রণবীর কাপুরের সঙ্গে বিয়ের পর মাস আড়াই কেটেছে অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের। এর মধ্যেই খবর এল, মা হতে চলেছেন তিনি। আর তা নিয়েই শোরগোল পড়ল নেটদুনিয়ায়। কেউ প্রকাশ্যে, কেউ আবার ঠারেঠোরে বোঝাতে লাগলেন, হয়তো বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন আলিয়া। এই ধরনের মন্তব্যের জবাব আলিয়া নিজেই দিয়েছেন। এবার সেই আবহেই মুখ খুললেন আর-এক অভিনেত্রী দিয়া মির্জা। এই প্রসঙ্গে তাঁর কী মত? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিবাহ-পূর্ববর্তী যৌনতা বা অন্তঃসত্ত্বা হওয়া- নারীর ক্ষেত্রে বিষয়দুটি যে ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং স্বাধীনতার উপরই নির্ভর করে, এ-কথা এখনও যেন প্রতিষ্ঠিত নয়। এ বিষয়ে বেশিরভাগ মানুষের মতামতই যেন আটকে আছে নানারকম সামাজিক সংস্কারের বেড়াজালে। স্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত নারীদেরও তাই এই নিয়ে পড়তে হয় নানা অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখে। এরই দৃষ্টান্ত দেখা গেল, যখন মা হওয়ার কথা ঘোষণা করলেন অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। চারিদিক থেকে ছুটে এল প্রশ্নবাণ। সন্দেহের কাঁটা এসে বিঁধতে শুরু করল সেই সুসংবাদকে। বর্তমানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ট্রোল করা’, তারই শিকার হলেন অভিনেত্রী। আলিয়া সেই সব পিতৃতান্ত্রিক মন্তব্যের জবাব তো দিয়েইছিলেন, এবার একই প্রসঙ্গে সরব হলেন অভিনেত্রী দিয়া মির্জা-ও।
আরও শুনুন: ৬০ বছর ধরে তীর্থযাত্রীদের করিয়েছেন অমরনাথ দর্শন, এখনও মন্ত্রপাঠ করেন বৃদ্ধ গুলাম নবি
এই ধরনের প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া যে নতুন কিছু নয়, তা জানাতে গিয়ে, তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেছেন দিয়া। তিনি যখন তাঁর মা হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখন একইরকম প্রশ্ন তাঁর দিকেও ছুটে এসেছিল। তাঁর বিয়ের তারিখ, এবং অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সময় তুলে ধরে নেটদুনিয়ায় তাঁকে বহু প্রশ্ন করা হয়েছিল। ইঙ্গিত ছিল এরকম যে, অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন বলেই বুঝি তিনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর জবাব দিয়ে দিয়া জানিয়েছিলেন, অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন বলেই তিনি বিয়ে করেছেন, এমন ধারণা একেবারেই ভুল। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ফলাফল বিবাহ হতে পারে না। তিনি তাঁর মনের মানুষকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, কেননা তাঁরা একসঙ্গে জীবনটা কাটাতে চেয়েছিলেন। আর সেই সূত্রেই একদিন বুঝতে পারেন যে, তাঁদের জীবনে আসছে নতুন সদস্য। চিকিৎসকরা যখন এ বিষয়ে তাঁকে নিশ্চয়তা দেন, তখনই তিনি সে-খবর সকলকে জানিয়েছেন। তার আগে জানাননি। এ ছাড়া জীবনের এমন ভাল খবর লুকিয়ে রাখার আর কোনও কারণ ছিল না। এই অভিজ্ঞতা জানিয়েই দিয়া বলেন, বিবাহ-পূর্ববর্তী যৌনতা এবং সন্তানধারণকে আজও অনেকে সন্দেহের চোখে দেখেন। আবার এমন বহু মানুষই আছেন, যাঁরা মনে করেন, এটি হল একান্তই ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছার বিষয়। কেউ যদি মনে করেন, তবে তাঁর জীবনে এগুলো ঘটতে পারে- এই সত্য স্বীকার করে নেওয়াই শ্রেয়। দিয়া জানিয়েছেন, এই যে ‘চয়েস’ বা ব্যক্তিস্বাধীনতা, তা তাঁরাই উদযাপন করতে পারেন, যাঁরা এর গুরুত্ব জানেন। যাঁরা অন্য কোনও ভয়ে ভীত নন, তাঁদের কাছেই এই উদযাপন প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।
আরও শুনুন: প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে অসুবিধায় পড়েছেন! বিকল্প হাতের সামনেই, কী কী সঙ্গে রাখবেন?
আলিয়াকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন, সন্দেহ যখন নেটদুনিয়া ছেয়ে ফেলেছে, তখন দিয়ার টিপ্পনি, ‘আমরা নিজেদের যতটা প্রোগ্রেসিভ ভেবে থাকি, আসলে হয়তো তা নয়’। তাঁর এই মন্তব্য যে অনেকাংশেই সত্যি, তা অস্বীকার করার জায়গা-ও বোধহয় নেই।