেকে।
আরও শুনুন: Chandrayaan 3: চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডারের নকশা তাঁরই! সুরাটের ব্যক্তির দাবিতে তদন্ত শুরু পুলিশের
এই অঙ্ক নেহাতই কম নয়। তাই মন্দির কর্তৃপক্ষের সদস্যরা বেজায় ঘাবড়ে যান ওই চেক দেখে। কমিটির শীর্ষ কর্তারা ঠিক করেন, এ বিষয়ে ব্যাঙ্কে খোঁজ নেবেন। চেকটি ছিল এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে খোঁজ করা হয় সেই ব্যাঙ্কে। আর তখনই সামনে আসে আসল সত্যি। ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়, চেকটি যে অ্যাকাউন্টের সেখানে মাত্র ১৭ টাকা পড়ে আছে। ব্যাঙ্কের তরফে আরও জানানো হয়, ওই অ্যাকাউন্টের মালিক বোদেপল্লি রাধাকৃষ্ণ। যিনি পেশায় একজন দিনমজুর। ব্যাঙ্কের দাবি ওই ব্যক্তির মাসিক আয় খুব বেশি হলে দশ হাজার টাকা। সেই ব্যক্তি ১০০ কোটি টাকার চেক কীভাবে দিলেন, তা অবাক করেছে সকলকেই। মনে করা হচ্ছে মন্দিরের তরফে ওই ব্যক্তির খোঁজ শুরু হয়েছে। যদিও সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তবে এই ঘটনার জেরে দক্ষিণের এই মন্দির নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।