তাঁরা নিজগুণে অনন্যা। না, সাফল্যের বিন্দু স্পর্শ করার যাত্রাপথে কেউ তাঁদের জন্য ফুল বিছিয়ে রাখেননি। বরং পদে পদে ছিল প্রতিকূলতার কাঁটা। তবু আত্মবিশ্বাসে ভর করে তাঁরা পৌঁছেছেন সাফল্যের শীর্ষবিন্দুতে। গতে বাঁধা পথ ছেড়ে নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছেন নিজেদের সফল যাত্রাপথ। আআন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস উপলক্ষে সংবাদ প্রতিদিন শোনো স্যালুট জানায় সেইসব নারীদের। সেরকমই একজন সফল নারী নন্দিনী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সাফল্যের উড়ানের গল্প শুনলেন চৈতালী বক্সী।
ভাতের হোটেল কিংবা পাইস হোটেল- যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তা কি একজন মহিলা চালাতে পারেন! এ নিয়ে যদি কেউ বিন্দুমাত্র সন্দেহ প্রকাশ করেন তবে তাঁদের সামনে জলজ্যান্ত উত্তর হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন নন্দিনী গঙ্গোপাধ্যায়। ডালহৌসির কাছে তাঁর ভাতের হোটেল রীতিমতো বিখ্যাত। এবং সেই সূত্রে তিনিও অন্যরকম ভাবে প্রতিষ্ঠিত সফল নারীদের একজন।
আরও শুনুন: Superwoman: নারী সফল হলে পরিবারের পুরুষরা খুশিই হয়, সাফল্যের সহজপাঠ শেখালেন অদিতি
চাকরি-বাকরির চেনা রাস্তাতেই ছিলেন নন্দিনী। নোটবাতিলের সময় বাবার কর্মজীবনে বাধা নেমে আসে। সেই সময় থেকেই পরিবারের পাশে দাঁড়ানো শুরু। চাকরি নিয়ে গুজরাটেই চলে গিয়েছিলেন নন্দিনী। লকডাউনের সময় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার সময় অদ্ভুত এক ভয় তাঁকে পেয়ে বসে। মায়ের শরীরটাও ভাল যাচ্ছিল না। অতএব ফিরে আসা এই বাংলায় আর শুরু ব্যবসা। তা-ও ফুটপাথে, ত্রিপলের খাঁটিয়ে ভাতের হোটেল খোলা। বেশ ছকভাঙা সিদ্ধান্ত, সন্দেহ নেই। কিন্তু পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসা করে সফল হবেনই, এমন মনের জোর ছিল নন্দিনীর। অতএব একদিন শুরু হয়ে গেল নন্দিনীর ভাতের হোটেল। বাকিটা তো বেশ সাফল্যেরই গল্প। যেমন তাঁর হোটেলের জনপ্রিয়তা, তেমন জনপ্রিয় নন্দিনী নিজেও। চাকরি ছেড়ে ফুটপাথে ব্যবসা করেও যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, নন্দিনী তা হাতেকলমেই করে দেখিয়েছেন।
আরও শুনুন: Superwoman: ‘ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করবে সমাজ, দমে গেলে চলবে না’, বার্তা পৌলমীর
অবশ্য সমালোচনা আসে। অনেক নেতিবাচক কথাবার্তার মুখেও পড়তে হয়। তবে সেসবকে বিশেষ গুরুত্ব দেন না নন্দিনী। সোশ্যাল মিডিয়া তাঁকে নিয়ে তোলপাড় হলেও, তিনি নিজে নেটদুনিয়ায় বিশেষ অ্যাকটিভ নন। তিনি শুধু জানেন, এখনও অনেক লড়াই বাকি। ফুটপাথের দোকান, কবে যে ঝড় এসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে তার ঠিক নেই। তাই স্বপ্ন একটা পাকা ঠিকানার। তারই সন্ধানে নন্দিনী। আর যাঁরা সাফল্যের সন্ধানে, তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলছেন, চাকরি হোক বা ব্যবসা- ১০০ শতাংশ ডেডিকেশন থাকলে সাফল্য আসবেই।