বলা হয়, মা ও সন্তানের সম্পর্ক নাকি পৃথিবীর পবিত্রতম সম্পর্ক। অথচ, মা যদি সন্তানকে প্রকাশ্যে স্তন্যদান করেন, সেই বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারেন না অনেকেই। কেউ অবাক হন, কেউ কটূক্তি ছুড়ে দেন, কেউ বা প্রশংসাও করেন। কিন্তু নিন্দা বা প্রশংসা নয়, স্তন্যদানকে অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্যই ‘ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং উইক’-এর সূত্রপাত।
দিনকয় আগেই সোশাল মিডিয়ায় সন্তানকে স্তন্যপান করানোর একটি ছবি দিয়েছিলেন অভিনেত্রী একতা কৌল। সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘সন্তানকে স্তন্যপান করানো মায়েদের অধিকার। সেই অধিকারকে সমর্থন করুন।’ যে কোনও জায়গায়, যে কোনও সময়ে সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর অধিকারকেও সমর্থন করার আর্জি জানিয়েছেন একতা। প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগেই একইরকম একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছিলেন মুম্বইয়ের টেলি অভিনেত্রী শিখা সিং। লিখেছিলেন, ‘নিজের সন্তানকে ঠান্ডা পানীয় খেতে দেওয়ার জন্য একজন মা যতটা সমালোচিত হন, তার থেকে অনেক বেশি নিন্দা শুনতে হয় মাতৃদুগ্ধ পান করানোর জন্য। আমি সেই ছবিটায় বদল আনতে চাই।’ স্তন্যপান করানো যে একটি স্বাভাবিক ঘটনা, সে কথাই বলতে চেয়েছেন দুজনেই।
আরও শুনুন – Child Abuse: আপনার শিশুকে যৌন হেনস্তার হাত থেকে বাঁচাবেন কীভাবে?
প্রশ্ন হচ্ছে, বারবার এ কথা বলার প্রয়োজন কী? শিখার ছবির কমেন্ট বক্সেই রয়েছে এর উত্তর। অনেকেই ছবিটিকে কটাক্ষ করেছেন নগ্নতার অভিযোগ এনে। এর আগেও মালয়লম ম্যাগাজিন ‘গৃহলক্ষ্মী’-র ফ্রন্ট কভারে মডেল গিলু জোসেফ-এর স্তন্যপান করানোর ছবিটি একইরকম কটূক্তির মুখে পড়েছিল। কেন এরকম ফোটোশুট করলেন, এর উত্তরে তিনি স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, ‘‘আমাদের সমাজই মায়েদের সেই পরিবেশ দেয়নি, যাতে তাঁরা শিশুকে প্রকাশ্যে স্তন্যপান করাতে পারেন, এক্ষেত্রে যাতে তাঁদের কোনও সংকোচে না পড়তে হয়।” মাতৃত্ব যেমন একটি স্বাভাবিক ঘটনা, স্তন্যদানও তা-ই।
আরও শুনুন – পাড়ার রক থেকে Social Media : রুখে দিন Body Shaming
সম্প্রতি ব্রাজিলের এক মন্ত্রী পার্লামেন্ট চলাকালীন সন্তানকে প্রকাশ্যে স্তন্যপান করাতে কুণ্ঠিত হননি। বছর তিনেক আগে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন নিজের তিন মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন United Nations General Assembly-তে, এবং সন্তানকে প্রকাশ্যে স্তন্যপানও করান তিনি। স্টিরিওটাইপ ভাঙার জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছিল গোটা দুনিয়া। কিন্তু তাতে কি আদৌ নড়েচড়ে বসেছে স্তন্যদান সম্পর্কিত ট্যাবু? বরং এই একুশ শতকে পৌঁছে, এত আধুনিকতার মধ্যেও, অনেকেই জিইয়ে রেখেছেন এমন সংকীর্ণ মনোভাব। কয়েক বছর আগেই তো, কলকাতার একটি বিখ্যাত মলে প্রকাশ্যে শিশুকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে কর্মচারী ও কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছিলেন এক মহিলা। এদিকে কোনও ফিডিং রুমও ছিল না সেখানে। অত্যন্ত অমানবিক ভাবে তাঁকে বলা হয়েছিল বাথরুমে গিয়ে শিশুকে খাওয়াতে।
বিস্তারিত শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।