হাসপাতালে ভরতি অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী। এদিকে কলেজের সমাবর্তনও একই দিনে। এই পরিস্থিতিতে অসুস্থ ছাত্রীর জন্য মানবিকতার অভূতপূর্ব নজির গড়ল কলেজ। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সমাবর্তন, নাকি সমাপতন! এই বিশেষ দিনটিকে ঠিক কী বলা উচিত, তা বোধহয় বুঝেই উঠতে পারেননি ছাত্রীটি। বিশেষ বলে বিশেষ! একদিকে কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এতদিনের পড়াশোনার, যাবতীয় পরিশ্রমের আনুষ্ঠানিক শংসাপত্র মিলবে সেদিনই। কোনও পড়ুয়ার কাছে এর চেয়ে বেশি কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত আর কী-ই বা হতে পারে! অন্যদিকে আবার সেদিনই পৃথিবীর আলো দেখবে তাঁর সন্তান। যে দিনটি যে কোনও মায়ের কাছেই নিঃসন্দেহে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কিন্তু এই দুই বিশেষ দিনই যখন একটিই তারিখে মিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন বোধহয় আনন্দকেও ছাপিয়ে যায় দ্বিধা। একদিকে প্রাপ্তির আনন্দ, আরেকদিকে না পাওয়ার দুঃখ একইসঙ্গে পাশাপাশি জায়গা করে নেয়। সেই অবস্থাই হয়েছিল জাডা সেলেস-এর। মে মাসের ১৪ তারিখে ছিল তাঁর কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আর ঠিক তার আগের দিন, শুক্রবার সন্ধেবেলা প্রসববেদনা অনুভব করেন ওই ছাত্রী। হাসপাতালে ভরতি হতে হয় তাঁকে। ১৪ তারিখে সন্তান জন্ম নেয় তাঁর।
আরও শুনুন: এক হাতেই কাটেন সবজি, চালান পাওভাজির দোকানও! বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তির লড়াইকে কুর্নিশ নেটিজেনদের
সমাবর্তনে যে তিনি উপস্থিত থাকতে পারছেন না, কলেজের প্রেসিডেন্টকে সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নেয় তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ডিলার্ড ইউনিভার্সিটি। সেদিন সোজা নির্দিষ্ট হাসপাতালটিতে পৌঁছে যান কলেজের প্রেসিডেন্ট ওয়াল্টার এম কিমব্রো। হাসপাতালেই সব নিয়ম মেনে ওই ছাত্রীর হাতে তাঁর সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। নিয়মমাফিক কনভোকেশনের পোশাক পরেই ডিগ্রি নেন জাডা।
আরও শুনুন: একটাই ব্ল্যাকবোর্ডে পড়ানো হচ্ছে হিন্দি ও উর্দু, সমন্বয়ের ভারতবর্ষের অন্য প্রকাশ শিক্ষাঙ্গনে
সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় সেদিনের অনুষ্ঠানের ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন কলেজের প্রেসিডেন্ট নিজেই। তাঁর কথায়, এই কাজটির মাধ্যমেই সবচেয়ে অভিনব ভাবে নিজের কার্যকাল শেষ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একজন পড়ুয়ার জন্য কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে যে এহেন মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে, তা যেন বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না নেটিজেনেরা। ওই ছাত্রী ও সদ্যোজাতকে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি এতদূর পথ পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে জাডাকে ডিগ্রি দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকেও একইভাবে প্রশংসা জানিয়েছেন নেটিজেনেরা। বিশেষ দিনে নিজের এহেন দুই প্রাপ্তি নিয়েই আপাতত মশগুল ওই ছাত্রী।