যৌন আনন্দে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নেয় যে অঙ্গগুলি, তার মধ্যে প্রথমেই আসবে যোনির কথা। শুধু যৌন সুখের জন্যই নয়, শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতেও এই গোপনাঙ্গের যথাযথ যত্ন নেওয়া জরুরি। কিন্তু সেখানেই ভুল করে ফেলেন কেউ কেউ। এমনকি মূত্রত্যাগের পর এই অঙ্গ পরিষ্কার করতে গিয়েও উলটে ক্ষতি করে বসেন অনেক মহিলা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘ত্বকের যত্ন নিন’। জনপ্রিয় গানটি এ কথা মনে করিয়ে দিয়েছে বটে, কিন্তু এ কথা আমরা কমবেশি সকলেই মনে রাখি। তবে শরীরের বহিরঙ্গকে সুন্দর রাখতে আমরা যত পরিশ্রম করি, শরীরের গোপন অঙ্গগুলির প্রতিও কি ততটাই নজর দিই? অথচ সুস্থ জীবনের জন্য সেই অঙ্গগুলির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও সমান জরুরি। পাশাপাশি যৌন অঙ্গের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল না রাখলে ব্যাহত হয় যৌন জীবনও। কিন্তু যত্ন না নেওয়া যেমন সমস্যার, তেমন যত্ন নিতে গিয়ে ভুল কাজ করলেও বিপদ কম নয়। ভুলভাবে যোনির যত্ন নেওয়ার দরুন সঙ্কটে পড়েন অনেক মহিলাই। বিশেষত যৌন মিলন বা প্রস্রাবের পর যোনি সঠিকভাবে পরিষ্কার করা উচিত। কিন্তু সে কাজটি ঠিক কী উপায়ে করা স্বাস্থ্যকর, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় রয়েছে।
আরও শুনুন: যৌনতার মৌতাতে বিক্ষত হতে পারে যোনি! ভয় না পেয়ে এই সমস্যা রুখবেন কী উপায়ে?
মূত্রত্যাগ করার পর যোনি পরিষ্কার করা না হলে অন্তর্বাসে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হতে পারে, যা ইউটিআই বা মূত্রনালীতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া এমনিতেও ঠিকমতো যোনির যত্ন না নেওয়া হলে সেখানে নানারকম ফাঙ্গাল ইনফেকশন, চুলকানি, প্রদাহ- এমন অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে। ঘটনা হল, যে মহিলারা এই বিষয়টি নিয়ে সচেতন, তাঁরাও অনেকসময় শৌখিনতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। বিদেশে তো বটেই, এ দেশেও অনেক মহিলাই যোনি পরিষ্কার করার জন্য টয়লেট পেপার বা ওয়েট টিস্যু ব্যবহার করে থাকেন। এই বস্তুগুলি চট করে জলীয় ভাব শুষে নিতে পারে। আর যেহেতু আর্দ্রতা থেকে ব্যাকটিরিয়ার জন্ম হওয়া সহজ, তাই এইভাবে যোনি পরিষ্কার করলে উপকার মিলবে বলেই মনে করেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে ঘটনা উলটো। গোপনাঙ্গের ত্বক অত্যন্ত নরম, ফলে সেখানে বারবার টয়লেট পেপার ঘষলে ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার ওয়েট টিস্যুতেও অনেকসময় কৃত্রিম সুগন্ধি ব্যবহার করা হয়, যা যোনির পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
আরও শুনুন: গরমে ডাবের জলে গলা ভেজাচ্ছেন! মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো?
আসলে অনেক মহিলাই মনে করেন, ঘন ঘন যোনি পরিষ্কার করলেই বুঝি যোনির স্বাস্থ্য ভাল থাকে। তবে এই ধারণা ভুল। যোনি অঞ্চলে কিছু ভাল ব্যাকটেরিয়াও থাকে, যা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। বারবার সাবান কিংবা অন্য কোনও তরল দিয়ে যোনি পরিষ্কার করলে যোনির আম্লিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, ভাল ব্যাকটেরিয়াগুলিও ধুয়ে যায়, ফলে ঝুঁকি বাড়ে সংক্রমণের। তাই অন্য কিছু নয়, জল দিয়ে যোনি ধুয়ে পরিষ্কার করাই সবচেয়ে ভাল পথ। যদিও প্রস্রাব হোক কি ঘাম বা জল, এখানে অনেকক্ষণ ধরে জলীয় ভাব না থাকাই বাঞ্ছনীয়। তাই জল দেওয়ার পর নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে তা মুছে নেওয়ার পরামর্শই দেন বিশেষজ্ঞরা।