উদয়পুর হত্যাকাণ্ডের জেরে আপাতত উত্তাল গোটা দেশ। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব-ও। এবার এহেন ঘটনার তীব্র সমালোচনা করল দেশের একাধিক ইসলামিক সংগঠনও। ঘটনার প্রেক্ষিতে কী মত সেইসব সংগঠনের? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠল নূপুর শর্মা বিতর্ক। নেত্রীকে সমর্থন জানিয়ে করা এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জেরে নিহত হলেন উদয়পুরের বাসিন্দা কানহাইয়া লাল। যে ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। এবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই মুখ খুললেন দেশের একাধিক ইসলামিক সংগঠনের নেতৃত্ব। এ জাতীয় ঘটনার কোনোরকম দায় নিতে রাজি নয় তারা, সাফ জানিয়েছে সংগঠনগুলি। এমনকি এই ঘটনাকে ইসলামের পরিপন্থী বলেও কড়া সমালোচনা করেছে তারা।
আরও শুনুন: ভগবানের নামে সাইবার জালিয়াতি! ভক্তদের থেকে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ পাঁচ পুরোহিতের
হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তীব্র জনরোষের মুখে পড়েছিলেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। সেই ঘটনার জেরে তাঁকে বহিষ্কার করেছে দল। কিন্তু বিতর্ক থামছে না তাতেও। জানা গিয়েছে, নূপুর শর্মাকে সমর্থন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন পেশায় দরজি কানহাইয়া লাল। তার পালটা দিতেই উদয়পুরের বাজারে দোকানের মধ্যেই নৃশংসভাবে খুন করা হয় ওই ব্যক্তিকে। সেই খুনের ঘটনার ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে দুই ব্যক্তি। ইসলাম ধর্মাবলম্বী ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইসিস যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আসরে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু ধর্মীয় পরিচয়ের সূত্র ধরে দেশের ইসলামিক সংগঠনগুলি যে ওই দুই অভিযুক্তের পাশে দাঁড়াচ্ছে না, সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিল তারা। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড-এর মতে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ এবং তা ইসলামেরও পরিপন্থী। পাশাপাশি যে কোনও ধর্মের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে কুৎসা করলে তার যথাযথ ব্যবস্থা নিক আইন, এই আরজিও জানানো হয়েছে। উদয়পুর হত্যাকাণ্ডকে বর্বরের মতো কাজ বলে মনে করে ইসলামি সংগঠন জামাত-ই-ইসলামি হিন্দ-ও। তাদের মতে, ইসলাম কখনোই হিংসাকে প্রশ্রয় দেয় না। এমনকি রাজস্থানে অবস্থিত আজমির শরিফের প্রধান জয়নুল আবেদিন আলি খান-ও এই ঘটনাকে তালিবানি নৃশংসতার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইসলামের শিক্ষা ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার কথাই বলে।
আরও শুনুন: ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রশংসা করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী, জানেন কে এই পূর্ণা মালাবত?
এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানোর পাশাপাশি দেশবাসীর কাছে শান্তিরক্ষার আরজিও জানিয়েছে এই সংগঠনগুলি। কোনোরকম হিংসাত্মক আচরণ বরদাস্ত করতে তারা রাজি নয়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই বার্তাই দিয়েছে তারা।