গান্ধী আর গডসে, মুখোমুখি। খলনায়ক বলেই পরিচিত গডসের রাজনীতিকে বোঝার চেষ্টা। সব মিলিয়ে এই সিনেমার সঙ্গে প্রথম থেকেই জুড়ে গিয়েছে বিতর্ক। ‘গান্ধী গডসে- এক ইয়ুধ’ মুক্তির আলো দেখবে কি শেষমেশ? নিশ্চিত ছিলেন না খোদ পরিচালকও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামের পথে চলে হয়ে উঠেছিলেন মহাত্মা। সাধারণ কোনও মানুষ নন, বরং সাধারণ মানুষের কাছে প্রায় দেবতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই, তাঁর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে-কে এক ঘৃণ্য খলনায়কের আসনে বসিয়েছিল গোটা ভারত। কিন্তু কেন সেদিন মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গডসে? সেই প্রশ্নটিকেই খুঁড়ে দেখতে চেয়েছে ‘গান্ধী গডসে- এক ইয়ুধ’ সিনেমাটি, যে প্রশ্ন ক্রোধ আর ঘৃণার আগুনে চাপা পড়ে গিয়েছে বারবার। কিন্তু স্রোতের উলটো দিকে চলা এই সিনেমাটি কি মুক্তির আলো দেখবে শেষমেশ? এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না খোদ পরিচালক রাজকুমার সন্তোষীও। জনতার দরবারে পৌঁছনো তো পরের কথা, তার আগে সিবিএফসি অর্থাৎ সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন-এর ছাড়পত্র মিলবে কি না, তা নিয়েই ঘোরতর সন্দেহ ছিল তাঁর।
আরও শুনুন: হোটেলে ডাক যৌনকর্মীদের, খেতেও দেওয়া হয়নি, বিস্ফোরক অভিযোগ পাক অভিনেত্রীর
আসলে ১৯৪৭-৪৮ সালের প্রেক্ষাপটে দাঁড় করানো হয়েছে এই পিরিয়ড পিসটিকে। স্বাধীনতার ঠিক পরে পরে দেশের রাজনীতিতে যে টালমাটাল চলছিল, তাকেই খতিয়ে দেখেছে এ সিনেমা। নাথুরাম গডসের রাজনৈতিক বোধ, তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ, সবকিছু খুঁজে পরিচালক দেখতে চেয়েছেন, কোন ভাবনার তাগিদে মহাত্মা গান্ধীর মতো বিরাট মাপের এক পাবলিক ফিগারকে প্রকাশ্যে হত্যা করার মতো সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গডসে। সিনেমাটির ট্রেলারে ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে, গান্ধী দলের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করছেন গডসে। তাঁর প্রায় ঈশ্বরপ্রতিম হয়ে ওঠা নিয়েও আপত্তি রয়েছে গডসের। এই সিনেমায় গডসে-কে নায়ক করে তোলা হয়েছে, এই মর্মে আপত্তি জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস।
আরও শুনুন: ‘বেশরম’ উরফি! খোলামেলা গেরুয়া পোশাকে বিজেপিকে পালটা দিলেন তারকা, দাবি নেটিজেনদের
এর আগে, ‘দ্য লেজেন্ড অফ ভগৎ সিং’ সিনেমাতেও মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে প্রচলিত ভাবনার বাইরেই হেঁটেছিলেন পরিচালক রাজকুমার সন্তোষী। আর এই সিনেমাতেও তেমনটাই করেছেন তিনি। কিন্তু ছকভাঙা এই কাজকে সেন্সর বোর্ড স্বীকৃতি দেবে কি না, তা নিয়ে বেশ ভয়ে ভয়েই ছিলেন তিনি। তবে আশ্চর্যের কথা হল, একটি দৃশ্যেও কাঁচি না চালিয়ে সিনেমাটিকে সার্টিফিকেট দিয়েছে বোর্ড। আপাতত মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছেন পর্দার গান্ধী ও গডসে।