লাল ল্যাহেঙ্গা, গা ভর্তি গয়না। বিয়ের সাজে প্রস্তুত কনে। কিন্তু মাথাটাই ন্যাড়া। নিজের বিয়ের দিন এমনভাবেই থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। নেপথ্যে রয়েছে কোন কারণ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ছোট থেকেই বিরল রোগের শিকার। মাথায় নেই একটাও চুল। চুল না থাকলে কেউই পছন্দ করবে না। বিয়েও হবে না। তাই নিজের টাক আর লজ্জা দুই ঢাকতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল পরচুলের। কিন্তু সেই সামাজিক লজ্জার ভার বেশিদিনের জন্য বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কারণ নিজে যেমন তেমন ভাবেই গ্রহণ করে নিয়েছিল। ‘গন কেশ’ ছবিতে এনাক্ষির গল্প আমাদের সেই কথাই বলে। তবে সিনেমার মতোন বাস্তবে ফ্যাশান ইনফ্লুয়েন্সার নিহার সাচদেভার জীবনেও রয়েছে এমন ঘটনা।
:আরও শুনুন:
দরকার নেই পুরোহিত! নিজেই মন্ত্র পড়ে নিজের বিয়ে সারলেন বর
আমেরিকার বাসিন্দা নিহার সাচদেভ, যিনি পেশায় একজন ফ্যাশান ইনফ্লুয়েন্সার। সম্প্রতি তাঁর কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চায় এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে লাল রঙের ল্যাহেঙ্গা, গা-ভর্তি গয়না পরে কনে সাজে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন। স্রেফ তাই নয়, মাথার উপরিভাগ পুরোপুরি অনাবৃত। নেপথ্যে রয়েছে ‘অ্যালোপেসিয়া’ নামক এক বিরল রোগ। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যায়, সাইকোলজিক্যাল ডিস্ট্রেস, স্কিন ডিসিস, ট্রমা থেকেই এই রোগের উৎপত্তি। লক্ষণ হিসেবে ধীরে ধীরে মাথার সব চুলই পরে যায়। মাত্র ৬ মাস বয়স থেকেই এই বিরল রোগের শিকার নিহার। আর তারপর থেকেই নিজের সমস্ত চুলই ধীরে ধীরে হারাতে হয় নিহারকে। কিন্তু তার জন্য কোনও চাপা দুঃখ নেই তাঁর মনে। বরং নিজেকে এমন ভাবেই গ্রহণ করে নিয়েছিলেন অনেক দিন আগেই। মাথায় চুল না থাকাটাকে তিনি কখনই অপরাধ বা লজ্জা বলে মনে করেননি। আর বাহ্যিক দুনিয়ায় চলাফেরা করতে গেলে মাথায় পরচুল পরে ঘুরে বেড়াতে হবে, তারও কোনও মানে নেই। পরচুল ছাড়াই তিনি বাইরে এইভাবেই ঘুরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এবং বিয়ের আসরেও তার ব্যতিক্রম কোনও নেই। পরচুলের আশ্রয় ছাড়া, অনাবৃত মাথায় আনন্দের সঙ্গে নিজের বিয়ে সারলেন নিহার। তাঁর এমন সাহসী পদক্ষেপ দেখে অনেক নেটিজেনরাই তাঁকে নিয়ে প্রশংসা করেছেন। অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
:আরও শুনুন:
ভালোবাসায় লজ্জা কীসের! দ্বিতীয়বার মায়ের বিয়ে দিয়ে নজর কাড়লেন পাকিস্তানের যুবক
কিন্তু সমাজে নিহার শুধু একটাই উদাহরণ নন। এমন অনেকেই আছেন যারা এর আগেও আত্মবিশ্বাসী হয়ে সমাজের সামনে এসেছেন। হলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির কেমো থেরাপির সময় তিনি অনাবৃত মাথায় মিডিয়ার সামনে এসেছিলেন। একইভাবে বলিউডের অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানার স্ত্রী তাহিরা কাশ্যপও নিয়েছিলেন সাহসী পদক্ষেপ। একটা সময় ছিল যখন রিল ও রিয়েল লাইফের মধ্যে ছিল না কোনও পার্থক্যই। মানুষ এমনই ভাবত বড় চুলই হল মেয়েদের আসল সৌন্দর্য। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা এখন পালটে গিয়েছে অনেকটাই।