মেয়েদের গার্হস্থ্য কাজে মজুরি নেই, এ নিয়ে ইতিউতি কথা হয়েই থাকে। কিন্তু সেই ইস্যুতেই এবার চমকপ্রদ দাবি করল খোদ এসবিআই। দেশের জিডিপি কমে যাওয়ার আবহে স্টেট ব্যাঙ্কের দাবি, মেয়েদের অবৈতনিক কাজের অর্থমূল্য যোগ করলে তার পরিমাণ দাঁড়াবে দেশের মোট জিডিপি-র সাড়ে সাত শতাংশ। ঠিক কী দাবি করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
“গৃহশ্রমে মজুরি নেই বলে/ মেয়েরা কেবল বিপ্লবীর ভাত রেঁধে দেবে?”- নারীর গার্হস্থ্য শ্রম নিয়ে কবিতায় এই প্রশ্ন তুলেছিলেন কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত। আসলে গৃহশ্রমের পিছনে জীবনের অনেকখানি সময় ব্যয় করে ফেলতে হয় এদেশের অধিকাংশ মহিলাকেই। কিন্তু সামাজিক কিংবা অর্থনৈতিক কোনও বিচারেই যে তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় না, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আসলে কি সেই শ্রম এতখানিই মূল্যহীন? তার জবাবে সম্প্রতি ঠিক উলটো কথাই শোনাল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। ব্যাঙ্কের দাবি, দেশের মেয়েদের এই অবৈতনিক গার্হস্থ্য শ্রমের যদি আর্থিক মূল্য হিসেব করা হয়, তবে তার পরিমাণ দাঁড়াবে দেশের মোট জিডিপি-র সাড়ে সাত শতাংশ। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে চলা এক গবেষণা।
আরও শুনুন: দাঁড়িপাল্লায় কনের সঙ্গে রাখা অসংখ্য সোনার ইট! অভিনব কায়দায় ওজন পাকিস্তানের বধূকে
সম্প্রতিই বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কাকে সত্যি করে আরও শ্লথ হয়ে গিয়েছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি। আগেই এর পূর্বাভাস দিয়েছিলেন রিজার্ভ ব্যাংকের মানিটারি পলিসি কমিটির সদস্যরা। আর তারপরেই কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, ৩ মাসের ব্যবধানে প্রায় ২ শতাংশ কমে গিয়েছে জিডিপি বৃদ্ধির হার। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেই গবেষকদের দাবি, মেয়েদের বিনাশ্রমে কাজের আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করলে এই অবস্থার আংশিক উন্নতি ঘটতে পারত। আসলে কর্মক্ষেত্র বলে স্বীকৃত যে বাইরের দুনিয়া, অর্থাৎ যেখানে কাজের প্রেক্ষিতে পারিশ্রমিকের অঙ্ক নির্ধারণ করা হয়, এখনও মেয়েদের একটা বড় সংখ্যা সেই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নন। ফলে দেশের অর্থনীতির হিসেবে তাঁদের অবদান গ্রাহ্য হয় না। কিন্তু স্রেফ ঘরোয়া কাজের ক্ষেত্রেই তাঁরা যে পরিমাণ দায়িত্ব পালন করেন, তার পরিমাণও তো কম নয়। আর সেই কাজের গুরুত্বই এবার বুঝিয়ে দিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এই সাম্প্রতিক রিপোর্ট।