থাকতে পারে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ। বিক্ষিপ্তভাবে ব্যভিচারের ঘটনাও ঘটতে পারে। তবুও দাম্পত্য বিচ্ছেদ হলে খোরপোষ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না সেই মহিলাদের। এমনই নির্দেশ দিল আদালত। শুনে নিন।
২০১৫ সালের এক মামলায় মাদ্রাজ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, নিজের অবৈধ সম্পর্কের জেরে যদি কোনও মহিলার বিয়ে ভেঙে যায়, সে ক্ষেত্রে ওই মহিলা তাঁর প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে খোরপোষ দাবি করতে পারেন না। কিন্তু সাত বছর পরে কার্যত তার উলটো পথেই হাঁটল দিল্লি হাইকোর্ট। জানাল, নিষ্ঠুরতা কিংবা বিক্ষিপ্তভাবে ব্যভিচারের ঘটনা ঘটালেও স্বামীর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ অর্থ পেতে পারেন স্ত্রী। অন্তত সেই বাবদে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীকে যোগ্য বলেই বিবেচনা করছে আদালত।
আরও শুনুন: ‘সংখ্যালঘুদের বঞ্চিত করার নয়া আইন সই হবে ওখানে’, মোদির জন্য টেবিল বানাতে নারাজ শিল্পী
সম্প্রতি এক মামলার প্রসঙ্গেই এহেন পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে দিল্লি আদালত। স্ত্রীকে খোরপোষ দেওয়ার বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর মতে, নিষ্ঠুরতা, ব্যভিচার এবং স্বামীকে পরিত্যাগ করে যাওয়ার মতো বিষয়গুলিকে বিবেচনা করলে তাঁর স্ত্রী খোরপোষ পাওয়ার দাবি জানাতে পারেন না। কিন্তু এর আগে নিষ্ঠুরতার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেননি ওই ব্যক্তি। স্ত্রী কোনও স্থায়ী অবৈধ সম্পর্কে রয়েছেন, এমন প্রমাণও সরবরাহ করতে পারেননি তিনি। সুতরাং তাঁর দাবি নাকচ করে আগের রায়ই বহাল রাখল আদালত। পাশাপাশি বিচারক এও জানালেন, এমন একাধিক কেস দেখা গিয়েছে, যেখানে নিষ্ঠুরতার অভিযোগে বিচ্ছেদ হলেও খোরপোষ পেয়েছেন মহিলা।
আরও শুনুন: বিকশিত না হলেও নাবালিকার ‘স্তন’ স্পর্শ করা যৌন হেনস্তাই, নজিরবিহীন রায় হাই কোর্টের
আসলে খোরপোষ সংক্রান্ত ধারাগুলি প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য হল, সেই সমস্ত মহিলাকে সুরক্ষা দেওয়া, যাঁদের নিজের ও সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য নিজস্ব আয় নেই। তাঁকে ও তাঁর সন্তানকে যেন অভুক্ত থাকতে না-হয় বা ভবঘুরের জীবন না-কাটাতে হয়, সেটাই নিশ্চিত করার জন্য এই আইন। সাধারণত ফৌজদারি কার্যবিধিতে ১২৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, এই কারণে আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন একজন মহিলা। ওই ১২৫ নম্বর ধারার ৪ নম্বর উপধারাতে বলা আছে, যদি কোনও মহিলা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে না-পড়েন বা কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়াই স্বামীর সঙ্গে থাকতে অস্বীকার না-করেন, তা হলে তিনি ওই ১২৫ নম্বর ধারায় খোরপোষ পাবেন। কিন্তু স্ত্রী বিক্ষিপ্তভাবে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ালেও তিনি স্বামীর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ অর্থ দাবি করতে পারবেন, এমনই পর্যবেক্ষণ আদালতের। স্থায়ীভাবে অবৈধ সম্পর্কে জড়ালে, অথবা তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে তবেই এর অন্যথা হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাস্টিস চন্দ্র ধারী সিং।