অনেক সময়েই নানা জিনিস ভুলে যাই আমরা! সেটা অবশ্য খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে সেটা যখন আমাদের হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়, তখনই তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্লিনিকাল পর্যায়ের এই ভুলে যাওয়াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে অ্যামনেশিয়া। অনেকেই নানাবিধ কারণে এই গুরুতর রোগের শিকার হন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ইদানিং আমরা অনেকেই নাকি ডিজিটাল অ্যামনেশিয়ার শিকার। কী এই রোগ? কীভাবেই বা বাঁচবেন এর প্রকোপ থেকে? আসুন, শুনে নিন।
অতিমারির এই দু-বছর আমাদের আরও প্রযুক্তিনির্ভর বানিয়ে তুলেছে। সকাল থেকে রাত, পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত সব কিছুর জন্যই আমাদের ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। করোনা পরবর্তী দুনিয়ায় স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট ছাড়া বাঁচা কেবল অসম্ভবই নয়, আশ্চর্যেরও।
মুদির কেনাকাটা থেকে দোকানবাজার, ব্যাঙ্ক থেকে নিত্যনৈমিত্তিক হিসেবনিকেশ, পড়াশোনা থেকে বিনোদন, এমনকি যাতায়াত- সব কিছুর জন্যই ভরসা ডিজিটাল বিশ্ব। এর ফলে বাড়ছে আমাদের স্ক্রিনটাইম। আজকাল তো স্মৃতির থেকে আমরা ডিজিটাল স্টোরেজের উপরেই বেশি ভরসা করি।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ইদানিং নাকি আমরা অনেকেই ভুগছি ডিজিটাল অ্যামনেশিয়ায়। চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায়, অ্যামনেশিয়া হল সেই গুরুতর রোগ, যার জেরে মানুষের স্মৃতিশক্তি তলানিতে ঠেকে। অনেক ক্ষেত্রেই অ্যামনেশিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা খুব সামান্য সামান্য বিষয় ভুলতে শুরু করে। এমনকি খুব নিকটাত্মীয়র মুখ পর্যন্ত ভুলে যান তাঁরা। সেক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
আরও শুনুন: ওমিক্রনের প্রভাবে শরীর মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল! নিজেকে চাঙ্গা রাখবেন কীভাবে?
এতটা ভয়ানক না হলেও ডিজিট্যাল অ্যামনেশিয়ারও রয়েছে দীর্ঘকালীন প্রভাব। ইদানিং সব কাজে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার কারণে ক্রমশ নিজের স্মৃতির উপরে ভরসা করা ভুলে যাচ্ছে মানুষ। করোনা পরবর্তী বিশ্বে আরও বেড়েছে সেই ভরসার জায়গা। দিনের বেশির ভাগ সময়ই মানুষ কাটাচ্ছেন মোবাইল বা ডিজিটাল দুনিয়ায় চোখ রেখে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছে, অতিরিক্ত ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার কিন্তু নানা ধরনের সমস্যা ডেকে আনছে আমাদের জীবনে। চোখের ক্ষতি, কোমর-পিঠে ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যন্ত্রণা তো আছেই, ক্ষতি হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের।
তবে ডিজিটাল টাইম বেড়ে যাওয়া কি আমাদের স্মৃতিভ্রমের কারণ হতে পারে? বিশেষজ্ঞেরা কিন্তু জানাচ্ছেন, অবশ্যই পারে।
অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইমের জন্য আমাদের ঘুম ব্যাহত হয়। যার প্রভাব নাকি পড়ে আমাদের স্মৃতিশক্তির উপরে। দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুম কিন্তু সেই ব্যাপারটাকে ক্রনিক সমস্যার দিকে এগিয়ে দেয়।
আরও শুনুন: নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিন… ছোট ছোট কাজেই শান্ত হবে অশান্ত মন
মানুষের মস্তিষ্ক আসলে সব কিছুকে তথ্যের আকারে মনে রাখে। আমরা ইদানিং ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচুর সময় কাটানোর ফলে নানা ধরনের বিপুল সংখ্যক তথ্যের মুখোমুখি হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্ক। আর এটা মাথায় রাখতে হবে, আমাদের মাথায় তথ্য মনে রাখার জন্য কিন্তু অন্তহীন জায়গা নেই। সেই স্টোরেজ সীমিত। ফলে অতিরিক্ত তথ্যকে জায়গা করে দিতে গিয়ে নতুন-পুরনো,প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয়, জমা থাকা অনেক তথ্যকেই মুছে ফেলছে আমাদের ব্রেন। যার ফলে অনেক কিছুই ভুলতে শুরু করছি আমরা।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ডিজিটাল মাধ্যমে বেশিক্ষণ সময় কাটানোর ফলে আমাদের কনসেনট্রেশনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়।
বাকি অংশ শুনে নিন।