বাসে, ট্রাম, অটো কিংবা অন্য কোনও গাড়ি, কোথাও দিতে হবে না ভাড়া। একেবারে বিনামূল্যে যেখানে ইচ্ছা পৌঁছে যাবেন আপনি। ভাবছেন তো এমনটা আবার হয় নাকি? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এমন একটা দেশ আছে, যেখানে কাউকেই গাড়িভাড়া দিতে হয় না। জানেন সেই দেশের নাম? আসুন শুনে নিই।
বিশ্বের অনেক দেশেই সরকারি গণপরিবহণে ভর্তুকি দেয় সে-দেশের সরকার। সব ধরনের যাত্রীদের কথা ভেবেই রাখা হয় এমন সুবিধা। কিন্তু একেবারে বিনামূল্যে কী কোথাও যাতায়াত করা সম্ভব? ইউরোপের লুক্সেমবার্গে অবশ্যই সম্ভব। সে-দেশের সরকার যে কোনও গণপরিবহণে বিনামূল্যে যাতায়াতের সুযোগ দেয়। কোনও খরচ না করেই সে দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারেন যে কেউ।
আরও শুনুন: স্টেশনে ফোন হারিয়েছিলেন বচ্চনের মেক-আপ আর্টিস্ট, পেয়ে ফিরিয়ে দিলেন কুলি
কিন্তু এমন নিয়ম কেন?
আসলে এই নিয়ম তৈরি হয়েছে পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্যই। বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ এই লুক্সেমবার্গ। বছর তিনেক আগে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, দেশের প্রতি ১০০০ জন নাগরিকের মধ্যে ৬৯৬ জনেরই নিজস্ব গাড়ি রয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে সেই গড় হিসেব গিয়ে দাঁড়ায় প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ৫৬০ জন, অর্থাৎ অর্ধেকের সামান্য বেশি বাসিন্দার নিজস্ব গাড়ি আছে। এবার এত সংখ্যক মানুষ যদি নিজের গাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন তাহলে দূষণ মাত্রা যথেষ্ট হারে বেড়ে যাবে। সেই আশঙ্কার কথা ভেবেই, দেশের সমস্ত গণপরিবহণ বিনামূল্যে করার কথা ঘোষণা করে লুক্সেমবার্গ প্রশাসন। একইসঙ্গে নাগরিকরা যাতে পরিবেশ দূষণ নিয়ে সচেতন হন সে প্রচারও করতে আরম্ভ করেন তাঁরা। যেখানে বারবার বলা হত, নিজের গাড়ি ব্যবহার না করে বিনামূল্যে গণপরিবহণ ব্যবহার করুক সকলে। ২০২০ সালে শুরু হওয়া সেই নিয়ম এখনও একইভাবে বর্তমানে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে গত ৩ বছর ধরে বিনামূল্যে গণপরিবহণের সুবিধা দিচ্ছে এই দেশের সরকার।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পরিষেবা যদি বিনামূল্যে চলে, তাহলে গণপরিবহণের এই বিপুল ব্যয়ভার কীভাবে বহন করছে ওই দেশে?
আরও শুনুন: পাটনা স্টেশনের পর্ন-কাণ্ডের পরই ‘রহস্যময়’ টুইট, নিজের ভিডিও চিনতে পারলেন তারকা?
যদিও এ বিষয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেননি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, লুক্সেমবার্গে বেশ কিছু ধনী মানুষের বাস। তাঁরা সরকারকে যথেষ্ট কর দেয়। গণপরিবহণ বিনামূল্যে করায় আয়ের যা ঘাটতি হয়েছে তা ওই করের টাকা থেকেই পুষিয়ে যায়। এমনটাই দাবি সেখানকার প্রধানমন্ত্রীর। এই পরিষেবার শুরু করার মূল উদ্দেশ্য দেশের মানুষ যাতে নিজস্ব গাড়ির ব্যবহার কমান। রাস্তায় কম গাড়ি চললে দূষণের মাত্রা কমবে। তাই আগামী দিনেও এই একই সুবিধা বজায় রাখতে চায় লুক্সেমবার্গ সরকার।