গুরুগ্রামের ‘লেডি ইন গ্রিন’ তিনি! কেন এমন নাম? সবুজ রং পছন্দ বলে? না, বরং পৃথিবীকে আরও সবুজ করার দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে উঠিয়ে নিয়েছেন বলে। গুরুগ্রামের আরাবল্লি বায়োডাইভারসিটি পার্কের সমার্থক শব্দ এখন লতিকা ঠুকরাল। ব্যাঙ্কের চাকরি থেকে পৃথিবীকে সবুজ করে তোলার ব্রত! কেমন ছিল তাঁর এই যাত্রা। আসুন, শুনে নিই।
ব্যাঙ্কের দশটা-পাঁচটার চাকরি! সেটাই সেসময় বেশি ভাল লাগত তাঁর। বাড়িতে কেউ যে কোনওরকম পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এমন নয়। গাছপালা চেনা তো দূরের কথা, ছোটবেলায় গাছপালা নিয়ে তেমন কোনও আগ্রহও ছিল না তাঁর। তবে আজ গুরুগ্রাম শহরটাকে সবুজে মুড়ে দিয়েছেন সেই তিনিই। ৫৫ বছরের লতিকা ঠুকরাল। কী ভাবে শুরু সেই সবুজের অভিযানের? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
আরও শুনুন: ইচ্ছাশক্তিতেই আসে সাফল্য, দেশবাসীকে প্রেরণা জোগায় এভারেস্ট জয়ী শিবাঙ্গীর গল্প
বছর পঁচিশেক আগে পরিবারের সঙ্গে গুরুগ্রামে চলে আসেন লতিকা। তখন ছবিটা অন্যরকম ছিল। শান্তশিষ্ট। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই বদলাতে শুরু করল শহরটা। গাছপালা কেটে উঠছিল বড় বড় আবাসন, ইমারতি কাজের নোংরা, রাবিশ আর জঞ্জালে ভরে থাকত আশপাশ। নিকাশি-নর্দমা আর জঞ্জাল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হত বাসিন্দাদের রোজ রোজ। সেই ব্যাপারটা একেবারেই ভাল লাগত না লতিতার। তখন থেকেই মাথায় ঘুরত, নিজের শহরটার জন্য কিছু একটা করতে পারলে কেমন হয়!
আরও শুনুন: বৃক্ষরোপণ নেশা, ৪০ বছরে ১১ লক্ষেরও বেশি গাছ লাগিয়ে নজির জয়রামের
প্রায় আঠারো বছর কাজ করেছেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে। আজ থাকে বারো বছর আগে হঠাৎ করেই চাকরি ছেড়ে নিজের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি করেন লতিকা। নাম দেন ‘আই অ্যাম গুরগাঁও।’ তাঁদের উদ্যোগেই গড়ে উঠেছে তিন কিলোমিটার লম্বা বাদশাপুর করিডর। যা খুব শিগগিরই বেড়ে হতে চলেছে পাঁচ কিলোমিটার। ওই এলাকার পাশ দিয়েই বয়ে যেত একটি কালো জলের খাল। যাবতীয় নোংরা, আবর্জনা, ইমারতি কাজের জঞ্জাল- সব নিয়ে বয়ে যেত খালটি। প্রথমেই সেই খালটিকে পরিষ্কার করার কাজে হাত দেন লতিকার সংস্থা। তার পর সেই খালটিকে ঢেকে ফেলে শুরু হয় সৌন্দর্যায়নের কাজ। খালের দু-পাশ ধরে অন্তত সতেরো হাজার গাছ বসান তাঁরা। বাসিন্দাদের জন্য তৈরি হয়েছে বসার জায়গা। আবর্জনা ফেলার বিন, সব মিলিয়ে এলাকাটার আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছেন লতিকারা। যে জায়গাটা একদিন ছিল আবর্জনায় ভর্তি, সেখানেই আজ প্রজাপতির মেলা। কত মানুষ রোজ সেখানে ঘুরতে আসেন, বসেন। তা দেখে খুব তৃপ্তি পান লতিকা।
বাকি অংশ শুনে নিন।