একদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভারতমাতার পুজো করা নিয়ে অশান্তি দানা বেঁধেছিল কর্ণাটকে। এবার গণেশ পুজোকে কেন্দ্র করে নতুন করে সংঘাতে জড়াল রাজ্য। গণেশ চতুর্থীর পুজোকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ইঠেছে বেঙ্গালুরুর ইদগাহ ময়দান। জারি করা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা। কী হয়েছে সেখানে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
শিয়রে স্বাধীনতা দিবস। দেশ জুড়ে চলছে তার প্রস্তুতি। তার আগেই ফের নয়া অশান্তি ছড়াল কর্ণাটকে। হিজাব বিতর্ক থেকে শুরু করে লাউড স্পিকার বিতর্ক, এর আগেও একাধিক বার ধর্মীয় অশান্তি ছড়িয়েছে কর্ণাটকে। একদিন আগেই মেঙ্গালুরুর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতমাতা পুজো নিয়ে উঠেছিল বিতর্ক। ভারতমাতা পুজোর পোস্টার দেবীমূর্তির হাতে তেরঙার বদলে গৈরিক পতাকা কেন, এই প্রশ্ন তুলে পুজোয় আপত্তি জানায় একটি পক্ষ। স্বাধীনতা দিবসের নাম করে শিক্ষা ক্ষেত্রে ধর্মীয় উপাচার পালনের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
আরও শুনুন: তেরঙার বদলে ভারত মাতার হাতে গৈরিক পতাকা কেন? ফের বিতর্ক কর্ণাটকের বিশ্ববিদ্যালয়ে
তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিতর্ক বেঙ্গালুরুতে। সেখানে ইদগাহ ময়দানে গণেশ পুজো করার দাবি জানিয়েছে হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি দল। যা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানিয়েছে ওই ময়দানের ওয়াকফ বোর্ড। তাঁদের সিদ্ধান্তে পাশে দাঁড়িুয়েছে কংগ্রেস। ইদগাহ ময়দানে গণেশ চতুর্থীর মতো পুজো করা উচিত নয় বলেই জানিয়েছে তাঁরা। ওয়াকফ বোর্ডের তরফেও জানানো হয়েছে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা গেলেও গণেশ চতুর্থীর মতো বিশেষ ধর্মের অনুষ্ঠানে সায় নেই তাদের।
আরও শুনুন: হর ডিশ তিরঙ্গা… স্বাধীনতার উদযাপনে সমস্ত খাবারই জাতীয় পতাকার রঙে সাজাল রেস্তরাঁ
সম্প্রতি কর্পোরেশন জানিয়েছে, ওই ইদগাহ ময়দানটি শুল্ক দপ্তরের সম্পত্তি। যদিও মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি, ওই ময়দান ওয়াকৎ বোর্ডের। এই দড়ি টানাটানির মধ্যেই ইদগাহ ময়দানে গণেশ পুজো করার দাবি জানায় বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। যার তীব্র আপত্তি জানিয়েছে মুসলিমপন্থী সংগঠনগুলি। কংগ্রেস বিধায়ক জমির আহমেদ খান জানিয়ে দিয়েছেন স্বাধীনতা দিবসে পতাকা তোলা হলেও গণেশ চতুর্থীর মতো কোনও উৎসব পালন করা যাবে না ওই মাঠে। কর্ণাটকের রেভিনিউ মিনিস্টার আর অশোকা এ নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকও সেরেছেন। যেখানে ১৫ অগস্ট ওই মাঠে জাতীয় পতাকা তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও ধরনের ধর্মীয় স্লোগান পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে দেওয়া যাবে না। এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ কমিশনারকেও। ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। জারি করা হয়েছে কড়া নিরাপত্তাও।
একের পর এক ধর্মীয় অশান্তি যেন লেগেই রয়েছে কর্ণাটকে। হিজাব বিতর্ককে কেন্দ্র করে দিনকয়েক আগেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য। সেই আগুনে ঘি ঢেলেছিল লাউড স্পিকার বির্তক। ফের সাম্প্রদায়িক অশান্তির আঁচ এবার স্বাধীনতা দিবস ও গণেশ চতুর্থীকে কেন্দ্র করে। পরিস্থিতি বুঝে তাই আগেভাগেই সাবধান হচ্ছে প্রশাসন। অশান্তি ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পুলিশ।