টি-২০ বিশ্বকাপ জেতার পর আনন্দে মাতোয়ারা বিরাট-রোহিতরা। কাপ হাতে নিয়ে মাঠ ঘোরার পাশাপাশি কাউকে কাউকে দেখা গেল মেডেলে কামড় দিতেও। কোথা থেকে এল এই রীতি? শুনে নেওয়া যাক।
তেরো বছর পর বিশ্বসেরার মুকুট উঠেছে দেশের মাথায়। আনন্দে ভেসে গিয়ে এ মুহূর্তকে উদযাপন করেছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। কেউ কাপ হাতে মাঠে ছুটেছেন, কেউ গায়ে জড়িয়েছেন জাতীয় পতাকা, কেউ মাঠের ধুলো জিভে ঠেকিয়েছেন… এই জয়কে যেন মেখে নিয়েছেন শরীরে মনে। সেখানেই কাউকে কাউকে দেখা গিয়েছে মেডেলে কামড় দিতেও।
সত্যি বলতে, খেলাধুলোর দুনিয়ায় এ ছবি কিন্তু একেবারেই অচেনা নয়। এর আগেও কখনও যুবরাজ, কখনও বিরাটকে মেডেল কামড়াতে দেখা গিয়েছে। ট্রফি জয়ের পর নাদালকে বরাবরই দেখা যেত এ কাজ করতে। অলিম্পিকেও এ ছবি হামেশাই চোখে পড়ে। মাইকেল ফেল্পস থেকে উসেইন বোল্ট, তাবড় তাবড় তারকারা জেতার পর দাঁতে কামড়ে ধরেছেন নিজেদের কষ্টার্জিত মেডেল। আসলে অলিম্পিক থেকেই এ অভ্যাসের সূচনা বলা যায়। কিন্তু অলিম্পিকের আসরেই বা কেন মেডেল কামড়ে দেখতেন প্রতিযোগীরা?
ইতিহাস বলে, আগেকার দিনে ব্যবসায়ীরা স্বর্ণমুদ্রা কামড়ে পরখ করে নিতেন সেই মুদ্রা আসল না জাল। সোনা যেহেতু নরম ধাতু, দাঁতের সামান্য চাপেই তাতে দাগ পড়ে যাওয়ার কথা। আর সেই দাগ পড়লেই বোঝা যেত যে সেই মুদ্রা আসল সোনার, অন্য ধাতুতে সোনার জল করা নয়। কে জানে, হয়তো এই সতর্কতার কথা মনে রেখেই প্রথম প্রথম পদকে কামড় দেওয়ার চল হয়েছিল। তবে আধুনিক কালে কেউ এমনটা করবেন বলে তো মনে হয় না। তার চেয়েও বড় কথা, ১৯১২ সালেই আসল সোনার মেডেল দেওয়া বন্ধ করে দেয় অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ। সুতরাং সোনার আসল নকল পরখ করার প্রশ্ন সেখানেই শেষ। কিন্তু হলে হবে কী, ফোটোগ্রাফারদের যে ওই পুরনো পোজ ভারি পছন্দের। তাই তাঁরাই পদকজয়ীদের ওই ঐতিহাসিক ভঙ্গিতে ছবি তোলার জন্য জোর করে থাকেন। এই কাণ্ড করতে গিয়ে জার্মানির লুগার ডেভিড মোলার নিজের দাঁত পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছিলেন। তারপরেও অবশ্য শখে দাঁড়ি পড়েনি। মিডিয়ার কাছেও এ ছবি প্রবল পছন্দের। যাবতীয় পরিশ্রমের পর খেলোয়াড় যে জয় হাসিল করলেন, সেই সমস্ত অর্জন আর অধিকারের ছাপ যেন এই ছবিতেই মূর্ত হয়ে ওঠে। সে কারণেই, কেবল অলিম্পিকে নয়, ওই ভঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ক্রীড়াজগতেই।