পনেরো বছর বয়সে গণধর্ষণের শিকার। অ্যাসিড হামলা হয়েছে তাঁর ওপর। তবু হার মানেননি সুনীতা কৃষ্ণান। নারী পাচার রুখতে গড়ে তুলেছেন নিজের সংস্থা ‘প্রজ্জ্বলা’। শুনে নিন এই হার না-মানা মেয়ের কাহিনি।
এখনও পর্যন্ত, অন্তত ১২০০০ মেয়েকে পাচার হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন সুনীতা কৃষ্ণান ও তাঁর সংস্থা ‘প্রজ্জ্বলা’। নারী পাচারের বিরুদ্ধে গোটা পৃথিবীর বৃহত্তম অ্যান্টি-ট্রাফিকিং শেল্টার হয়ে উঠেছে এই সংস্থা। অথচ একসময় এই সংস্থার খরচ চালাতে আক্ষরিক অর্থেই ঘটিবাটি বিক্রি করতে হয়েছে সুনীতাকে।
কিন্তু, সুনীতা কৃষ্ণনকে হয়তো চেনেন না অনেকেই।
গল্পটা গোড়া থেকেই বলা যাক তাহলে। অবশ্য গল্প নয়, সত্যি।
আরও শুনুন: ‘Lady James Bond’ নামেই পরিচিত ভারতের প্রথম মেয়ে গোয়েন্দা রজনী পণ্ডিত
পনেরো বছর বয়সে আটজন পুরুষ মিলে ধর্ষণ করেছিল তাঁকে। শাস্তি দেওয়ার জন্য। এমন নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছিল তাঁকে যে একটি কানে প্রায় বধির হয়ে যান তিনি। আসলে মেয়েরা থাকবে ঘরের কোণে, এমনটাই তো মনে করে আসছে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার লোকজন। এদিকে কিশোরী সুনীতা ততদিনে মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের নাচ শেখায়। বস্তিতে স্কুল চালায়। অংশ নিয়েছে দলিত মানুষদের সাক্ষর করার ক্যাম্পেনেও। তাতে অনেকেরই আঁতে ঘা লাগছিল। সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষ, বিশেষত মেয়েদের এগোতে দিতে তারা নারাজ। আর মেয়েদের শায়েস্তা করার একটা অস্ত্রই তো জানে তারা। কিন্তু সুনীতাকে তারা চিনে উঠতে পারেনি। হ্যাঁ, প্রথমে শারীরিক এবং মানসিক কষ্টে খানিক গুটিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মাও লোকলজ্জার ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু থেমে যাননি সুনীতা। তিনি বলেন, “ধর্ষণের মতো ঘটনা আমাকে ভাঙতে পারেনি, বরং আরও বেশি মানসিক জোর দিয়েছিল। বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার রাস্তাটা ভুল নয়। আমার ভিতরে এমন এক রাগ জন্মেছিল, যে তার আগুন এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে। আর তাই আমার এনজিও-র নাম রেখেছি প্রজ্জ্বলা।”
আরও শুনুন: Stereotype ভাঙছে মেয়েরা, সমাজের ভাবনায় কি আসবে পরিবর্তন?
স্কুল শেষ করার পর ম্যাঙ্গালোর থেকে সুনীতা সোশাল ওয়র্ক নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। আসলে কম উচ্চতার জন্য লজ্জা পেতেন বলে ছোটবেলায় বাবা শিখিয়েছিলেন, উচ্চতায় নয়, মানুষ বড় হয় মনে। এই কথাটা মনে এমন গেঁথে গিয়েছিল যে সুনীতা তখনই ঠিক করে ফেলেন সমাজের অবহেলিত মানুষদের জন্য কিছু করতে হবে। এই তাগিদেই পড়া শেষ করে চলে এলেন হায়দরাবাদে। অল্পবয়সি মেয়েদের জন্য কাজ করতে চেয়ে যোগ দিলেন সমাজসেবী সংস্থা PIN-এ।
বাকি গল্প শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।