বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে রুখতে চেয়ে রাহুল গান্ধীও কি ‘নরমপন্থী হিন্দুত্বের’ পথেই হাঁটছেন? গুঞ্জন উঠেছে একাধিক রাজনৈতিক মহলে। এই অভিযোগ এবার সরাসরি খারিজ করলেন কানহাইয়া কুমার। কড়া বা নরম বলে হিন্দুত্ববাদের কোনও মাত্রাভেদ হয় না, সাফ জানালেন নবীন কংগ্রেস নেতা। ঠিক কী বলেছেন কানহাইয়া? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় বেরিয়ে একাধিক মন্দিরে উপস্থিত হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। যে পদক্ষেপকে বিজেপি শিবিরের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির পালটা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ‘নরমপন্থী হিন্দুত্বের’ পথেই হাঁটছেন রাহুল, এই অভিযোগেও সুর চড়িয়েছেন অনেকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সম্প্রতি সেই অভিযোগকেই একেবারে খারিজ করলেন হাত শিবিরের নবীন নেতা কানহাইয়া কুমার। তাঁর সাফ কথা, এর মধ্যে ধর্ম নিয়ে কোনোরকম রাজনীতি নেই। কেবল মন্দির নয়, মসজিদ, গির্জাতেও গিয়েছেন রাহুল। গিয়েছেন স্কুল, কলেজ, কলকারখানাতেও। আর এর প্রত্যেকটি জায়গাই তাঁদের কাছে পবিত্র, কারণ এখান থেকে মানুষ তাদের বেঁচে থাকার রসদ জোগাড় করে। নিজেদের ‘পর্যটক’ বলে চিহ্নিত করে কানহাইয়া কুমার আরও দাবি করেছেন, পায়ে চলার পথকেও তাঁরা পবিত্র বলেই মনে করেন।
আরও শুনুন: যিশুর আগেও ছিল হিন্দু শব্দের ব্যবহার! পুরীর শংকরাচার্য জানালেন কাদের বলা হত হিন্দু
রাহুল গান্ধীর মন্দির দর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এক সাংবাদিক। কানহাইয়া তাঁকে পালটা জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার চশমার পাওয়ার কত?’ তারপরই অবশ্য তিনি স্পষ্ট করে দেন যে এ কথার মধ্যে কোনও ব্যঙ্গের সুর ছিল না। আসলে দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যার কথাই বলতে চেয়েছিলেন তিনি। কানহাইয়ার মতে, বর্তমানে আমাদের ধারণাগুলি এমনভাবে ঘেঁটে দেওয়া হচ্ছে যে আমরা প্রকৃত সত্যকে দেখতে পাচ্ছি না। তাই মন্দিরে গেলে কটাক্ষ করা হচ্ছে, কিন্তু গুরুদ্বার বা অন্য কোনও ধর্মীয় স্থানে গেলে এমন প্রশ্ন আসছে না। আসলে দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতির কেন্দ্রটি এমনভাবে ধর্মকে ভর করে রয়েছে যে সেখান থেকেই এ জাতীয় প্রশ্ন উঠে আসছে, মত কানহাইয়া কুমারের।
আরও শুনুন: ভক্তদের প্রণামী থেকে মাথার চুল বিক্রি… বিভিন্ন পথে তিরুপতির তহবিলে কোটি কোটি টাকা
কেবল ধর্ম নিয়ে রাজনীতির অভিযোগকে খণ্ডন করাই নয়, ধর্ম নিয়ে রাজনীতির স্বরূপটিও চেনাতে চেয়েছেন কংগ্রেসের এই নেতা। তাঁর সাফ কথা, “হিন্দু ধর্মকে অপমান করবেন না। একটি দল যদি ধর্মের নাম নিয়ে মানুষকে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেয়, তবে তাকে ধর্ম বলা চলে না।” হিন্দুত্ববাদ আসলে একটি রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা, এমনটাই মনে করেন কানহাইয়া কুমার। আর তার কোনও চরমপন্থা বা নরমপন্থা হয় না বলেই দাবি তাঁর। নেতার স্পষ্ট কথা, ‘সাপ বড় হোক কি ছোট, সে বিষধরই হয়।’ যারা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করে, তারা পরিবেশ বিষিয়েই তোলে। কংগ্রেস যে সে পথের পথিক নয়, রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়ে সে কথাই স্পষ্ট করে দিলেন কানহাইয়া কুমার।