দুজনেই ভেবেছিলেন কোনোদিন বিয়েই হবে না তাঁদের। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে! সে কথাই যেন মনে করিয়ে দিল একটি বিয়ের ঘটনা। যেখানে পাত্রের উচ্চতা তিন ফুট, পাত্রীর উচ্চতা সাড়ে তিন ফুট। কোথায় ঘটেছে এই ঘটনা? আসুন শুনে নিই।
বিয়ের বয়স হয়েছে। সমবয়সি বন্ধু-বান্ধবদের সকলেরই প্রায় বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাঁর আর হয় না। কারণ একটাই। তাঁর উচ্চতা। বাড়ির ভাই-বোনের উচ্চতা বেশি হলেও, রেণু নামে এই তরুণীর উচ্চতা মাত্র সাড়ে তিন ফুট। আর সেই কারণেই কিছুতেই বিয়ে হচ্ছিল না তাঁর। একসময় তো বিয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন তিনি। তবে শেষমেশ পাওয়া গেল পাত্র। পাত্রেরও উচ্চতা তিন ফুট। জীবনে একই সমস্যায় পড়েছিলেন তিনিও। অতএব দুজন সমব্যথী মানুষের দেখা যখন হল, তখন আর মন দেওয়া-নেওয়ায় সময় লাগল না বিশেষ। কিছুদিনের মধ্যেই বিয়েও করেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: মন দিয়েছিলেন দুই যুবতীকে, কারও ‘আপত্তি’ না থাকায় দুজনকেই বিয়ে যুবকের
শারীরিক বিশেষ অবস্থার কারণেই কারও কারও উচ্চতা কম হয়। যাঁদের উচ্চতা কম, তাঁদের তো কিছু করার থাকে না। কিন্তু সামাজিক একরকমের বয়কটের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। হয়তো মুখে বলে-কয়ে কেউ বয়কট করে না। কিন্তু এঁদের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে কেউই প্রায় রাজি হন না। এই বয়কটেরই মুখ পড়েছিলেন বিহারের শ্যাম কুমার। তেইশের এই যুবকের উচ্চতা মাত্র তিন ফুট। আর ঠিক সেই কারণেই ছোটবেলা থেকে নানা কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। পরবর্তী সময়ে বিয়ে নিয়েও একই সমস্যায় পড়েছেন তিনি। বিয়ের আশা ছেড়েছিলেন তিনিও।
আরও শুনুন: দাঁড়িপাল্লায় কনের সঙ্গে রাখা অসংখ্য সোনার ইট! অভিনব কায়দায় ওজন পাকিস্তানের বধূকে
অবশেষে রেণুর সঙ্গে দেখা হল শ্যামের। দুজনেই একই সমস্যায় ভুক্তভোগী। দুজনেই বুঝতে পেরেছেন দুজনকে। এরপরেই নিজেদের জীবনের পথ বেছে নিতে দ্বিধা করেননি তাঁরা। ঠিক করেন, বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হবেন তাঁরা। সেইমতো সম্প্রতি বিয়ে হল দুজনের। এই বিয়ের পর খুশি সকলেই। বিয়ের আয়োজনও হয়েছিল রাজকীয় ভাবেই। উপস্থিত ছিলেন শতাধিক অতিথি। তবে শুধুমাত্র নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করতে নয়, তাঁদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য বেশি আগ্রহী ছিলেন সকলে। হাসিমুখে তাঁদের সকলের সঙ্গে ছবি তুলেছেন ওই যুগলও। তবে, রেণু তো শ্যাম কুমারকে খুঁজে পেলেন, কিন্তু উচ্চতার কারণে যাঁরা এরকম বয়কটের মুখে পড়েন, তাঁদের জীবনের অবস্থার কি বদল হবে! নবদম্পতির হাসিমুখে যেন লেগে থাকল সে প্রশ্নও।