এই ক-দিন আগেই সারা দেশ পায়ে হেঁটে ঘুরেছেন রাহুল গান্ধী। এবার তাঁকে দেখা গেল মাঠে নেমে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করতে। রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রে এমন দৃশ্য অবশ্য বিরল নয়। তবে রাহুলের কাজে যেন মিশে রইল তাঁর সেই ভারত-জোড়ো যাত্রার বার্তাই। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঠিক যেন সন্ন্যাসী! ভারত-জোড়ো যাত্রার সময় রাহুল গান্ধীকে দেখে অনেকেরই মনে এই ভাবনা জেগেছিল। সারা দেশ ঘুরে ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালবাসার বার্তা দিয়েছিলেন রাহুল। আবারও সেই বার্তা যেন ছড়িয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে, তাঁদের সঙ্গে কাজ করেই যেন বোঝালেন, ‘আমি তোমাদেরই লোক…’।
আরও শুনুন: অগ্নিমূল্য বাজারে জমি থেকে চুরি দেড় লক্ষ টাকার টম্যাটো, মাথায় হাত কৃষকের
হিমাচল প্রদেশে যাচ্ছিলেন রাহুল গান্ধী। যাওয়ার পথে দেখেন, মাঠে কৃষকরা কাজ করছেন। বর্ষার মরশুমে যেমন চাষাবাদ হয়, সেই কাজেই ব্যস্ত তাঁরা। দেখেই গাড়ি থেকে নেমে পড়েন কংগ্রেস নেতা। এগিয়ে যান খেতের দিকে। নেমেও পড়েন কাদা-জলে। সেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলেন কৃষকদের সঙ্গে। খানিকক্ষণ কাজও করেন তাঁদের সঙ্গে। এমনকী ট্র্যাক্টর চালাতেও দেখা যায় রাহুলকে। স্বভাবতই রাহুলকে নিজেদের মধ্যে এভাবে পেয়ে যেমন অবাক, তেমনই খুশি হন কৃষকরা। এই দিন কয়েক আগে আরও একটি কাজ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। পৌঁছে গিয়েছিলেন দিল্লির করোল বাগের একটি বাইক মেকানিক ওয়ার্কশপে। বিগড়ে যাওয়া একটা বাইক সারানোর কাজেও হাত লাগাতে দেখা যায় তাঁকে। সমাজের সব স্তরের মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে আছে রাহুলের স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা।
আরও শুনুন: স্ত্রী ভালবাসেন অন্য পুরুষকে, নিজে দাঁড়িয়ে দুজনের বিয়ে দিলেন স্বামী
‘ভারত-জোড়ো’র লক্ষ্য রাহুলের দীর্ঘদিনের। নিছক এক রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে সেই যাত্রাকে তিনি আবদ্ধ রাখতে চাননি। যদিও রাহুলের মতো ররাজনীতিবিদের কাজ রাজনৈতিক পরিসরের বাইরে নয়। তবু রাহুল বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে সকলকে ভালবাসার। সকলকে কাছে টানার। ঘৃণা, পারস্পরিক বিদ্বেষ সমাজকে টুকরো করেছে। তার বিপক্ষেই ছিল রাহুলের পদযাত্রা। সে যাত্রায় সফল হয়েছিল রাহুলের উদ্দেশ্য। বহু মানুষের সমর্থন তিনি পেয়েছিলেন। যার ফলাফল খানিকটা ভোটের ময়দানে গিয়েও পড়েছে বলে মনে করে কংগ্রেস নেতৃত্ব। আপাতত ভারত-জোড়ো যাত্রা না-হলেও রাহুল কিন্তু তাঁর সেই প্রচেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছেন। কৃষক, শ্রমিক থেকে নানা স্তরের মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েই ভেঙে দিতে চাইছেন নেতা ও সাধারণ মানুষের ভিতরকার ব্যবধান। অর্থাৎ ভারত-জোড়ো যাত্রা বন্ধ থাকলেও ভালবসা ফেরির এই বার্তা দেওয়া কিন্তু তিনি বন্ধ করেননি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভারতবর্ষ নাকি দুরকম। একটা, সাধারণ মানুষের ‘ভারত’, আর একটি অভিজাত শ্রেণির ‘ইন্ডিয়া’। রাহুল যেন সেই দুই ভারতকেই জুড়ছেন তাঁর কাজে। হতে পারে, ২০২৪-এর নির্বাচনই তাঁর পাখির চোখ। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখেও যদি দেশের ভিতরকার এই ব্যবধান খানিক কমানো যায়, তাহলেই বা মন্দ কী!