অতিরিক্ত কাজের চাপ। দম ফেলার সময় নেই। অফিস নিয়ে এমন অভিযোগ অনেকেই তোলেন। কিন্তু এই মহিলার অভিযোগ তাঁকে কোনও কাজই দেওয়া হয় না। তার জন্য আদালতে মামলা অবধি দায়ের করেছেন মহিলা। কোথায় ঘটেছে এই কাণ্ড? শুনে নিন।
সারাদিন শুধু কাজ কাজ আর কাজ! এতটুকু সময় নেই অন্য কিছু করার। শান্তিতে ঘুমোতে গেলেও বসের ফোন। মোতামুটিভাবে এ দেশের বহু সংস্থার কর্মীদের এমনই অভিযোগ শোনা যায়। ব্যতিক্রম এই মহিলা। তাঁর দাবি ঠিক উলটোটা। অর্থাৎ, কেন কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না সেই নিয়েই চটে লাল মহিলা।
আরও শুনুন: ক্রিকেটের পুরুষশাসিত মাঠেই কমেন্ট্রি নারীর, প্রথম পথ দেখালেন কে?
কথা বলছি লরেন্স ভ্যান ওয়াসেনহব সম্পর্কে। ফ্রান্সের এই মহিলা বিগত ২০ বছর ধরে সেখানকার এক সংস্থায় কর্মরত। তবে সবটাই খাতায় কলমে। কারণ এতদিন এক ফোঁটাও কাজ করতে হয়নি তাঁকে। তার জন্য বেতন কাটা হয়নি মোটেও। কাজ না করেই মাইনে পেয়েছেন লরেন্স। কাজ করেও ঠিকমতো বেতন না বাড়ার অভিযোগ হামেশাই শোনা যায় কর্মীদের মুখে। সেখানে কাউকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়ার ঘটনা একেবারেই বিরল। তাই গোটা বিষয়টা বেশ অপমানজনক মনে খয়েছে লরেন্সের। যদি কাজই না দেওয়া হবে, তাহলে চাকরির মানে কি! এই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি। সেইসঙ্গে সংস্থার এই আচরণ হেনস্তার নজরেই দেখছেন লরেন্স। তাই আদালতে ওই সংস্থার নামে মামলাও করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, সরকারের কাছেও নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে অবশ্য সমস্যার সমাধান হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন কোনও কাজ দেওয়া হত না লরেন্সকে?
আরও শুনুন: পুণ্যলাভ হিন্দুদের, তবু অমরনাথ যাত্রা শুরু হলেই কেন হাসি ফোটে মুসলিমদের মুখে?
নেপথ্যে রয়েছে মহিলার শারীরিক অসুস্থতা। শরীরের একটা দিক প্যারালাইজড। অন্যদের মতো সব কাজ করতেও পারেন না লরেন্স। চাকরিটাও পেয়েছিলেন বিশেষ প্রতিবন্ধী কোটায়। প্রথমে অবশ্য তাঁকে বিশেষ একতী দায়িত্বও দেওয়া হয়। সেই কাজ মন দিয়েই করতেন লরেন্স। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই তাঁর বদলি হয়ে যায় অন্যত্র। সেখানে যা কাজ দেওয়া হত, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্যই তা করতে পারতেন না লরেন্স। এদিকে তাঁর সংস্থাও অন্য কোনও দায়িত্ব তাঁর কাঁধে চাপাত না। ধীরে ধীরে কাজ দেওয়াই বন্ধ করে দেয় ওই সংস্থা। সাধারণত এমন কিছু হলে, ওই কর্মীকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। তবে লরেন্সের সঙ্গে তেমনটা করেনি ওই সংস্থা। বোধহয় তাঁর শারীরিক অবস্থা কথা ভেবেই। বছরের পর বছর ধরে ঘরে বসে কোনও কাজ না করে মাইনে পেয়েছেন লরেন্স। কিন্তু এই অবস্থায় সুখের বদলে যন্ত্রণা রয়েছে বলেই দাবি লরেন্সের। তাই বাধ্য হয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। আদালতের হস্থক্ষেপে গোটা বিষয়টা মিটমাট হয়। সংস্থায় বিশেষ কাজের সুযোগও পান লরেন্স। তবে তাঁর কাণ্ড অবাক করেছে সকলকেই।