গরু রক্ষা করুন মুসলিমরাও। আরজি খোদ আইএএস অফিসারের, যিনি নিজেও ধর্মে মুসলিম। আর সেই আরজির সূত্র ধরেই মুসলিমদের নিরামিষ খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ঠিক কী বলেছেন ওই আধিকারিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ইদানীং কালে দেশজুড়ে মাঝে মাঝেই উসকে উঠছে সাম্প্রদায়িক অশান্তির আঁচ। কেবল ভিন্ন মতের প্রতি অসহিষ্ণুতাই নয়, অন্য মানুষের খাদ্যাভ্যাসের মতো একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও অপছন্দ জানানো হচ্ছে কখনও কখনও। যার জেরে অশান্তি বাড়ছে আরও। এমনকি গোমাংস নিষিদ্ধ করা বা সেই মাংস থাকার অভিযোগে কাউকে হত্যা করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে গরুকে মাতৃজ্ঞানে পুজো করারও নির্দেশ। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতির এক বড় অ্যাজেন্ডা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে এই প্রাণীটিকেই। আর সেই সূত্র ধরেই তৈরি হচ্ছে গো-রক্ষা কমিটির মতো কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যাদের প্রধান কাজ গরুকে রক্ষা করা। বলাই বাহুল্য, এইসব সংগঠনের সদস্যরা প্রত্যেকেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী। কিন্তু এবার মুসলিমদের উপরেও গো রক্ষার ভার দিতে চাইলেন মধ্যপ্রদেশের এক আইএএস অফিসার, যিনি নিজেও ধর্মে মুসলিম। নিয়াজ খান নামের ওই আধিকারিক রীতিমতো টুইট করে মুসলিমদের উদ্দেশে আরজি জানিয়েছেন, যাতে তাঁরা গরুর দেখভাল করেন। এদিকে মুসলিমদের অনেকেরই চলতি খাদ্য হল গোমাংস। ওই আধিকারিকের পরামর্শ, তাঁরা যেন নিরামিষ খাওয়ার অভ্যাস শুরু করেন। শুধু তাই নয়, জোর করে ধর্মান্তর করারও বিরোধিতা করেছেন তিনি। আর এই সবকিছু মেনে চললেই ব্রাহ্মণদের সঙ্গে মুসলিমদের সম্পর্ক ভাল থাকবে, এমনটাই তাঁর দাবি।
আরও শুনুন: ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখিয়েছিলেন খোদ সাধ্বী প্রজ্ঞা, মুসলিম প্রেমিকের সঙ্গে চম্পট সেই তরুণীর
এর আগেও ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রতি খানিক ঝুঁকে থাকতেই দেখা গিয়েছে এই আইএএস অফিসারকে। তিনি মনে করেন, মৌলবাদী সংগঠনগুলির দৌলতেই ইসলামের সম্পর্কে ভুল ধারণা বাড়ছে। সমাজে সাম্প্রদায়িক বিভেদ বাড়ানোর পিছনে বলিউডেরও একটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। আর এবার মুসলিমদের উপরেই সেই ধারণা বদলের ভার দিলেন তিনি।
গোমাংস নিয়ে এর আগে কম অশান্তি প্রত্যক্ষ করেনি দেশ। বেশ কয়েক বছর আগে গোমাংস রাখার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। গোমাংসে আপত্তি জানিয়ে বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন তামিলনাড়ুর এক ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর। আবার বিফ কারির ছবি পোস্ট করতেই পুলিশের তরফে হুঁশিয়ারি মিলেছিল চেন্নাইয়ের এক ব্যক্তির। এবার গরু প্রসঙ্গেই ফের বিতর্ক উসকে দিলেন এই প্রশাসনিক আধিকারিক।