বিরিয়ানি ভালবাসে না, এমন মানুষের দেখা মেলা ভার। এককালে সে যতই অভিজাত খাবার হোক না কেন, আজ রাজা-মহারাজা থেকে আমজনতার প্লেটেও দিব্যি সহাবস্থান করছে সে। জিএসটি বসুক, লক ডাউন চলুক, দাম বাড়ুক, বিরিয়ানির জনপ্রিয়তায় কিন্তু ভাটা পড়ার লক্ষণ নেই। জানেন কি, ভারতে প্রত্যেক মিনিটে ঠিক কত প্লেট বিরিয়ানির অর্ডার দিই আমরা?
ঝরঝরে সোনালি ভাত। তার মধ্যে থেকে উঁকি দিচ্ছে মাংসের টুকরো। ঢাকনা সরাতেই ভুরভুরে খুশবুতে আমোদিত হয়ে উঠবে চারপাশ। বুঝতেই পারছেন, বিরিয়ানি ছাড়া এমন স্বর্গের ইশারা আর কে দিতে পারে! ছুটির দিনের খানাপিনা হোক কিংবা গেট টুগেদার, এক প্লেট বিরিয়ানি হলে আর কোনও কথাই থাকে না। দিনটাই যাকে বলে সার্থক হয়ে ওঠে। আর রেস্তরাঁ থেকে অনলাইন ডেলিভারি চালু হওয়ার পর তো আরও সুবিধা বেড়েছে। কষ্ট করে বেরোনোরও দরকার পড়ে না। রেস্তরাঁ যতই দূরে থাক, ঘড়ির কাঁটা যতই রাতের দিকে গড়াক, আপনার অর্ডার দেওয়ার অপেক্ষা কেবল। আর অর্ডার দিলেই কেল্লা ফতে! ভূতের রাজার বরের মতোই, বিরিয়ানির হাঁড়ি এসে হাজির হবে আপনার দোরগোড়ায়। দিনে দিনে বিরিয়ানির দাম যতই আকাশ ছুঁয়ে ফেলুক, যতই তার উপরে জিএসটির কড়া শাসন চাপুক, বিরিয়ানির বিজয়রথ কিন্তু গড়গড়িয়ে চলছে। আর তারই প্রমাণ দিল একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট।
আরও শুনুন: Biryani: বাঙালির বিরিয়ানিতে আলুর ঠাঁই হল কীভাবে?
একটি অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপ সংস্থা প্রতি বছরই তাদের বার্ষিক স্ট্যাটিস্টিক্স রিপোর্ট পেশ করে। এ রিপোর্ট ঠিক লাভ ক্ষতির খতিয়ান নয়। বরং মানুষ কী খাবার পছন্দ করছেন, কীরকম খাবার বেশি করে অর্ডার করছেন, তারই একরকম তালিকা বলা যেতে পারে একে। ২০২১ সালের রিপোর্টটি তথ্য পরিসংখ্যান ঘেঁটে জানিয়েছে, ভারতে প্রত্যেক মিনিটে ঠিক কত প্লেট বিরিয়ানি অর্ডার করা হয়। সেই পরিসংখ্যান শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনারও।
ঠিক কী জানাচ্ছে ওই রিপোর্ট?
তারা জানিয়েছে, ভারতে প্রত্যেক মিনিটে অর্ডার দেওয়া বিরিয়ানির সংখ্যা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে এ বছর। ২০২০ সালে এ দেশে প্রতি মিনিটে ৯০টি বিরিয়ানি অর্ডার করা হত। কিন্তু চলতি বছরে করোনার প্রকোপ, লক ডাউন সবকিছু সত্ত্বেও সেই সংখ্যাটা বেড়েছে বই কমেনি। আপাতত প্রত্যেক মিনিটে বিরিয়ানির অর্ডারের সংখ্যা এ দেশে দাঁড়িয়েছে ১১৫-তে। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় দুটো করে বিরিয়ানির অর্ডার পেয়েছে এই খাবার ডেলিভারি সংস্থাটি। শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে চার লাখের কাছাকাছি মানুষ অ্যাপ ব্যবহার করে প্রথম যে খাবারের অর্ডার দিয়েছেন, তাও বিরিয়ানিই।
আরও শুনুন: Hilsa: ইলিশ মাছকে নাকি সেকালে ভাবা হত ‘নিরামিষ’! কেন জানেন?
সুতরাং, প্রিয় খাবারের মাথায় জুড়েছে নতুন পালক। আর এ কথাও বোঝাই যাচ্ছে, যত বিপর্যয়ই আসুক, ভারতীয়দের ভোজনবিলাসে আঁচড় কাটার সাধ্য কিন্তু কারোরই নেই।