নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। হজরত মহম্মদকে নিয়ে নূপুরের আপত্তিজনক মন্তব্যের বিরোধিতায় ক্ষোভ দেশে ও দেশের বাইরেও। বিক্ষোভ প্রশমনে নূপুর শর্মাকে সঙ্গে সঙ্গে দল থেকে বহিষ্কার করে বিজেপি। তবে তাতেও রাশ টানা যায়নি বিক্ষোভে। তাঁর গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব দেশের একাধিক ইসলামধর্মী সংগঠন। দেশজুড়ে যখন এমন হিংসা আর বিক্ষোভের আবহ, সে সময় শান্তির বার্তাই দিতে চাইলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী বিদ্বজনেরা। কী বলছেন তাঁরা, আসুন শুনে নেওয়া যাক।
হিংসা বা প্রতিশোধ নয়, আসলে ক্ষমার বার্তাই দেয় প্রত্যেকটা ধর্ম। ইসলামও তার ব্যতিক্রম নয়। আর তাই নূপূর শর্মা বিতর্কে গোটা দেশ যখন উত্তাল, তখন সে-কথাই ফের মনে করিয়ে দিলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী বিদ্বজনেরা। তীব্র বিতর্ক এবং অশান্তির বাতাবরণেও শান্তির পথেই হাঁটতে চাইল ইসলামিক সংগঠন জামাত উলেমা-ই-হিন্দ।
আরও শুনুন: নিরন্নের মুখে খাবার তুলে দেওয়াই ধর্ম! ইউটিউব চ্যানেল খুলেই সেই কাজই করে চলেছেন তিন বন্ধু
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সাহিব কাসমি দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, নূপর শর্মাকে ক্ষমা করে দেওয়াই উচিত। নূপুরের মন্তব্যকে ঘিরে দেশজুড়ে যেভাবে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাতে সমর্থন নেই বলেই জানিয়েছে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বিদ্বজনদের এই সংগঠন। পাশাপাশি আইন কোনও ভাবেই হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয় বলেও সাফ জানিয়েছেন কাসমি। তবে এর পাশাপাশি নূপুর শর্মাকে বিজেপি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: বারংবার বাংলায় বিদেশি আক্রমণ, রুখতে হিন্দু রাজাদের মতো লড়েছিলেন মুসলমান রাজাও
এখানেই শেষ নয়। শান্তির বার্তা দিতে বিক্ষোভকারী ও হিংসায় মদতকারীদের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। গোটা দেশ জুড়ে যখন বিক্ষোভের আবহ, সেই সময়ে ইসলামিক বিদ্বজনেদের সংগঠনের এই শান্তির বার্তা কার্যত নজিরবিহীন। এ-দেশ তো বরাবরই নানা জাতি, নানা ধর্ম, নানা ভাষার দেশ। যেখানে বরাবরই পড়শি হয়ে মিলেমিশে থেকেছে হিন্দু, মুসলিম এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা। আর সেই মৈত্রীর পরিমণ্ডল ফেরানোর দিকেই কার্যত এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন কাসমিরা।
আরও শুনুন: হজে যাওয়া নয়, ঘরহারা মানুষের আশ্রয়েই পুণ্য… সরকারকে জমি দান করে নজির দম্পতির
এই শান্তির বার্তা নতুন নয়। আসানসোলের সেই ইমামকে নিশ্চয়ই ভুলিনি আমরা? ছেলেকে হারানোর পরেও শান্তির পথে অচল থেকে যিনি জানাতে পেরেছিলেন, তাঁর ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ কেউ নিতে চাইলে, তিনি শহর ছাড়বেন। এমনকী আদালতে দোষীদের শনাক্ত করার সময়েও সেই শান্তি আর ক্ষমার পথেই অটল ছিলেন ইমাম রশিদি। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল দুনিয়া। নতুন বিতর্কের মাঝে আবার সেই শান্তির বার্তাই শোনা গেল ইসলাম ধর্মাবলম্বী বিদ্বজনদের কণ্ঠেও।