দুনিয়ার পেটুক এক হও! নাহ, এমন কোনও স্লোগান ওঠেনি বটে। তবে যাঁরা খেতে ভালবাসেন, তাঁরা দলে দলে দিল্লি চলেছেন। টাকা দিয়ে খাবার খাওয়ার বদলে, খাবার খেলে যদি টাকা মেলে, সে সুযোগ ছেড়ে দেয় কে! হ্যাঁ, এমনই এক অভিনব প্রতিযোগিতা শুরু করেছে দিল্লির একটি রেস্তরাঁ। কৌতূহল হচ্ছে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
আগেকার দিনে নাকি ভোজবাড়িতে দেখা মিলত কিছু স্পেশাল গেস্টের। তাদের আলাদাই খাতির। পঙ্ক্তিভোজনে নয়, তাদের পাত পড়ত আলাদা করে। খোদ কর্তারা হাজির থাকতেন তাদের খাওয়ার সময়। গোঁফে তা দিতে দিতে দেখতেন নিমেষে উড়ে যাচ্ছে বালতি বালতি মাছ মাংস, হাঁড়ি হাঁড়ি দই সন্দেশ রসগোল্লা। আসলে প্রচুর খেতে পারাটাই যে ছিল এই বিশেষ অতিথি হওয়ার শর্ত। এমনকি খাওয়ার শেষেও এই দলের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বসতেন ধনী বাবুরা। ভরা পেটে কে কত মিষ্টি খেতে পারে, তার জন্য বরাদ্দ হত আলাদা করে বকশিস। আকণ্ঠ খাওয়ার পরও এইরকম প্রতিযোগিতায় ফের নাম লেখাতে কিন্তু কোনোই আপত্তি হত না সেইসব খাইয়ে-দের।
আরও শুনুন: খাবারের প্লেটে এবার নাকি থাকবে পঙ্গপাল! স্বাদের সঙ্গে মিলবে পুষ্টিও
হঠাৎ বেশি খাওয়ার কথা উঠছে কেন? উঠছে, কারণ, সেকালের সেই বড়লোক বাবুরা বিদায় নিলেও, খাওয়ার প্রতিযোগিতার খবর কিন্তু এখনও মেলে। যেমন, সম্প্রতি এমনই এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে দিল্লির একটি রেস্তরাঁ। ১০ ফিট লম্বা দোসা বানাতে শুরু করেছে ওই বিশেষ রেস্তরাঁটি। আর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে তাদের উপভোক্তাদের সামনে। কেউ যদি ৪০ মিনিট সময়ের মধ্যে ওই ১০ ফিট লম্বা দোসাটি খেয়ে শেষ করতে পারেন, তবে তিনিই হবেন এই প্রতিযোগিতার লাকি উইনার। আর প্রতিযোগিতায় জেতার প্রাইজ? কড়কড়ে ৭১ হাজার টাকা! হ্যাঁ, এই আর্থিক মূল্যের একটি চেক বিজেতার হাতে তুলে দেবে বলেই ঘোষণা করেন দিল্লির উত্তম নগরের ওই রেস্তরাঁ।
আরও শুনুন: ফুচকার জন্ম নাকি দ্রৌপদীর হাতেই! কোথা থেকে এল এই লোভনীয় খাবার?
কেন হঠাৎ এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেন তাঁরা? এই প্রশ্ন সকলের মনেই। তবে প্রশ্নটা সহজ, আর উত্তরও তো সবার জানা। ক্রেতা টানতেই যে এই উদ্যোগ, তা অস্বীকার করেননি রেস্তরাঁর মালিক নিজেও। জানিয়েছেন, আগে সাধারণ ছোট দোসাই বানাতেন তাঁরা। কিন্তু বাজারে টিকে থাকার জন্য নতুন কিছু না করেও উপায় নেই। আর এই সূত্রেই তাঁর মনে হয়েছিল, দোসার আয়তন বাড়ালে কেমন হয়! এহেন প্রতিযোগিতার দৌলতে ভিড় বাড়বে রেস্তরাঁয়, আর সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে লাভ। যে কথা সেই কাজ। আর সবুর না করলেও যে মেওয়া ফলে কখনও কখনও, তার সাক্ষী দিচ্ছে রেস্তরাঁর উপচে পড়া ভিড়ই।