গ্রামের ছেলে অলিম্পিকে যাবে। সামান্য কটা টাকার জন্য সেটা আটকাবে? কভি নেহি! চাঁদা তুলে আর্শাদ নাদিমকে অলিম্পিকে পাঠিয়েছেন তাঁর গ্রামের মানুষ। হতাশ করেননি নাদিমও। অলিম্পিক ফাইনালে নীরজের সঙ্গে তিনিও জায়গা পাকা করেছেন। কেমন ছিল তাঁর অলিম্পিক যাত্রা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্বেই নিজের জাত চিনিয়েছেন নীরজ চোপড়া। এক থ্রোতেই পৌঁছেছেন ফাইনালে। তাঁর সঙ্গেই ফাইনালের টিকিট পাকা করেছেন পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম। ময়দানে যতই লড়াই থাক, মাঠের বাইরে নীরজ-নাদিমের বন্ধুত্ব সকলের নজর কাড়ে। কিছুদিন আগেও বন্ধুর আর্থিক সমস্যায় পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন নীরজ। চলতি অলিম্পিকেও দুজনের বন্ধুতা ধরা পড়েছে। নীরজের থ্রো দেখে মুগ্ধ নাদিম। ময়দানে প্রতিপক্ষ, সেসব ভুলে নীরজের প্রশংসা করতেই শোনা গিয়েছে তাঁকে।
আরও শুনুন: পদক হারালেও, বিনেশ, আপনিই শক্তিরূপেণ সংস্থিতা…
এ দেশের সোনার ছেলে নীরজ চোপড়া। গত অলিম্পিকে তাঁর হাত ধরেই সোনা এসেছে ভারতে। এই অলিম্পিকে সহজেই জায়গা পাকা করেচেহ্ন। বর্তমানে তাঁর আর্থিক সমস্যাও নেই বললেই চলে। আবারও সোনা জয়ের স্বপ্ন চোখেই প্যারিসের মাটিতে পা রেখেছেন নীরজ। তাঁরই বন্ধু নাদিম। পাকিস্তানের খেলোয়াড়। সেই সুবাদে ময়দানে এঁরা একে অন্যের প্রতিপক্ষ। নাদিমের সোনা জয়ে সবথেকে বড় বাধার নাম নীরজ চোপড়াই। সে নাহয় মাঠের লড়াই। যে কোনও মুহূর্তে নীরজকে ছাপিয়ে যেতেই পারেন নাদিম। কিংবা পিছিয়ে পড়তে পারেন আরও অনেকটা। কিন্তু মাঠের বাইরের যে লড়াই?
আরও শুনুন: কঙ্গনা, প্রতিভা দয়া চায় না, নেতারা ভোট চান
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। অলিম্পিকের মতো প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া এই পাক অ্যাথলিটের আর্থিক অবস্থা তেমন স্বচ্ছল নয়। সেই অর্থে নেই বড় স্পনসর। পাকিস্তান থেকে প্যারিস অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন মাত্র ৭জন অ্যাথলিট। তাঁদের মধ্যে মেডেল জয়ের সম্ভাবনা কেবলমাত্র এই নাদিমেরই রয়েছে। অথচ অর্থাভাবে তাঁর প্যারিস যাত্রাই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। ভেবেছিলেন এবারের মতো আর অলিম্পিকে অংশ নেওয়াই হবে না। তখনই পাশে দাঁড়ায় তাঁর গ্রাম খানেওয়ালের বাসিন্দারা। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের এই গ্রামসের সকলে মিলে সাধ্যমতো সাহায্য করেন নাদিমকে। ধীরে ধীরে প্যারিস যাওয়ার টাকাও যোগাড় হয়ে যায়। গোটা গ্রামে স্বপ্ন অলিম্পিক মেডেল জিতুন নাদিম। সোনা না হোক, রূপোই সই! তাও পদক তো আসবে। যে পদকের ভাগীদার হবেন তাঁরা সক্কলে। নাদিম হয়তো মাঠে র লড়াই সামলাবেন। কিন্তু বাইরে যে যুদ্ধ তাঁকে করতে হয়েছে, তা এই গ্রামের বাসিন্দারা না থাকলে হয়তো জেতা হট না নাদিমের।