মানুষ যে কী করতে পারে আর কী করতে পারে না, তার বোধহয় সত্যিই কোনও সীমা পরিসীমা নেই। সম্প্রতি সে কথাই যেন ফের প্রমাণ করলেন ব্রাজিলের এক যুবক। রোপ ওয়াকিংয়ের মতো একটি কঠিন কাজ করে রেকর্ড গড়েছেন তিনি, তাও আবার মহাশূন্যে। কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন তিনি? শুনে নিন সে গল্প।
টাইট রোপ ওয়াকিং। অর্থাৎ কিনা দড়ি ধরে ঝুলে ঝুলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া। বিশ্ব জুড়ে যেসব অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস চলে, তার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় খেলা এটি। আর সেই খেলাতেই বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেললেন ব্রাজিলের যুবক রাফায়েল জুগনো ব্রিডি। আসলে কেবল রোপ ওয়াকিং-এর জন্য নয়, বরং ওয়াকিং-এর স্থান নির্বাচনের জন্যই এহেন রেকর্ডটি তাঁর হস্তগত হয়েছে এমনটা বলা চলে। রোপ ওয়াকিং করার জন্য মাটির সীমানা ছাড়িয়ে উঠে সরাসরি আকাশকেই বেছে নিয়েছিলেন ৩৪ বছরের ওই যুবক। তাও একটু আধটু উঁচুতে নয়। যে উচ্চতায় তিনি রোপ ওয়াকিং করেছেন, তা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাড়ি বুর্জ খলিফার দ্বিগুণেরও বেশি। ঠিকঠাক বলতে গেলে, ৬১৩১ ফুট! আক্ষরিক অর্থেই অ্যাডভেঞ্চার যাকে বলে!
আরও শুনুন: শুধু মানুষ নয়, প্রকৃতির পাঠশালাতে মিমিক্রিতে দক্ষ প্রাণীরাও
দাঁড়ান, চমক এখানেই শেষ নয়। নিশ্চয়ই ভাবছেন, ওই শূন্যে রোপ ওয়াকিং করা সম্ভব হল কীভাবে? সেখানে তো না আছে গাছ, না আছে কোনও উঁচু টাওয়ার। তাহলে দড়িটা অবলম্বন পাবে কোথা থেকে? চমক তো সেখানেই। হট এয়ার বেলুন, অর্থাৎ যে বিশেষ যানটি মানুষকে পরিবহন করতে সক্ষম, তেমনই দুটি বেলুন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল আকাশে। আর সেই দুটি বেলুনের মধ্যে বাঁধা হয়েছিল রোপ ওয়াকিং-এর জন্য ব্যবহৃত ইঞ্চিখানেক চওড়া দড়িটি। আর সেই দড়িটি অবলম্বন করেই রোপ ওয়াকিং-এর সাধ মিটিয়েছেন ব্রিডি।
আরও শুনুন: খোঁজ মিলল বিরল শিবলিঙ্গের, মূল্য আনুমানিক ৫০০ কোটি
কিন্তু কেন এমন ভয়ংকর ঝুঁকির কাজ করলেন তিনি? সে প্রশ্নের উত্তরে ওই যুবক জানিয়েছেন, কঠিন রেকর্ড ভেঙে ফেলা তাঁর একরকমের নেশা। যেখানে এক মুহূর্তের ছোট একটা ভুলও সবকিছু তছনছ করে দিতে পারে, তেমন চ্যালেঞ্জ নিতেই ভালবাসেন তিনি। সেই তাগিদ থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি, আর এই অভিযান সফলভাবে শেষ করার আনন্দে তিনি মাতোয়ারা। একইসঙ্গে মুক্তি আর শূন্যে ভেসে থাকার অনুভূতি কেমন হয়, মেঘের উপরে রোপ ওয়াকিং-এর সেই মুহূর্তগুলিতে তা উপভোগ করেছেন বলেই দাবি করেছেন ওই যুবক।