বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাজার বানানোর নির্দেশ দিয়ে বরখাস্ত হলেন প্রধান শিক্ষিকা। একইসঙ্গে অভিযোগ, তিনি নাকি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে নিষেধ করেছিলেন। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবৈধভাবে ‘মাজার’ বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। এই অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে দিতেন না। বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো করতেও বাধা দিয়েছিলেন এই শিক্ষিকা, এমন অভিযোগেও সরব হয়েছেন বিদ্যালয়ের অনেকেই।
আরও শুনুন: চুম্বনে অ্যালার্জি! ডেটে গিয়ে প্রেমিকের আদরের জেরে প্রাণ নিয়েই টানাটানি যুবতীর
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে মাজার অত্যন্ত পবিত্র স্থান। সাধারণত কোনও ইসলাম ধর্মগুরুর স্মৃতির উদ্দেশে এক বিশেষ আকৃতির মসজিদ তৈরি করা হয়। যার ভিতরে চাদর ঢাকা দেওয়া এক চাতাল দেখতে পাওয়া যায়। ফুল ও রঙিন চাদরে মোড়া সেই চাতালটিকেই বলা হয় মাজার। শোনা যায়, এই মাজারে উপঢৌকন হিসেবে চাদর দেওয়া নাকি মুসলমানদের কাছে এক বিশেষ ধর্মীয় রীতি। এবার মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলার এক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সেই মাজারের ন্যায় চাতাল বানানোর নির্দেশ দিয়েই বিপাকে পড়েছেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। স্কুলেরই এক প্রাক্তন শিক্ষক ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন সায়না ফিরদৌস নামের ওই শিক্ষিকার স্বামীও এই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। কয়েক মাস আগে তাঁর উদ্যোগেই নাকি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাজারের ন্যায় একটি চাতাল বানানো হয়। পাশাপাশি সায়না ফিরদৌস নামের ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দেবী সরস্বতীর মূর্তি প্রবেশের ক্ষেত্রেও বাধা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়েই, ওই অঞ্চলের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর উমাকান্ত ভার্গব সায়না ফিরদৌসের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরকে। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে, এদিন জাতীয় চাইল্ড রাইট প্রোটেকশন কমিশনের অধিকর্তারা স্কুল পরিদর্শনে আসেন। এরপরই শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ এনে সাসপেন্ড করা হয় সায়ানা-কে। পাশাপাশি জেলা শিক্ষা দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও শুনুন: বিয়ে করলেই থাকতে হবে ঘরজামাই! অদ্ভুত শর্তের জেরে বর জুটছে না গ্রামের ৩০০ তরুণীর
যদিও এ বিষয়ে ওই প্রধান শিক্ষিকার দাবি, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। ওই মাজারের ন্যায় নির্মিত চাতালটিতে কিছুই করা হত না। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে না দেওয়ার অভিযোগও সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা যথেষ্ট। আর সেই জনপ্রিয়তার জেরেই কিছু সহকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে এহেন ষড়যন্ত্র করেছেন বলে পালটা অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষিকা।