নিজের সাফল্য নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকা নয়। সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ব পালনেরও অঙ্গীকার নিয়েছেন মনু। ইতিমধ্যে একাধিক কাজে তার প্রমাণ মিলেছে।
অলিম্পিকে সাফল্যের আলো জ্বালিয়ে দেশে এনেছিলে সাফল্যের আলোর উৎসব। এই মুহূর্তে দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের জাতীয় হিরো তিনি। প্যারিস অলিম্পিকে তাঁর অভূতপূর্ব কৃতিত্ব, শুধু তাঁর নিজের জীবনই বদলায়নি; বদলে দিয়েছে দেশের খেলাধুলোর সিলেবাসও। শুধু ক্রিকেট নয়; অলিম্পিকের অন্যান্য খেলার প্রতি আকর্ষণ অনেকটাই বেড়েছে। সৌজন্যে, মনু ভাকের। জোড়া পদকের সাফল্য দিয়েই ভারতীয় ক্রীড়াকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তিনি।
ক্রীড়াসাফল্য তাঁর পাখির চোখ। তবে, এখানেই শেষ নয়। মনু জানেন, তরুণ প্রজন্ম এই মুহূর্তে তাঁকে আইকন হিসাবেই দেখে। আর তাই নিজের কাজে তরুণ সমাজকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টাও করেন তিনি। এই তো দিনকয় আগেই একটি ফ্যাশন শোয়ে র্যাম্পে হেঁটেছিলেন মনু। অনেকেই তাতে অবাক হয়েছিলেন। স্পোর্টস দুনিয়ার নক্ষত্রদের সচরাচর ফ্যাশন শোয়ে দেখা যায় না। কিন্তু মনু তাঁর দৃপ্ত পদক্ষেপে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যে, দুয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। ক্রীড়ায় একাত্ম হলে যে অন্য কোনও কাজে মন দেওয়া যাবে না, তার কোনও মানে নেই। আরও একটি কাজ তিনি করেছেন। কেরিয়ারের তুঙ্গ মুহূর্তে থেকেও উচ্চশিক্ষা যে তিনি চালিয়ে যাবেন, তা ঘোষণা করেছেন। ক্রীড়ার সাফল্য আর উচ্চশিক্ষার মধ্যে যেন ভারসাম্য থাকে, সেটাই তিনি চাইছেন। আক্ষরিক ভাবেই, তরুণ প্রজন্মকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করছেন মনু। আর তাই এবার দীপাবলি উদযাপনে মাটির প্রদীপ হাতে দেখা গেল তাঁকে।
সম্প্রতি সেই ছবি সামনে এনেছেন মনু নিজেই। দেখা যাচ্ছে, এক প্রদীপ বিক্রেতা মহিলার সঙ্গে বসে আছেন তিনি। দীপাবলির মরশুমে অনেকেই ছোট ছোট মাটির প্রদীপ বিক্রি করেন। এককালে মাটির প্রদীপে আলো জ্বালানোরই চল ছিল। পরে সে রেওয়াজের দখল নিয়েছে মোমবাতি এবং বিভিন্ন বাহারি বৈদ্যুতিন আলো। তবে আলোর কারসাজি যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণের আশঙ্কা। পরিবেশবান্ধব আলোর আয়োজন আছে। তা ব্যবহারের জন্য প্রচারও হয়। তবে, এ কথাও ঠিক যে, সেই বিশেষ আলো ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম। আর তাই যে ক্ষুদ্র বিক্রেতারা মাটির প্রদীপ বিক্রি করেন, অনেক সময়ই তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাঁদের সবার হয়েই প্রচারে নেমেছেন মনু। দেশের তারকা অ্যাটলিথ তিনি। গিয়ে বসেছেন প্রদীপবিক্রেতার পাশে। হাতে তুলে নিয়েছেন ছোট ছোট মাটির প্রদীপ। আর তাঁর মাথায় আশীর্বাদের হাত রেখেছেন সেই বিক্রেতা মহিলা। আসলে, মনুর মতো নক্ষত্র যখন মাটির প্রদীপের জন্য সওয়াল করেন, তখন অনেকের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ‘ভোকাল ফর লোকাল’ হওয়ার অর্থ তরুণ প্রজন্মের অনেকেই সেই পদক্ষেপ অনুসরণ করবে।
শুধু নিজের সাফল্য নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকা নয়। সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ব পালনেরও অঙ্গীকার নিয়েছেন মনু। ইতিমধ্যে একাধিক কাজে তার প্রমাণ মিলেছে। দীপাবলি উদযাপনেও মাটির প্রদীপ হাতে ব্যতিক্রমী বার্তাই দিলেন ‘নক্ষত্র’ মনু ভাকের।