২০২১-২২ অর্থবর্ষ শেষ হতে চলেছে। এই সময়টা হিসেবি লোকজন নিজের কাজগুলি, বিশেষত টাকাপয়সা, আয়কর বা সঞ্চয় সংক্রান্ত জরুরি কাজগুলি সেরে ফেলেন। তবে এমন অনেকেও আছেন, যাঁদের আবার হুঁশ থাকে না। নানারকম ব্যস্ততায় এই জরুরি কাজগুলি তাঁরা ভুলে যান। তাঁদের জন্যই আর-একবার মনে করিয়ে দেওয়া। চলতি বছরে ৩১ মার্চের আগে কোন কোন কাজগুলি সেরে ফেলা একান্ত জরুরি, আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লক্ষ্মীলাভে আমাদের যত মন, তার জন্য যে সমস্ত কাজকর্ম করতে হয়, সেদিকে আমাদের ততটা মনোযোগ থাকে না। হ্যাঁ, উদয়াস্ত পরিশ্রম আমরা করছি ঠিকই। কিন্তু টাকাপয়সা সঞ্চয় করতে হলে, জরুরি কিছু নিয়মকানুনও তো মেনে চলতে হবে। একটা অর্থবর্ষের ক্যালেন্ডার বদলে যেতে চলেছে। ৩১ মার্চের মধ্যেই তাই বেশ কিছু কাজ সেরে ফেলা আবশ্যক। ভুলে গেলে আবার গুনতে হবে জরিমানা। তাই ভুল না করে, আর একবার সেই কাজগুলির কথা ঝালিয়ে নেওয়া যাক।
প্রথম কাজটি হল, নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের KYC সেরে ফেলা। এই কাজটি শেষ করার জন্য ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত সময়সীমা ধার্য ছিল। কিন্তু তারপরেও বহুসংখ্যক মানুষ তথ্য দেননি। ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সময় বাড়িয়ে আর-একটা সুযোগ দেয়। সময়সীমা বেড়ে হয়, ৩১ মার্চ ২০২২। অর্থাৎ ফোন নম্বর থেকে আধার নম্বর ইত্যাদি তথ্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার জন্য হাতে মাত্র আর ক-টা দিনই আছে। KYC কিন্তু জরুরি। তথ্যের গুরুত্ব আমরা এখন সকলেই জানি। তাই নিজের তথ্য যথাযথ দিয়ে অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা এবং ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত অন্যান্য কাজের পথ যাতে মসৃণ হয়, সেই সব দিক চিন্তা করেই এই কাজটি কিন্তু সেরে ফেলতেই হবে।
আরও শুনুন: সম্প্রীতির নিদর্শন! ‘বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু মন্দির’ গড়তে জমি দান মুসলিম পরিবারের
দ্বিতীয় জরুরি কাজটি হল, প্যান নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বর লিংক করা, অর্থাৎ সোজা কথায় প্যান-আধার লিংক করা। ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন-এর জন্য এই কাজটি জরুরি। এরও সময়সীমা ৩১ মার্চ ২০২২। প্যান-আধার লিংক না হলে আপনার প্যান কার্ডটির আর গুরুত্ব থাকবে না। সেক্ষেত্রে আয়কর আইনের বিশেষ ধারা অনুযায়ী আপনাকে জরিমানা দিতে হবে। এখন এই জরিমানার অঙ্ক যে ঠিক কত, তা এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। তার অঙ্ক যতই হোক না কেন, খামোখা জরিমানা কেন দেবেন! বরং একটু সময় বের করে কাজটি সেরেই ফেলুন।
আরও শুনুন: সেনাবাহিনীতে চাকরি পেল পেঙ্গুইন, মিলল ‘স্যার’ উপাধিও
আর একটি জরুরি কাজের দিকে এবার তাকানো যাক। অনেকেরই পিপিএফ অ্যাকাউন্ট আছে। ন্যূনতম ৫০০ টাকা বছরে এই অ্যাকাউন্টে রাখতে হয়, নইলে তা অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। যদি কেউ পিপিএফ অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স মেনটেন না করে থাকেন, তো এইবেলা করে ফেলুন। ৩১ মার্চের মধ্যে এই কাজটি করলে, আপনার অ্যাকাউন্টটি রক্ষা হবে। অন্যথায় আবার বেশ কিছু নিয়মের ফাঁসে পড়তে হবে আপনাকে। একই ভাবে যাঁরা পিএম কিষাণ যোজনার সুবিধা পান, তাঁরা এইবেলা কেওয়াইসি সেরে ফেলুন। কাজটি অনলাইন এবং অফলাইন – দুই ভাবেই করা যাবে। পাশপাশি ডিম্যাট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট যাঁদের আছে, তাঁরাও খেয়াল রাখুন যে, যা যা তথ্য দেওয়ার অর্থাৎ কেওয়াইসি যথাযথ হয়েছে কি-না।
এবার আসা যাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজের কথায়। প্রতি অর্থবর্ষে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করা আবশ্যক। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের ক্ষেত্রে এর সময়সীমা ৩১ মার্চ, ২০২২। সংশোধন করেই এই সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে। এই কাজটি না করলে কিন্তু জরিমানা দিতে হবে, এবং তার অঙ্কটা কিছু কম হবে না।
অতএব, এই জরুরি কাজগুলি ফেলে রাখা মোতেও কাজের কথা নয়। তাই, সময়ের অভাবে যাঁরা এই কাজগুলি করতে পারেননি, তাঁরা এবার সময় করে কাজগুলি করেই ফেলুন। ৩১ মার্চের পর জরিমানা দেওয়া বা অনর্থক জটিলতার মধ্যে না গিয়ে, এখনই এই কজাগুলি মিটিয়ে ফেলাই বাঞ্ছনীয়।