ভালোবাসার মাসে প্রেমিক বা প্রেমিকার কাছ থেকে প্রেমপত্র পেয়েছেন? পড়ে ভাবছেন এত সুন্দর কথা এই মুখচোরা মানুষটা কীভাবে লিখল? হতে পারে সে কথা তাঁর নিজেরই নয়! বরং তাঁর হয়ে আপনাকে প্রেমপত্র লিখে দিয়েছে অন্য কেউ। কে বলুন তো, যে সবাইকে প্রেমপত্র লিখে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে? আসুন শুনে নিই।
বন্ধু প্রেমে পড়েছে, কিন্তু সে কথা মুখে বলে উঠতে পারছে না? তার পছন্দের মানুষের কাছে সে কথা পৌঁছে দেবে কে? কুছ পরোয়া নেই। প্রিয় বন্ধু আছে তো। সাজিয়ে গুছিয়ে সুন্দর প্রেমপত্র লিখে দিতে যার জুড়ি নেই। হ্যাঁ, যার লেখার হাত ভাল, কিংবা যার হাতের লেখা সুন্দর, এককালে তাদের কাছে এমন চিঠি লিখে দেওয়ার প্রস্তাব আসত মাঝে মাঝেই। তবে সেসব এখন অতীত। এমনিতেই চিঠি লেখার চল প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। তার উপরে যদি চিঠি লিখতেও চান মনের মানুষের জন্য, সে চিঠি লেখার জন্য কোনও মানুষের আর প্রয়োজন পড়বে না। কাজ মিটে যাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়েই। কীভাবে? আসছি সে কথাতেই।
আরও শুনুন: নেকলেসের উপরে স্টেথোস্কোপ, কনের সাজেই পরীক্ষা দিতে হাজির তরুণী
কাগজ কলমে প্রেমপত্র লেখার চল এখন প্রায় হারিয়েই গিয়েছে। এখন যে কোনও কাজেই প্রধান ভরসা ইন্টারনেট। আর তার সঙ্গে আধুনিক সংযোজন হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কিন্তু তাই বলে প্রেমপত্র? যতই কম্পিউটারে লেখা হোক, এ জিনিস কি কৃত্রিম ভাবে লেখা সম্ভব? মানুষের মনের আবেগকে কি নকল করতে পারে এআই? উত্তর, হ্যাঁ, সবটাই সম্ভব এই প্রযুক্তির দৌলতে। অন্তত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা জানাচ্ছে তেমনটাই। শুধুমাত্র ভারতেই নাকি ৬২ শতাংশ প্রেমিক-প্রেমিকার কপালে জোটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লেখা প্রেমের চিঠি। বিশেষত পুরুষদের নাকি এই প্রবণতার প্রতি ঝোঁক সবথেকে বেশি। যদিও তার নেপথ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে বলেই দাবি সমীক্ষার।
‘মর্ডার্ন লাভ রিসার্চ’ নামে এই সমীক্ষাটি করা হয়েছিল সারা বিশ্বের নটি দেশের উপর। যার মধ্যে ছিল ভারতও। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে বদলে যাচ্ছে ভালোবাসার রকমফের, তা খুঁজে বার করাই ছিল এই সমীক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য। প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি মানুষের উপর করা এই সমীক্ষার শেষে উঠে আসে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। যার মধ্যে অন্যতম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লেখা প্রেমপত্র। তবে প্রেমপত্র লেখার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে সময়ের অভাব। প্রায় ২১ শতাংশ প্রেমিক-প্রেমিকা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সময়ের অভাবে প্রেমপত্র লিখে উঠতে পারেন না। তাই তাঁদের ভরসা এ-আই। অন্যদিকে অনেকে আবার প্রেমপত্র লেখার উৎসাহই খুঁজে পান না। এদিকে প্রেমপত্র ছাড়া প্রেম জমবে কেমন করে? তাই তাঁরাও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারস্থ হয়েছেন।
আরও শুনুন: দ্রৌপদীর হাতেই নাকি তৈরি, ফুচকার দৌলতে এবার বিশ্বসেরার খেতাব জয় কলকাতার
কিন্তু উলটোদিকের মানুষটা কি সত্যিই বুঝতে পারেন না, প্রেমপত্র কৃত্রিম ভাবে লেখা? সেই উত্তর খুঁজে পেতেও করা হয়েছিল সমীক্ষা। যেখানে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৭৮ শতাংশ ধরতেই পারেন না, প্রেমপত্রটি তাঁর মনের মানুষ লেখেননি। দিব্যি সেই চিঠি হাতে নিয়েই আহ্লাদে আটখানা হন তাঁরা। তবে প্রেমপত্র যেভাবেই লেখা হোক না কেন, প্রেমটাই তো আসল। সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে এই সমীক্ষাও।