বিয়েবাড়িতে গিয়ে খাবার মনে ধরেনি। কখনও আবার আধপেটা খেয়েই চলে আসতে হয়েছে। এমন ঘটনা বোধহয় কমবেশি সকলের সঙ্গেই হয়ে থাকে। তবে বিয়েবাড়ির মেনুতে শুধুই স্যালাড দেখে এই ব্যক্তি যা করলেন, তাতে চোখ কপালে ওঠার জোগার নেটিজেনদের। আর তার জন্য কম দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি শেষপর্যন্ত তাঁকে। কী ঘটেছিল সেদিন বিয়েবাড়িতে? আসুন শুনে নিন।
বিয়েবাড়ি বলে কথা। সেখানে কোপ্তা-কালিয়া, মন্ডা মিঠাই না হলে চলবে কেন! তবে সে আশায় জল। এই বিয়েবাড়ির খাবারের আয়োজন দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় সমস্ত নিমন্ত্রিতদের। নিরামিষের আয়োজন, তা-ও নাহয় মানা যায়। কিন্তু তাই বলে শুধুই স্যালাড। আট ঘণ্টার অনুষ্ঠানে এ হেন খাবারের আয়োজন দেখে আর থাকতে পারেননি এক ব্যক্তি।
ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বিয়ে। অনেক দিনের পরিচয়। তার উপর বারবার করে বান্ধবী অনুরোধ জানিয়েছিলেন, গোটা অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে। তাই সে কথা ফেলতে পারেননি ওই যুবক। এদিকে চিকিৎসকের কড়া নির্দেশ, ভারী খাবার খেয়েই তবে দিনের দুটো ওষুধ খেতে হবে তাঁকে। ডিপ্রেশন ও উত্তেজনার চিকিৎসা চলছে তাঁর। ফলে ওষুধ না খেলে যে বড় বিপদ। কিন্তু খাবারের জায়গায় পৌঁছে তিনি যা দেখলেন তাতে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়।
আরও শুনুন: সিংহের পাশে বসেই সারা যাবে ইফতার, চিড়িয়াখানার প্রস্তাবে হতবাক নেটিজেনরা
বিয়েবাড়ির ভোজ বলতে শুধুই কটা শশা, পেঁয়াজ, কর্ন আর ব্রকোলি। এই খেয়েই সারতে হবে রাতের খাওয়াদাওয়া। কনেকে বলতে যেতেই সে তো রেগে লাল। কী আর করেন ব্যক্তি। বাধ্য হয়েই অর্ডার দিয়ে বসেছিলেন পিৎজা। সবচেয়ে বড় আকারের মোট চারটে পিৎজা কিনেছিলেন তিনি। নিজের গাড়িতেই রেখে এসেছিলেন সেই খাবার। বিয়েবাড়িতে উপস্থিত এক বন্ধুকেই কেবল বলেছিলেন সেই পিৎজার কথা। তবে সে কথা ছড়াতে দেরি হল না। ওই বিয়েবাড়ির বেশ কয়েক জন আমন্ত্রিতও হামলে পড়েছিলেন সেই পিৎজায়। তা পরিমাণে খানিকটা বেশিই অর্ডার করেছিলেন ব্যক্তি। যদি আর কেউ খান, সে কথা ভেবেই।
তবে লোকের ভাল করতে গিয়ে যে বিপাকে পড়বেন নিজেই বুঝতে পারেননি সে কথা। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বেপাত্তা হয়ে গেলেন বর। দিশেহারা হয়ে কনে তাঁর মাকে গিয়ে জানালেন সব কথা। শুরু হল খোঁজাখুঁজি। তবে শেষপর্যন্ত বরকে যেখান থেকে পাওয়া গেল, তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বিয়েবাড়ির কেউই।
দেখা গেল, ওই ব্যক্তির গাড়িতে গিয়ে পিৎজা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন খোদ বর। যা দেখে যারপরনাই রেগে যান কনে ও তাঁর বাড়ির লোকজনেরা। কাঠগড়ায় তোলা হয় সেই ব্যক্তিকেই। এমনকি এ-ও বলা হয়, নিরামিষ বিয়ে বাড়ি বলেই এমনটা করেছেন তিনি। অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওই ব্যক্তি। ক্ষমা চেয়েও লাভ হয়নি। বিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেও বলা হয় তাঁকে। সামান্য পিৎজা যে কুড়ি বছরের বন্ধুত্বে ছেদ টানবে তা ভাবতেও পারেননি তিনি। অথচ বাকিরা যাঁরা ভাগ পেয়েছিলেন ওই পিৎজার, তাঁরা কিন্তু এ বিষয়ে টু শব্দও করেননি।
আরও শুনুন: মোবাইলের নেশায় বুঁদ গরিলা, আসক্তি কমাতে কালঘাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ওই অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে কবে কোথায় এই ঘটনাটি ঘটেছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানাননি তিনি। এমনকি প্রকাশ্যে আনেননি নিজের নামও। তবে কমবেশি আমাদের অনেকেরই বোধহয় কোনও না কোনও বিয়েবাড়িতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। কোথাও খাবার খেয়ে মন ভরেনি, কোথাও আবার পেট। তবে এই ব্যক্তির মতো এমন পিৎজা পার্টির আয়োজন করে বিপাকে পড়েছেন কম মানুষই। বিয়েবাড়ির এমন অদ্ভুত অভিজ্ঞতা শুনে কিন্তু হাসি চেপে রাখতে পারেননি নেটিজেনরা। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই অচেনা ব্যক্তির খোলা চিঠি।