অচেতন না করেই অস্ত্রোপচার চালানো হল ২৪ জন মহিলার দেহে। সরকারি প্রকল্পের আওতাতেই ঘটেছে এই কাণ্ড। আর বিহারের এই ভয়াবহ ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে নানা মহলে। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
‘ভুল’ পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে একাধিক রোগিণীর শরীরে। আর সেই অভিযোগেই তোলপাড় বিহারের খাগাড়িয়া জেলা। বস্তুত সরকারি প্রকল্পের আওতাতেই ‘টিউবেক্টমি’, অর্থাৎ বন্ধ্যাত্বকরণের এক বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন ওই রোগিণীরা। আর সেই চিকিৎসাপদ্ধতির মধ্যেই এমন গণ্ডগোল ঘটে যাওয়ার জেরে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, এক-দুজন নয়, ২৪ জন মহিলার ক্ষেত্রে এমন অবৈজ্ঞানিক উপায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও শুনুন: তরুণীর পেট থেকে উদ্ধার ৪ ফুট লম্বা সাপ! অপারেশনের সময় তাজ্জব চিকিৎসকরাও
কী ঘটেছে ঠিক?
জানা গিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়া আটকাতেই নারীদেহে ‘টিউবেক্টমি’ নামের ওই অস্ত্রোপচার করা হয়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের তরফে এই অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা রয়েছে। আর সেই মোতাবেকই ওই এলাকার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন রোগিণীরা। সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায় নিয়েছিল এক বেসরকারি সংস্থাও। ‘টিউবেক্টমি’ অস্ত্রোপচারের জন্য মোট ৫৩ জন মহিলা নাম লিখিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৪ জন মহিলাকে অস্ত্রোপচার করার সময় অচেতন করা হয়নি। বরং সজ্ঞানে থাকা অবস্থাতেই তাঁদের শরীরে সার্জিক্যাল ব্লেড চালানো হয়েছে। যার দরুন অমানুষিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে তাঁদের, এমনটাই জানিয়েছেন রোগিণীরা। একজন দাবি করেছেন, অস্ত্রোপচার চলাকালীন ঘরের মধ্যে আরও চারজন ছিলেন। রোগিণী যন্ত্রণায় চিৎকার করলে তাঁর হাত-পা চেপে ধরে রেখেছিলেন তাঁরা।
আরও শুনুন: জঙ্গিহানা নয়, প্রেম-পরকীয়া-যৌনতার ছুরির কোপেই খুন বেশি মানুষ! বলছে সমীক্ষা
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মানুষকে অচেতন করার কোনও উপায় আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এমনভাবেই অস্ত্রোপচার করা হত। ফলে অত্যধিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুও হত কোনও কোনও রোগীর। কিন্তু এ যুগে দাঁড়িয়ে অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়া এমন আদিম উপায়ে অস্ত্রোপচারের কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন সকলেই। এর আগেও বিহারে এই একই অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ উঠেছিল। এবার ফের একই অভিযোগ উঠেছে দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তার উপরে খোদ সরকারি প্রকল্পের দিকেই আঙুল ওঠায় অস্বস্তিতে প্রশাসন।