সন্তানজন্মের আগের মুহূর্ত- যে কোনও নারীর পক্ষেই এ এক বিশেষ মুহূর্ত। আনন্দ, উত্তেজনা, যন্ত্রণা মিলেমিশে থাকে এই মুহূর্তে। ঠিক সেই সময় কি কেউ ব্যস্ত থাকতে পারেন মেক-আপে! শুনতে অবাক লাগলেও তেমনটাই করেছেন এক তরুণী। তবে যেমন তেমন কারণে নয়, এর পিছনে আছে তাঁর বিশেষ ভাবনা। কী সেই ভাবনা? আসুন শুনে নিই।
মা হওয়া নয় মুখের কথা… কে না জানে! মা হওয়ার তৃপ্তি ঐশ্বরিক। তেমনই এই সময় শারীরিক ও মানসিক ভাবে একজন নারীকে সহ্য করতে অপরিসীম ধকল। সন্তানজন্মের তৃপ্তির পাশাপাশি বিধ্বস্ত চেহারায় তাই দেখা মেলে নতুন মায়ের। ঠিক সেরকম বিপর্যস্ত চেহারায় তাঁকে কেউ দেখুক, এটাই চাইছিলেন না বছর তেইশের এক তরুণী। আর তাই প্রসবের ঠিক আগে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই মেক-আপে ব্যস্ত রইলেন তিনি।
আরও শুনুন: শরীরী ভাষায় শরীরের স্বাধীনতা… বডিশেমিং-এর সপাট জবাব দিয়েছেন এই অভিনেত্রীরা
মিসিসিপির এই তরুণীর নাম কার্লি টেম্পল। সম্প্রতি তাঁর এই রূপটানের খবর নিয়ে চর্চা চলছে নেটদুনিয়ায়। প্রসবের জন্য হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন তিনি। আর সেখানেই তিনি ডেকে নিয়েছেন তাঁর মেক-আপ আর্টিস্টকে। দেখা যাচ্ছে, যেন কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার মতোই করেই তাঁর মেক-আপ করিয়ে দিচ্ছেন ওই রূপটান শিল্পী। সাধারণত প্রসববেদনার সময় আসন্ন সন্তানজন্মের দিকেই থাকে সকলের নজর। বিশেষত যিনি মা হতে চলেছেন তিনিও অন্য কোনওদিকে মন দিতে পারেন না। সেখানে এই তরুণীর কাজ রীতিমতো অবাক করেছে বিশ্বকে। তাঁর এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মেক-আপ আর্টিস্ট নিজেই। তিনি জানিয়েছেন যে, সন্তানজন্মের সময় তাঁকে কুৎসিত দেখতে লাগুক, তা একেবারেই চাইছিলেন না কার্লি। সন্তানের জন্মের পর সদ্যোজাতকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা নিশ্চয়ই তাঁর ছবি তুলবেন। আর সেখানেই বিধ্বস্ত চেহারায় দেখা যাবে তাঁকে। এই বিষয়টি এড়াতেই রূপসজ্জার আয়োজন কার্লির। কার্লি নিজেও অবশ্য এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, চকিৎসকরা সবসময় বলে থাকেন যে, গর্ভাবস্থায় খুশি থাকতে। যেন কোনওরকম টেনশন না হয়। নিজেকে যদি দেখতে ভাল লাগে, তাহলে তাঁর মনও ভাল থাকে। ফুরফুরে লাগে তাঁর। আর তাই প্রসববেদনা উঠতেই তিনি মেক-আপের সিদ্ধান্ত নেন। সন্তান যখন পৃথিবীর আলো দেখবে, তখন তাঁকে যেন দেখতে সুন্দর লাগে, এমনটাই আশা ছিল কার্লির। আর সে আশা পূরণ করতেই মেক-আপ করিয়েছেন তিনি। কেশসজ্জাও করিয়েছেন। সন্তানজন্ম তো কোনও বিপর্যয় নয়, বরং আনন্দের মুহূর্ত। আর সে মুহূর্তে যেভাবে তাঁর থাকতে ইচ্ছে, সেভাবেই নিজেকে সাজিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: ভাই-বোনের মধ্যে সম্পর্ক কি বৈধ? পরীক্ষায় প্রশ্ন পাকিস্তানে, বরখাস্ত অধ্যাপক
এরকম ঘটনা যে খুব কমই ঘটে তা বলাই যায়। তবে একেবারে বিরল নয়। এর আগে আলহা মাজিদ নামে এক তরুণীও প্রসবের আগে মন দিয়েছিলেন রূপটানে। ঠিক কার্লির মতো ভাবনাতেই সন্তানজন্মের আগে মেক-আপ করেছিলেন আমেরিকার সুপারমডেল ও অভিনেত্রী হেইডি মন্তাজ। এঁরা এবং কার্লি যেন মনে করিয়ে দিলেন প্রসবকালের বেদনার মধ্যেই নিজেকে ভাল রাখা জরুরি। খুলে দিলেন ভাবনার এক অন্য জানালা।