গোটা গ্রাম জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে সাইনবোর্ড। যেখানে লেখা আছে, ‘আর একটিও বিয়ে নয়’! আর সেই ছবি নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বেশ শোরগোল নেটপাড়ায়। কোথায় হয়েছে এমন কাণ্ড? হঠাৎ এমন অদ্ভুত বিজ্ঞপ্তি কেনই বা দেওয়া হল সেখানে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
গোটা গ্রামটাই প্রসিদ্ধ বিয়ের জন্য। না, শুধু গ্রামের বাসিন্দাদের বিয়ের কথা হচ্ছে না। এ আসলে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং-এর অন্যতম স্থান। ব্রিটেনের অক্সনিড গ্রাম। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ নিজেদের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য পাড়ি দেন এই গ্রামেই। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নিরিবিলিতে বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে তাঁরা ফিরে আসেন। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এই রেওয়াজ। তবে এবার সেই রীতি বন্ধ করে দিতে চান খোদ গ্রামবাসীরাই। সেই মর্মে গোটা গ্রামজুড়েই তাঁরা সাইনবোর্ড লাগিয়ে রেখেছেন। যেখানে বড় বড় অক্ষরে লেখা, ‘আর একটিও বিয়ে নয়’।
আরও শুনুন: জ্বরে পুড়ছে গা, ছিলেন ঋতুমতী… তবু বৃষ্টি ভিজে রোম্যান্টিক গানে অভিনয় রবিনার
যে কোনও অনুষ্ঠান পাড়া-প্রতিবেশীর যোগদান ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর তা যদি হয় বিয়ের মতো অনুষ্ঠান হয়, তাহলে তো কথাই নেই। পরিবারের সঙ্গে সঙ্গে এই অনুষ্ঠানের আনন্দে শামিল হন পাড়ার সকলেই। বিশেষত গ্রামের দিকে কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান হলে তা কার্যত উৎসবের চেহারা নেয়। সকলেই নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু ব্রিটেনের এই গ্রামে ছবিটা খানিক অন্যরকম। এই গ্রামের বাসিন্দারা বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে আর কোনও আগ্রহ দেখান না। বরং বিরক্ত। আর তাই রীতিমতো সাইনবোর্ড লাগিয়ে তাঁরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন, এই গ্রামে আর একটিও বিয়ে যেন না হয়। আসলে সমস্যার সূত্রপাত তো বহুকাল আগেই। অসাধারণ পরিবেশের কারণে ব্রিটেনের এই গ্রাম সকলের কাছেই ওয়েডিং-এর ফেভারিট ডেস্টিনেশন। তাই বিয়ে হোক বা যে কোনও আনন্দের অনুষ্ঠান, এই গ্রামে দল বেঁধে হাজির হন দেশ-বিদেশের অনেকেই। এমনকি লম্বা ছুটি কাটানোর জন্যেও ব্রিটেনের অক্সনিড গ্রামের জুড়ি নেই। কিন্তু সারাবছর ধরে বাইরের লোক আসায় বেশ অসুবিধায় পড়তে হয় ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, এখানে অনুষ্ঠান করতে আসা মানুষজন, গ্রামটিকে খুবই নোংরা করে দিয়ে যান। সাজানো বাগানে যত্রতত্র নোংরা ফেলা থেকে শুরু করে প্রস্রাব করা, কিছুই বাদ থাকে না। তাঁরা চলে গেলে গ্রামের বাসিন্দাদেরই বারবার পরিষ্কার করতে হয় সবকিছু, নইলে বাস করা দায়! এতে তাঁদের দৈনন্দিন জীবন যাপন ভীষণভাবে ব্যাহত হয়।
আরও শুনুন: নাড়ির টান! ৭ মাস ধরে অজ্ঞান দুর্ঘটনায় জখম যুবতী, তবুও পৃথিবীর আলো দেখল সন্তান
তাই শতাব্দীপ্রাচীন রেওয়াজ ভেঙে ফেলতে উদ্যত হয়েছেন গ্রামবাসীরা। অক্সনিডের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি শতাব্দীপ্রাচীন হলেই মূলত বিয়ের আসর বসে। এত বছর ধরে সেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক বিয়ের অনুষ্ঠানেরই আয়োজন করা হত। কিন্তু অতিমারি-পরবর্তী সময়ে অক্সনিডে যত খুশি বিয়ের সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিয়েছিল প্রশাসন। তার পর থেকেই স্থানীয়দের উপর ‘অত্যাচার’ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বার তাই সেই বিয়েবাড়িগুলির বিরুদ্ধেই একজোট হল অক্সনিড গ্রামের সদস্যরা।