সাধারণত সন্তানকে গর্ভ ধারণের সময় ৯ মাস ১০ দিন। কিছুক্ষেত্রে তা কমবেশি হয়েই থাকে। কিন্তু এক মহিলার দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে ছিল তাঁর সন্তান। এমনটা কীভাবে সম্ভব? আসুন শুনে নিই।
শরীরের বড় আজব বালাই। কখন কোন রোগ থাবা বসাবে, তা আগে থেকে বোঝা প্রায় অসম্ভব। কখনও তা এমনই মারাত্মক আকার ধারণ করে, যা মৃত্যু অবধি ডেকে আনে। তবে এই মহিলাকে মৃত্যুর আগেই সেই যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছিল তাও দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে।
আরও শুনুন: মোদি নন! ২০২৪-এ দেশ পাবে মহিলা প্রধানমন্ত্রী, জ্যোতিষীর পর দাবি ধর্মগুরুরও
অনেকেই মনে করেন, একজন নারীর কাছে মাতৃত্বের অনুভূতি সবথেকে আনন্দের। তাই সন্তানকে গর্ভে ধারণ করতে যত কষ্ঠই হোক, তা হাসিমুখেই সহ্য করেন মা-রা। তবে এই মহিলার ক্ষেত্রে সেই কষ্ট এমনই মাত্রা ছাড়িয়েছিল, যা হাসিমুখে সহ্য করা প্রায় অসম্ভব। কথা বলছি, চীনের বাসিন্দা হুয়াং ইজান সম্পর্কে। ৩১ বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। প্রথমদিকে সবকিছু একেবারেই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু গর্ভধারণের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তাঁর প্রসব হয়নি। এরপরই এজান বুঝতে পারেন কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকের কাছে গেলে, তাঁরা এই ঘটনার অদ্ভুত এক বাখ্যা শোনান। ডাক্তারি ভাষায় যার নাম, একটোপিক প্রেগনেন্সি। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বেশ বিরল। এক্ষেত্রে ভ্রুণ জরায়ুর মধ্যে বড় না হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে আকারে বাড়লেও তা দেহের বাইরে আসার সুযোগ পায় না। এমতাবস্থায় অস্ত্রোপচার করে শিশুটিকে শরীর থেকেই আলাদা করে নেওয়াই শ্রেয়। কিন্তু সেইসময় এমনটা করার মতো আর্থিক সংগতি ছিল না। তাই কিছুই না করে যন্ত্রণা সহ্য করতে থাকে ইজান। এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ ৬০ বছর। এতদিন ওই শিশুকে নিজের সঙ্গে বয়ে বেরিয়েছেন তিনি। তবে এর ফল হয়েছিল মারাত্মক। এতদিনে ওই শিশু একটি পাথরে পরিণত হয়। আর কিছুদিন তাকে দেহে রাখলে মৃত্যু অবধারিত ছিল ইজানের। তাই ৯২ বছর বয়সে অস্ত্রোপচার করাতেই হয় তাঁকে। সেই পাথর হয়ে যাওয়া শিশুটিকে বের করে আনেন চিকিৎসকরা। ডাক্তারি ভাষায় এই পাথর হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে, লিথোপেডিয়ান বলে। চিকিৎসকদের কথায়, এমন ঘটনা লাখে একজনের সঙ্গে হয়।
আরও শুনুন: বাবরি ধ্বংসে ছিল বড় ভূমিকা, সেই কল্যাণের মৃত্যুদিনেই ‘হিন্দু গৌরব দিবস’ পালনের ডাক বিজেপির
তবে এই ঘটনা নেটদুনিয়ায় প্রকাশ পেলে সেখানেও শোরগোল পড়ে যায় সেখানেও। অনেকেই ওই মহিলাকে এমন কষ্ট সহ্য করার জন্য কুর্নিশ জানিয়েছেন। কেউ কেউ তাঁর দুঃখে সমবেদনাও জানিয়েছেন। তবে এমনটাও যে হতে পারে তা অনেকেরই অজানা ছিল। তাই সকলেই রীতিমতো অবাক। হিসাব মতো, মহিলা জন্ম দিয়েছেন এক ৬০ বছর বয়সী শিশুকে। কেউ কেউ এমন কথা লিখেও ব্যঙ্গ করেছেন। তবে তা কোনওভাবেই মহিলাকে ছোট করার উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। বলাই বাহুল্য, সাধারণ কারও পক্ষে এই কষ্ট সহ্য করাই হয়তো অসম্ভব। কিন্তু ইজান তা পেরেছিলেন। হয়তো তিনি ‘মা’, তাই পেরেছিলেন।
In 1948, Huang Yijun, a 31-year-old Chinese woman, discovered that she was pregnant. She went to the doctor, who informed her that the fetus was growing outside her uterus, specifically in her abdomen, a condition known as ectopic pregnancy.
Huang needed to undergo surgery to… pic.twitter.com/ttu8ARl0jj
— Historic Vids (@historyinmemes) August 17, 2023