দেখতে দেখতে শেষ ২০২১। আর কয়েক দিন বাদেই নতুন একটা বছরকে স্বাগত জানাতে চলেছি আমরা। করোনা আবহেই আমাদের বিগত দু-দুটো বছর কেটে গিয়েছে। আগামী বছরটা যেন তার থেকে আলাদা হয়, সুস্থ ও সুন্দর হয়।- তেমনটাই চাওয়া আমাদের সকলের। তবে ওমিক্রনের গতিবিধি যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। তা যতই চোখ রাঙাক ওমিক্রন, তাই বলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাব না আমরা। আলবাত জানাব। তবে সেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যেও কোভিড-সতর্কতার কথা যেন মাথায় থাকে। আনন্দ, হইচই, পার্টি- সবই হবে। তবে সাবধানে। কোভিড আবহে নিউ ইয়ার পার্টি আয়োজন করার ক্ষেত্রে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করবেন? কোন কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন, শুনে নিন।
অতিমারির মধ্যেই কেটে গেল আরও একটা বছর। কবে কাটবে করোনার প্রকোপ, উত্তর নেই তারও। এর মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন।
এতদিনে নিউ নর্মাল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি আমরা। ইতিমধ্যেই দুটো বছর ঢুকে গিয়েছে অতিমারির মারণ-হাঁয়ের ভিতর। ২০২২ সালটা যেন তার চেয়ে আলাদা হয়। নতুন বছরে ভাইরাসমুক্ত হোক পৃথিবী। এমন আশা নিয়েই নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছে বিশ্ববাসী। তবে তেমন আশার কথা শোনাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞমহল। নতুন বছরেই ফের শীর্ষে উঠতে পারে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ। তেমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা-কাঁটায় নববর্ষ উদযাপনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বহু দেশই। এ দেশেরও বহু রাজ্যেই জারি করা হয়েছে কড়াকড়ি।
তবে যতই লাল চোখ দেখাক করোনা, তাই বলে বছর শেষের আনন্দ মাটি হয়ে যাবে, তা আবার হয় নাকি!
আরও শুনুন: ২০২২ কি সুখের হবে! ভবিষ্যদ্বাণীতে কী ইঙ্গিত ছিল নস্ত্রাদামুসের?
নিউ ইয়ারে পার্টি করবেন নিশ্চয়ই। কিন্তু কোভিড বিধিনিষেধ ভুলে তা নয় একেবারেই।
অনেকেই নিশ্চয়ই বর্ষশেষের উদযাপনের জন্য অনেক কিছু ভেবে রেখেছেন। পোশাক-আশাক, খাওয়া-দাওয়া, কারওর বা বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান রেডি। কেউ বা আবার বাড়িতেই আয়োজন করে ফেলেছেন বর্ষবরণের পার্টি।
তবে করোনা আবহে ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে যাওয়াই কিন্তু ভাল। পার্টির পরিকল্পনা না থাকলে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর কিন্তু আদর্শ সময় এটা। দেখতে পারেন সিনেমা। একগাদা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম তো রয়েইছে তার জন্য।
বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন দারুণ দারুণ খাবারদাবার, কেক কিংবা কুকিজ। পরিবারের সঙ্গে পরিকল্পনা করুন গেম নাইটের। সারাটা বছরই তো নানাবিধ কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এই বিশেষ অবসরটুকু প্রিয় মানুষদের সঙ্গেই কাটালেন না হয়।
আর ইদানীং প্রযুক্তি এতটাই এগিয়ে গিয়েছে, যে চাইলেই ঘরে বসেই আয়োজন করে ফেলতে পারেন দিব্যি ভার্চুয়াল একখানা পার্টির। জুম থেকে গুগল মিট, এমন কি হোয়াটসঅ্যাপেও দিব্যি জমে উঠতে পারে বর্ষবরণের আড্ডা।
কিন্তু তা সত্ত্বেও যাঁদের বাড়িতে পার্টির পরিকল্পনা রয়েছে, করোনা-কাঁটার কথা কিন্তু মাথায় রেখেই কিন্তু সমস্ত আয়োজন সারতে হবে তাঁদের। সেক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন?
আরও শুনুন: ওমিক্রন রুখবে ভেষজ উপাদানে তৈরি ‘ম্যাজিক ওষুধ’, ব্যক্তির দাবিতে চাঞ্চল্য
পার্টির জন্য বেছে নিন বাড়ির অপেক্ষাকৃত ফাঁকা কোনও জায়গা। করোনা-আবহে এক জায়গায় খুব বেশি ভিড় না করাই ভাল। যতটা সম্ভ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। সে কথা মাথায় রেখেই বসার জায়গার আয়োজন করুন।
বর্ষবরণের পার্টির আনন্দ বা সাজগোজের চক্করে মাস্ক পরতে ভুলবেন না মোটেই। বরং মাস্ককেই করে তুলুন বর্ষবরণের পার্টির বিশেষ ড্রেসকোড।
খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করুন সে কথা মাথায় রেখেই। খোলা খাবারদাবারের ব্যবস্থা রাখবেন না। খাওয়াদাওয়ার আগে হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক।
পার্টিতে স্যানিটাইজার রাখার ব্যবস্থা করুন। পার্টি শুরুর আগে ও পরে ঘরদোর স্যানিটাইজ করতে ভুলবেন না।
বছর শেষের আনন্দ নতুন বছরে যেন বড় বিপত্তি ডেকে না আনে সে বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখুন। কারণ ওমিক্রন নিয়ে কিন্তু দুশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছেই। জোড়া ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়া থাকলেই যে বাঁচবেন তেমনটা কিন্তু নয়। এমনকি আগে কোভিডে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও ফের ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন, এমনও উদাহরণ কিন্তু কম নেই। ফলে বর্ষশেষ উদযাপন করুন সমস্ত সতর্কতা মেনেই। কারণ ওমিক্রন থেকে বাঁচতে সেটাই একমাত্র উপায়।