এ-ও এক পঞ্চায়েতের গল্প। ঘটনার কেন্দ্রে এক সচিবজি। তবে এই পঞ্চায়েতের গল্প কিন্তু কাল্পনিক নয়, মধ্যপ্রদেশের মাটি-ই সাক্ষী এ-গল্পের। কিন্তু গল্পটা কী? কেনই বা তা নিয়ে এত কথা বলতে বসা! আসুন, একটু খোলসা করেই তবে বলা যাক ব্যাপারটা।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই মহিলা। নির্বাচনে মহিলাদের এগিয়ে আসা মানেই তো পরবর্তীতে প্রশাসনিক কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণ। সে তো খুব ভালো কথা। প্রথা মেনেই দুই মহিলার জমা দেওয়া ব্যক্তিগত তথ্যাবলি খতিয়ে দেখছিলেন ঊর্ধ্বতন অফিসার। আর তা দেখতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ তাঁর। ভালো করে মিলিয়ে দেখলেন। না, ভুল কিছু দেখছেন না। দুই মহিলাই নমিনেশন ফর্মে স্বামীর নাম লিখেছেন- সুখরাম সিং। অর্থাৎ যে দুজন পরস্পরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁদের দুজনের স্বামী একজন ব্যক্তি-ই। যিনি কিনা একটি গ্রামের পঞ্চায়েত সেক্রেটারি অর্থাৎ সচিবজি। হিসাবটা দাঁড়াচ্ছে এরকম যে, ভোটে যে-ই জয়লাভ করুন না কেন, ঘুরিয়ে জয় হবে সেই সচিবজিরই। কেননা ঘরের জয় তো আর পরের হতে পারে না।
আরও শুনুন: পুরুষ নয়, স্বামী আসলে নারী! বিয়ের ১০ মাস পরে বুঝতে পেরে হতবাক স্ত্রী
এই তথ্য উদ্ধার হওয়া মাত্র তোলপাড় পড়ে। একটি সংবাদসংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেখা যাচ্ছে, সিংগরোলি জেলার এক পঞ্চায়েতের নির্বাচনে যে দুই মহিলা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁরা হলেন কুসুকলি সিং ও গীতা সিং। এঁদের মধ্যে গীতা ছিলেন পূর্বতন সরপঞ্চ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। কাগজপত্র নিয়ে কিঞ্চিৎ ঘাঁটাঘাটি করতেই বেরিয়ে এল আরও-এক চমকপ্রদ তথ্য। জানা গেল, সচিবজির আর-এক স্ত্রী-ও লড়ছেন নির্বাচনে। তাঁর নাম ঊর্মিলা সিং। অর্থাৎ সব তথ্য মিলিয়ে যা দাঁড়াচ্ছে তা হল, সচিবজির তিন জন স্ত্রী, তাঁরা তিনজনেই লড়াই করছেন নির্বাচনে, তার মধ্যে আবার দু-জন লড়ছেন পরস্পরের বিরুদ্ধে। ঘটনা প্রকাশ্যে এলে প্রত্যাশিত ভাবেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সচিবজির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও শুনুন: চলতি বছরে দেশ ছাড়তে চাইছেন অন্তত ৮০০০ জন বিত্তশালী, জানাল সমীক্ষা
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, সচিবজি নাকি দুই স্ত্রীর কথা কবুল করেছিলেন, তাঁরা যে ভোটে লড়ছেন তা-ও নাকি গোপন করেননি। কিন্তু তৃতীয়জনের কথা বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন। শো-কজ, বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি সচিবজিকে বরখাস্তের সুপারিশও করা হয়েছে। তবে সচিবজি নাকি শো-কজের কোনও উত্তরও দেননি। এদিকে সচিবজির এই কীর্তিতে অন্যান্য সরকারি অফিসারদেরও মাথাব্যথা বেড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিভাগের সব কর্মীকেই তাঁদের পরিবার, পরিজনদের তথ্য দিতে হবে, কারা কারা আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তা স্পষ্ট করে জানাতে হবে।
সুতরাং পঞ্চায়েতের গল্প যে শুধু ওটিটি-তেই দর্শকের মন কাড়ে, তা বোধহয় আর বলা যায় না। বাস্তবের পঞ্চায়েতের গল্পও যে যথেষ্ট রোমাঞ্চকর, তা আর অস্বীকার করার উপায়ই নেই।