ভারতের হয়েই তিনি নামেন ব্যাট হাতে। তবে বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেট-প্রতিভা যে সারা বিশ্বে সম্পদ, এ কথা অনস্বীকার্য। আর তাই তাঁকে যখন কটাক্ষ করা হয়, তার জবাব দেন তাঁরাই, যাঁরা সত্যিই জানেন বিরাট কোহলি মানে ঠিক কী। সম্প্রতি সেই অভিজ্ঞতাই হল জনৈক পাক সাংবাদিকের। বিরাটকে কটাক্ষ করে নিজের দেশের ব্যাটারেরই তোপের মুখে পড়লেন তিনি। কী মন্তব্য করেছিলেন ওই সাংবাদিক? আসুন শুনে নিই।
দেশের তো বটেই, সারা বিশ্বের ক্রিকেট-দুনিয়া তাঁর প্রতিভাকে কুর্নিশ জানায়। বিরাট কোহলি, সামগ্রিক ভাবে ক্রিকেট বিশ্বেরই বিস্ময়। দেশের জার্সিতে যিনি যে দলেরই প্রতিনিধিত্ব করুন না কেন, ক্রিকেটের কথা এলে কোহলিতে মুগ্ধ প্রায় সব দেশের ক্রিকেটাররাই।
আরও শুনুন: কেরিয়ারের অন্ধকার দিনে ভরসার আলো, সাফল্যের কৃতিত্ব স্ত্রীকেই দেন সূর্যকুমার
মাঝে বেশ কিছুদিন চূড়ান্ত খারাপ ফর্মে ছিলেন কিং কোহলি। এমন ভাবে আউট হচ্ছিলেন, যা দেখে তিনি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ক্রিকেটবিশ্বও অবাকই হয়েছিল। তবে খেলার দুনিয়া বোধহয়য় এরকমই। উত্থান-পতন সেখানে থাকেই। আর তাই একদিন ব্যাড প্যাচ কাটিয়ে কোহলি ফিরেছেন রাজার মেজাজেই। শেষ তিনটি ম্যাচের দুটিতেই তাঁর ব্যাটে এসেছে সেঞ্চুরি। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ৭৪টি সেঞ্চুরির মালিক তিনি। সামনে আছেন শুধু শচীন তেন্ডুলকর। এহেন ক্রিকেট-প্রতিভাকে যে সম্ভ্রমের, তা সকলেই মানেন। তবু সমালোচনা পিছু ছাড়ে না। এমনকী ভাল পারফরমেন্সের পরেও এল খোঁচা, তাও আবার পাক মুলুক থেকে। বিরাটের সাম্প্রতিক পারফরমেন্স নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন এক পাকিস্তানি সাংবাদিক। ফরিদ খান নামে ওই সাংবাদিকের বক্তব্য, বিরাটের ব্যাট তখনই কথা বলে ওঠে, যখন কোনও চাপ থাকে না। সিরিজ জেতার চাপ নেই, পরিবেশও ব্যাটিং সহায়ক- এরকম অবস্থাতেই দারুণ পারফর্ম করেন বিরাট। অর্থাৎ ইঙ্গিতে তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যে, চাপের মুখে জ্বলে উঠতে পারেন না বিরাট। ঘটনা হল, কোনও ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমী নন, এই কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন সে দেশেরই এক ব্যাটার- শোয়েব মাকসুদ। তাঁর প্রশ্ন, সত্যিই যে বিরাট চাপের মুখে খেলতে পারেন না, এ ব্যাপারে কি সাংবাদিক নিশ্চিত? অর্থাৎ কীসের ভিত্তিতে সাংবাদিক এই কথাটি বলছেন তা জানতে চান তিনি। সাংবাদিক নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। বলেন আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জন্য চাপমুক্ত পরিবেশ যে কোনও ব্যাটারেরই প্রয়োজন হয়। উদাহরণ হিসাবে তিনি এশিয়া কাপের আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটির প্রসঙ্গ তুলে নেন। পাক ক্রিকেটার তখন পালটা জানতে চান, পৃথিবীর কোন দেশে কোন পিচে বিরাটের সেঞ্চুরি নেই? অর্থাৎ বিরাটের মতো ক্রিকেটারের প্রতিভাকে যে এভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত নয়য়, তাই-ই স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
Virat Kohli is at his best when there’s no pressure, series not on the line and conditions great for batting. There’s no harm in gaining confidence and form in such matches, India need him to perform well in Test cricket with Australia coming over too tho. #INDvSL
— Farid Khan (@_FaridKhan) January 15, 2023
মোদ্দা কথা, বিরাটকে কটাক্ষ করতে গিয়ে নিজের দেশের ব্যাটারেরই তোপের মুখে পড়েছেন ওই সাংবাদিক। আসলে মাঠে নেমে যাঁরা খেলেন, তাঁরা যেভাবে বিরাটকে চেনেন, সেভাবে হয়তো কারো পক্ষেই চেনা সম্ভব নয়। পাক সাংবাদিক অনেক ম্যাচের উদাহরণ টেনেছেন বটে, তবে কিছুদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে চাপের মুখে প্রায় অবিশ্বাস্য ভাবে বিরাট যে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন, সে কথা আর মুখে আনেননি। তবে তিনি না বললেও, সারা ক্রিকেটবিশ্ব কিন্তু সে ম্যাচের কথা ভোলেনি। চাপের মুখে বিরাট কোহলি জ্বলে উঠতে পারেন কি-না, এ প্রশ্ন উঠলে, ওই ম্যাচটিই বোধহয় হবে তার সঠিক জবাব।