বেপরোয়া নয়, বরং ঘরোয়া হয়ে উঠুন কোহলি। এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন রবি শাস্ত্রী! শেষবার যখন কোহলি ঘড়য়া পদ্ধতিতে খেলেছিল তখন মনমোহন সিং ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। শুভমন গিল তখন মোটে ১২ বছরের, স্কুলপড়ুয়া মাত্র। তারপর কেনই বা ছেড়ে দিতে হল সেই ঘরোয়া পদ্ধতি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বেপরোয়া নয়, বরং ঘরোয়া হয়ে উঠুন কোহলি। অনেকটা যেন এরকমই পরামর্শ দিয়েছেন রবি শাস্ত্রী! অস্ট্রেলিয়ায় অফসাইডের খোঁচা যে কেরিয়ারের ভিতেই খোঁচা দিয়েছে তা কোহলির থেকে ভালো আর কে জানেন। পুরনো কোচ তাই বলেছেন, ব্যাক টু বেসিক। এবার ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে যাও। তাতে নতুনদের সঙ্গে গা-ঘামানো হবে। আর নতুনরাও এমন অভিজ্ঞ ব্যাটারের সঙ্গে খেলে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে নিতে পারবে।
সে তো ভালো কথা। কিন্তু শেষ কবে ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখা গিয়েছিল বিরাট কোহলিকে? শাস্ত্রী-বচনের পরই বিরাটের অনুরাগীরা একে অন্যের মুখের দিকে তাকাচ্ছেন। কেননা বিগত বেশ কয়েক বছরের স্মৃতিতে অন্তত এরকম কোনও ছবি নেই। তথ্য তালাশ করে দেখা যাচ্ছে, শেষ যখন কোহলি ঘরোয়া ক্রিকেটে নেমেছিলেন তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। শুভমন গিল তখন মোটে ১২ বছরের, স্কুলপড়ুয়া মাত্র। শচীন তেন্ডুলকর তখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। হ্যাঁ, ২০১২ সালেই শেষ ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছিলেন বিরাট কোহলি। তথ্য বলছে, ২০১৩-এর অক্টোবরেও রনজি খেলেছেন শচীন। তার এক বছর আগেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ইতি টেনে দিয়েছিলেন কোহলি।
রোহিত শর্মার জন্যও একই পরামর্শ দিয়েছে রবি শাস্ত্রী। দেখা যাচ্ছে, রোহিত শেষ ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন মুম্বইয়ের হয়ে ২০১৬ সালে। অস্ট্রেলিয়ায় ভরাডুবির পর দুই বিখ্যাত ব্যাটারকে যে পরামর্শ দিয়েছেন শাস্ত্রী, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতি সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটারদের অনাগ্রহ চোখে পড়ার মতো। তরুণ ব্যাটাররা রীতিমতো তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। অভিজ্ঞরা অতিরিক্ত ক্রিকেটের ধকল সামলে আর ঘরোয়া ক্রিকেটকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে পারেননি। তার ফল কী? টেস্টের মতো ধ্রুপদী ক্রিকেটে যে লড়াই করা, টিকে থাকা, সংকটের সংগ্রাম দেখা যাওয়ার কথা তা দেখা যাচ্ছে না। কোহলি, রোহিত কি খারাপ ব্যাটার। ক্রিকেট একবিন্দু না বুঝলেও কেউ একথা ভুলেও বলবেন না। তবে, ঘরোয়া ক্রিকেট যে প্রতি পর্বে ক্রিকেটারকে নতুন করে গড়ে তোলে। নতুন অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়, তা অন্য কোথাও মেলে না। বলা যায়, একেবারে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া, নিজের দুর্বলতাগুলোকে মেরামত করে নেওয়ার জায়গা এটিই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিযোগিতা বেশি। সেখানে চট করে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই শচীনের মতো কিংবদন্তিও ঘরোয়া ক্রিকেটকে সব সময় গুরুত্ব দিয়েছেন।
ঘটনাচক্রে এখনকার ক্রিকেটাররা সে গুরুত্ব দেন না। তার ফলাফল কী হতে পারে, সকলেই জানেন। দেখছেন কী বিপর্যয় নেমে আসতে পারে! কিন্তু নিজেদের উঁচু জায়গা ছেড়ে কোহলিরা কি আর একটু নেমে আসতে পারবেন? সেটিই হল এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।