ইউক্রনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ রাশিয়ার। একের পর এক হামলায় নিহত তিনশোর বেশি। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের আঁচ শেয়ার বাজারেও। আনিস হত্যামামলায় সিটের উপরেই আস্থা কলকাতা হাই কোর্টের। ৭ মার্চ রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু বাজেট অধিবেশন। কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, ১০৮ পুরসভার ভোটের দায়িত্বে রাজ্য পুলিশ। ক্রমশ সুস্থ হচ্ছে দেশ।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 22 ফেব্রুয়ারি 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- আনিস কাণ্ড ঘিরে তোলপাড় রাজ্য, সাসপেন্ড তিন পুলিশকর্মী
বিস্তারিত খবর:
1. এড়ানো গেল না যুদ্ধ। আশঙ্কাই সত্যি করে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা করে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার এই চরম পদক্ষেপে কার্যত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডঙ্কা বাজিয়ে দিল বলেই মনে করেছে ওয়াকিবহাল মহল। যার বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে গোটা বিশ্বে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি সূত্রে খবর, সেনা অভিযানের ঘোষণা করার কিছুক্ষণের মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক প্রদেশের বন্দর শহর মারিউপোল থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দুই শহরের সেনাঘাঁটিতে মিসাইল হামলা হয়েছে। হামলার খবর মিলেছে বেলগার্দ ওবাস্ত শহর থেকেও। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে খারকিভ শহরের দিকে এগিয়েছে রুশ বাহিনী। এখন কার্যত রুশ চক্রব্যূহে ইউক্রেন। তিনদিক থেকে ঘিরে হামলা চালাচ্ছে পুতিন বাহিনী। আরও জানা যাচ্ছে যে, কিয়েভেও ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী। এমনকী, আজাকিভ বন্দরেও হামলা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, খারকভ শহর এবং আজাকিভ বন্দরে লাগাতার বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ১০ নাগরিকের। ভেঙে পড়েছে একের পর এক বাড়িঘর। ইতিমধ্যে লুহানস্কের দু’টি শহর আত্মসমর্পণ করেছে বলে খবর। মোট ২৩টি প্রদেশে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সবমিলিয়ে সেই দেশজুড়ে বারুদের গন্ধ। আতঙ্কে কাঁপছেন নাগরিকরা।
পালটা মার দিচ্ছে ইউক্রেনও। কিয়েভের আকাশে চক্কর কাটা রাশিয়ার ৫টি বিমান এবং একটি হেলিকপ্টার গুলি করে নামিয়েছে ইউক্রেন সেনা। সে দেশের আর্মি জেনারেল স্টাফ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “যৌথ অভিযানে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ও কপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে।” একের পর এক হামলার খবর নিয়ে মুখ খুলেছেন ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমাত্রেয় কুলেবা। তাঁর কথায়, রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন। তবে এই হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে যোগ্য জবাব দেবে ইউক্রেন।” হামলা প্রসঙ্গে রাশিয়া জানিয়েছে, “হামলার নিশানায় ইউক্রেনের নাগরিকরা নয়, সেনার সম্পত্তি এবং ঘাঁটিতেই চলবে হামলা।” আপাতত এই যুদ্ধ ঘিরে গোটা বিশ্বেরই কূটনৈতিক সমীকরণে বদল আসতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় তোপ দাগলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানিয়ে দিলেন, এই হামলা একেবারেই ‘অকারণ ও অনুচিত’। এর জন্য রাশিয়াকে বিশ্বের কাছে জবাব দিতে হবে।
2. আশঙ্কা সত্যি করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু রাশিয়ার। এই পরিস্থিতিতে সেখানে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরানো হচ্ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে। কিন্তু কিয়েভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ হামলা শুরু হয়ে যাওয়ার পরই আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে ইউক্রেন। যার ধাক্কায় এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান সেদেশে নামার অনুমতি না পেয়ে ফিরে এল নয়াদিল্লিতে। যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রসংঘে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি।
গত সোমবারই ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপরই সেখানে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। কিয়েভ, খারকভ-সহ পড়শি দেশটির সামরিক ঘাঁটিগুলিতে লাগাতার বোমাবর্ষণ করছে রুশ বিমানবাহিনী। ফলে সেখানে আটকে থাকা ২০ হাজার ভারতীয়র নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে সে দেশের ভারতীয় দূতাবাস। আপাতত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পাড়ি না দেওয়ার জন্য সে দেশে থাকা ভারতীয়দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “যাঁরা কিয়েভের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তাঁরা নিজের নিজের বাসস্থানে ফিরে যান। বিশেষ করে দেশের পশ্চিম সীমান্তে নিরাপদ জায়গার উদ্দেশে রওনা হন আপনারা। এই বিষয়ে আরও নির্দেশিকা জারি করা হবে।” আগামিদিনে কূটনৈতিক মঞ্চে কী পদক্ষেপ করা হবে এবং কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যাবে, তা ঠিক করতে জরুরি বৈঠকে বসেছে বিদেশমন্ত্রক। পরিস্থিতির উপর বিশেষ নজর রাখছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এদিকে, ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের জন্য চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ কন্ট্রোলরুম শুরু করেছে বিদেশমন্ত্রক।
এদিকে, লড়াই থামাতে ভারতের সাহায্য চাইল ইউক্রেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ দাবি করেছে দেশটি। বৃহস্পতিবার, ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ড. ইগর পোলিখা বলেন, “আমি জানি না কতজন রাষ্ট্রনেতার কথা পুতিন শুনবেন। কিন্তু আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বিষয়ে ধ্বনি তুললে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবেন পুতিন।” তিনি আরও বলেন, “এক্ষেত্রে ইউক্রেন এবং রাশিয়া দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই আলোচনা চালাতে পারে ভারত। অতীতেও শান্তিরক্ষার কাজ করেছে ভারত।” এই আবেদনে সাড়া দিয়ে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সম্ভাবনা মোদির।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।