কেরিয়ারের অধিকাংশটাই কাটিয়েছেন কোর্ট চত্বরে। সাক্ষী থেকেছেন বহু আইনি লড়াইয়ের। রায় দিয়েছেন একাধিক জটিল মামলার। এবার জীবনের লড়াই থামালেন সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি ফতিমা বিবি। আসুন শুনে নিই।
দেশের বিচারব্যবস্থার অংশ হবেন মহিলারাও, একসময় এই দাবিতে লড়াই করেছেন একাই। দেশের সংখ্যালঘু মহিলাদের আদালতের আঙিনায় আনার নেপথ্যেও বড় ভূমিকা রয়েছে তাঁরই। ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন সেই মহীয়সী। কেরলে নিজের বাড়িতেই প্রয়াত সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি ফতিমা বিবি।
আরও শুনুন: দর্শন আর আখ্যানের এক্কা-দোক্কা তুলে রেখে চলে গেলেন মিলান কুন্দেরা
জন্ম কেরালায়। সেখানেই স্কুল কলেজ উইনিভার্সিটি সব কিছু। এর্নাকুলামের ল’ কলেজ থেকে আইন পাশ করার পর পাঁচের দশকেই বিচারবিভাগে কেরিয়ার শুরু করেন ফতিমা। প্রথম জীবনে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন। পরে ল ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পান। সে রাজ্যে তিনিই প্রথম মুসলিম মহিলা হিসাবে ম্যাজিস্ট্রেট পদ পান। দীর্ঘদিন সেই দায়িত্ব সামলেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে পদন্নোতি। আর সেই পদোন্নতির মাধ্যমেই হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন ফতিমা। এখানেই শেষ নয়, কিছুদিনের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির দায়িত্ব পান ফতিমা। সেসময় এমনটা ভাবাও কঠিন ছিল অনেকের পক্ষে। একে মুসলিম তার ওপর মহিলা। কিন্তু ফতিমা নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যোগ্যতা থাকলে সব সম্ভব। ১৯৮৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন তিনি। শুধু ভারত নয়, গোটা এশিয়ার কোনও দেশের সর্বোচ্চ আদালতে নিযুক্ত হওয়া প্রথম মহিলা তিনি। পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গেও। বিচারপতির দায়িত্ব থেকে অবসরের পর প্রশাসনিক পদেও ছিলেন তিনি। এরপর তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল পদে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। সংখ্যালঘু মহিলাদের অধিকারের কথা সবসময় বলতেন। যতটা সম্ভব চেষ্টা করতেন তারা কীভাবে দেশের বিচারব্যবস্থার যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন। নিজের লড়াইয়ে সফলও হয়েছেন যথেষ্টই। তবে এবার তাঁরা যাবতীয় লড়াই থামল। ৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি ফতিমা বিবি।