দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে। কিন্তু নিয়ে যাবে বললেই তো যাওয়া হল না। সে যতই পাত্র পাত্রী রাজি থাকুক না কেন, পাত্রীর বাবার সম্মতি না পেলে তাদের এক হওয়া হবে না কখনোই। কিন্তু এই রীতি নিয়ে কী মত মেয়েদের? কোনও তরুণীকে বিয়ে করতে চাইলে তাঁর বাবার কাছ থেকে অনুমতি চাইতে হবে, এমনটাই কি মনে করেন তাঁরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমিকাকে বিয়ে করতে চান। কিন্তু তার জন্য যথেষ্ট নয় সেই নারীর নিজের মতামত। তাঁকে বিয়ে করার জন্য তাঁর বাবার কাছে আগে অনুমতি চাইতে হবে প্রেমিককে। আর সেখানে যদি প্রস্তাব পাশ হয়, তবেই হবে বিয়ে। এহেন প্রথা নিয়ে ঠিক কী মনে করেন মেয়েরা? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রশ্নের প্রেক্ষিতে উসকে উঠল এই বিতর্ক।
আরও শুনুন: ‘আধুনিক’ মেয়েদের ধূমপান না-পসন্দ, অনুমতি ছাড়াই অচেনা মহিলার ছবি পোস্ট করে বিপাকে ব্যক্তি
কথায় বলে, মিয়াঁ বিবি রাজি থাকলে আর কার কী করার আছে? কিন্তু ভারতীয় সমাজে যে কেবল পাত্র আর পাত্রী রাজি থাকলেই বিয়ে হয় না, সে কথা বলাই বাহুল্য। বরং পাত্র আর পাত্রী যদি একে অপরকে বিয়ে করতে রাজি হয়, তারপর থেকেই যেন যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। আর এই সমস্যাকেই তুলে ধরেছিল চেতন ভগতের ‘টু স্টেটস’-এর কাহিনি। যেখানে দেখা গিয়েছিল, প্রেমিকার পরিবারের থেকে তাদের সম্পর্কের স্বীকৃতি আদায় করতেই কালঘাম ছুটে গিয়েছিল প্রেমিকের। আর শুধু সেখানেই নয়, সিনেমার পর্দায় বারবার ফিরে এসেছে এই বিষয়টি। মিথ হয়ে যাওয়া ‘ডিডিএলজে’-ই হোক কি হালের ‘শেরশাহ’, সব জায়গাতেই দেখা গিয়েছে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে চাইলে সবার আগে ওই তরুণীর বাবার কাছে অনুমতি চাইতে হবে প্রেমিককে। আর এই নিয়েই সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন এক নেটিজেন। তাঁর প্রশ্ন, মেয়েরা কি আদৌ এমনটা চান? তাঁরা কি এই ব্যবস্থাতেই স্বচ্ছন্দ? আর সেই প্রশ্নের জবাবেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন একাধিক তরুণী।
আরও শুনুন: প্রাক্তন প্রেমিকার নামেই সদ্যোজাত কন্যার নাম রাখতে চান ব্যক্তি, চটে লাল স্ত্রী
অনেকেরই সাফ জবাব, তাঁরা কোনও পুরুষের সম্পত্তি নন। বস্তুত, কারোরই সম্পত্তি নন তাঁরা। তাই তাঁদের জীবনের সিদ্ধান্ত তাঁরা নিজেরাই নিতে পারেন। সুতরাং অনুমতির কোনও প্রশ্নই উঠছে না। তবে গুরুজনদের থেকে আশীর্বাদ অবশ্যই কাম্য, এমনটাই বলছেন মেয়েরা। এই প্রসঙ্গেই হিন্দু বিয়ের সম্প্রদানের প্রসঙ্গটিও তুলে এনেছেন কেউ কেউ। এই প্রথায় পাত্রের হাতে কন্যাকে সম্প্রদান করেন পাত্রীর বাবা। তিনি এ কথাও জানান যে মেয়ের উপর থেকে স্বত্ব ত্যাগ করছেন তিনি। কিন্তু অনেকেরই মত, স্বত্ব অর্থাৎ মালিকানা আরোপ করা যায় কোনও বস্তুর উপরে, যার নিজস্ব কোনও মতামত নেই। কিন্তু একজন মানুষের উপর কী করে কারও মালিকানা আরোপ করা যেতে পারে? বাবাই হোন, কিংবা স্বামী, কেউই আদতে তাঁদের মালিক নন বলে সাফ জানিয়েছেন একাধিক তরুণী। নতুন জীবনে প্রবেশের সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁদের নিজেদের। তাই সেই জীবনের জন্য বাবার থেকে অনুমতি নয়, আশীর্বাদ পেলেই খুশি হবেন তাঁরা, এমনটাই জানিয়েছেন নেটিজেনদের অধিকাংশই।