কর্ণাটক ভোটের প্রচারে হিজাব বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেনি কোনও দলই। কিন্তু ভোটে জেতার পর হিজাব ইস্যুতে অন্যরকম ইঙ্গিত দিলেন কংগ্রেস নেতা। হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞায় কি কোনও বদল ঘটতে চলেছে সে রাজ্যে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরার বিরুদ্ধে আইন জারি করেছিল কর্ণাটকের বিজেপি সরকার। যা নিয়ে জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এই নির্দেশকে রাজনৈতিক চাল বলেই মনে করেছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। কর্ণাটকে ভোটে জিতে বাসবরাজ বোম্মাই-কে গদি থেকে সরানোর পর সেই ইস্যুতেই মুখ খুললেন সিদ্দারামাইয়া সরকারের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য প্রিয়াঙ্ক খাড়গে। হিজাবের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আগের সরকার, সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা খতিয়ে দেখা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্ক আবার খোদ হাত শিবিরের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের ছেলে। ফলে তাঁর এই ইস্যুতে বক্তব্য রাখাকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও শুনুন: কর্ণাটকে হারেও মার নেই, জনপ্রিয়তায় শীর্ষে সেই মোদিই, তবে এগোচ্ছেন রাহুলও
এমনিতে হিজাব বিতর্ক নিয়ে কর্ণাটকে কম জলঘোলা হয়নি। কর্ণাটকের ভোটের মরশুমে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারত এই হিজাব বিতর্কই। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে একটি কথাও খরচ করেননি কোনও পক্ষের কোনও নেতাই। ভোটের মরশুমে বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে শুরু হয় তরজা। এ ওকে তোপ দাগেন নেতানেত্রীরা। পাশাপাশি থাকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিও। কর্ণাটকের হেভিওয়েট নির্বাচনের আগেও সেসব দেখা গিয়েছে পুরো মাত্রায়। সেখানে বজরংবলী থেকে বজরং দল, সবকিছু নিয়েই চলেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কিন্তু যেখানে হাজারও অপ্রাসঙ্গিক কথা টেনে এনেও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন নেতারা, সেখানে হিজাব বিতর্কের মতো একটি রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই। মুসলিম তরুণীরা জানিয়েছিলেন, কেবল বিজেপি নয়, কোনও রাজনৈতিক দলই তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ায়নি, বা এই লড়াইয়ে তাঁদের সমর্থনের আশ্বাস দেয়নি। তবে সেই অভিযোগ এবার হয়তো দূর করার উদ্যোগ নেবে কংগ্রেস, এমনই ইঙ্গিত মিলেছে প্রিয়াঙ্ক খাড়গের কথায়। ভোটে নিরঙ্কুশ জয়লাভের পর সে রাজ্যে এবার সরকার গড়েছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে একাধিক মহল থেকেই ফের হিজাব ইস্যুতে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। কোনও স্পষ্ট আশ্বাস না দিলেও কংগ্রেস সাংসদ জানিয়েছেন, আগের সরকারের প্রণয়ন করা সমস্ত নির্দেশই যাচাই করে দেখবে নতুন সরকার। যেসব নির্দেশ সংবিধানবিরোধী, এবং সমাজের উন্নতির পক্ষে আদৌ সহায়ক নয়, সেসব নীতি বদলের পথেই হাঁটতে পারে কংগ্রেস সরকার, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আর সেই কথার উপরে ভিত্তি করেই আশার আলো দেখছেন কর্ণাটকের মুসলিম মেয়েদের একাংশ।